Saturday, April 5, 2014

মোদি বিভাজন সৃষ্টিকারী

মোদি বিভাজন সৃষ্টিকারী
ভারতের মোদির চেয়ে ভাল নেতা পাওয়া উচিত বলে ব্রিটেনের ইকোনমিস্ট পত্রিকার মন্তব্যে বিজেপি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। পত্রিকাটিতে নরেন্দ্র মোদিকে এক বিভাজন সৃষ্টিকারী ব্যক্তি হিসেবে বর্ণনা করা হয়। এতে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কোন সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য ভারতীয়দের প্রতি সুপারিশ করে বলা হয়, এ সরকার সাদামাটা ধরনের হলেও ‘কম অশান্তিজনকই’ হবে। কংগ্রেস বলেছে, সোনিয়া গান্ধী নয়, নরেন্দ্র মোদিই সাম্প্রদায়িক। দলটির সঙ্গে রফতানির ইস্যুকে উস্কে দিয়ে নির্বাচনকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেয়ার দায়ে নরেন্দ্র মোদিকে অভিযুক্ত করেছে। খবর এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের।
বিজেপির নির্মাতা সীতারামন টুইটারে বলেন, কি এক হতাশার কথা। ইকোনমিস্ট বস্তুনিষ্ঠা হারিয়েছে এবং পক্ষপাতিত্ব দেখাচ্ছে। যদি ইকোনমিস্টের মতামত লিখে তবে আমার কোন আপত্তির কারণ নেই, কিন্তু যদি এটি আমরা কাকে ভোট দেন বা অপছন্দ করব, সে বিষয়ে মত ব্যক্ত করে, তবে অবশ্যই আপত্তি উঠবে। পত্রিকাটির নিবন্ধে বলা হয়, রাহুল গান্ধীর কোয়ালিশন সরকার দুর্নীতিতে কলুষিত। সেই তুলনায় মোদি পরিচ্ছন্ন। প্রশংসা করার মতো অনেক কিছু রয়েছে। তা সত্ত্বেও এ সংবাদপত্র ভারতের সর্বোচ্চ পদের জন্য মোদিকে সমর্থন জানাতে পারে না। এতে বলা হয়, আমরা রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের পরিচালিত কোন সরকার উজ্জীবনী শক্তির অধিকারী হবে এমন সম্ভাবনা দেখি না। কিন্তু আমাদের ভারতীয়দের কাছে কম হিসেবে অশান্তিজনক এরূপ সরকারের সুপারিশ করতে হবে। ‘ইন্ডিয়া জারভস রেটার প্রান মোদি’ সার্থক ঐ নিবন্ধে ইকোনমিস্ট মোদির প্রতি এর আপত্তির কারণ হিসেবে গুজরাটে ২০০২ সালে সংঘটিত দাঙ্গার ঘটনা উল্লেখ করেন। তিনি ২০০১ সাল থেকে ঐ রাজ্য শাসন করে এসেছেন। সুপ্রীমকোর্টের এক অনুসন্ধানে দাঙ্গায় তার কোন ভূমিকা থাকার প্রমাণ নেই বলে জানানো হয়। এক বিচারিক আদালত গত বছর ঐ অভিমত সমর্থন করে। ইকোনমিস্ট মোদিকে রিপোর্ট দেখানোর বিষয়ে প্রশ্ন তোলে। এতে বলা হয়, দাঙ্গার বিষয়ে অনুসন্ধান অসমাপ্ত থাকার একই একটি কারণ এই যে, বহু সাক্ষ্যপ্রমাণ হারিয়ে গিয়েছিল বা ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল। আর যদি ২০০০ সালের ঘটনাগুলো তমসাচ্ছন্ন হয়ে থাকে, তাহলে এখন মোদি দৃষ্টিভঙ্গিও তেমনই। নিবন্ধে বলা হয়, যদি মোদি ঐ সহিংস ঘটনায় তার ভূমিকা ব্যাখ্যা করতেন এবং সত্যিকারের অনুশোচনা ব্যক্ত করত, তবে আমরা তাকে সমর্থনদানের কথা বিবেচনা করতাম, কিন্তু তিনি কখনও তা করেননি। যে ব্যক্তি বিভাজনকে কাজে লাগিয়ে নিজের উন্নতি করেছেন, তাঁর জন্য ভারতের মতো বিভাজনপ্রবণ দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়া ভুলই হবে। পত্রিকাটিতে এ কথাও বলা হয়, যদি বিজেপি নির্বাচনে জয়ী হয়, তবে কোয়ালিশন অংশীদারদের উচিত মোদি ছাড়া অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ দেয়া। এতে আরও বলা হয়, যদি এরপরও তারা মোদিকে বেছে নেয়? আমরা তার ভাল চাইব। তিনি আধুনিক, সৎ ও নিরপেক্ষ উপায়ে শাসন করে আমাদের ভুল প্রমাণ করলে আমরা আনন্দিত হব।
কিন্তু এখন তাঁকে তার অতীত কাজকর্মের বিবরণ দিয়ে বিচার করতে হবে। এটি এমন এক ব্যক্তির বিবরণ, যিনি এখনও সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজে জড়িত রয়েছেন। সেটিতে আধুনিক সৎ বা নিরপেক্ষ বলতে কিছু নেই। ভারতের জন্য আরও ভাল কেউ চাই। কংগ্রেস দেশে মাংস উৎপাদন প্রক্রিয়ার আধুনিকায়নে উৎসাহ দিচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী পদে বিজেপির প্রার্থী নরেন্দ্র মোদি উত্তর প্রদেশে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সরকার কসাইখানার জন্য ভতুর্কি দিচ্ছে। এর জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেসের মুখপাত্র আনন্দ শর্মা বলেন, গুজরাটই প্রক্রিয়াজাত করা মাংস রফতানিকারক অন্যতম রাজ্য। এ রাজ্য থেকে মাংস রফতানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানেও কসাইখানা রয়েছে। শর্মা অভিযোগ করেন, যাদব সম্প্রদায়ের লোকজন উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় রয়েছে, এমন নির্বাচনী এলাকাগুলোতে মোদি ইস্যুটি তুলে ধরছেন। এ সম্প্রদায়ের লোকজন পশুপালন করে থাকে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করাই এর উদ্দেশ্যে।
তিনি বলেন, মাংস রফতানির জন্য ভারত সরকার কোন ভর্তুকি দেয় না। ভতুর্কি দানের কথা ডাহা মিথ্যা। কেবল মহিষের মাংস রফতানি করা হয়। দেশে গোহত্যা নিষিদ্ধ।

No comments:

Post a Comment