সম্মুখসমরে ডরাইব ক্যানে, দ্যাশটাই ত কুরুক্ষ্যাতরো?
…
আরও আছেন মাথার উপরে রবীন্দ্রনাথের সেই অমোঘ বক্তব্য,যা আবৃত্তি করতে বাঙালি পৃথীবী সময় অসময় জ্ঞান করে না ,তবু শাসকের রক্ত চক্ষুকে ভয়?
চিত্ত যেথা ভয়শূণ্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী বসুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি, যেথা বাক্য হৃদয়ের উৎসমুখ হতে উচ্ছ্বাসিয়া উঠে,যেথা নির্বারিত স্রোতে…
পশ্চিম বঙ্গ ও বাংলাদেশেই শুধু নয়,সারা মহাদেশে ধর্মোন্মাদী প্রতারক রাজনীতিবিদদের আধিপাত্য।
মানুষ মারার কল সর্বত্র সমান্তরালে সমানতালে চলছে ত চলছে।
আসল নৈরাজ্যের অংশীদার এই ধর্ষণের সংস্কৃতিতে হেফাজত জামায়েত রাজনীতির মহাজোট।
পলাশ বিশ্বাস
কাজে এল না প্রশাসনিক পদক্ষেপ। নিজেদের দাবিতে অনড় থেকে সম্মুখসমরেই হাঁটলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীরা।
|
সম্মুখসমরে ডরাইব ক্যানে,দ্যাশটাই ত কুরুক্ষ্যাতরো?
প্রতিষ্ঠানের সমন্তরাল ক্ষমতার রাজনীতি ও শাসকের চোখরাঙাণিতে চলা বিবেকহীন প্রতিষ্ঠানের এই দুঃসময়ের নাম আজকের যাদপুরের প্রতিরোধ।
যাদবপুরকে সমর্থন না জানানোটাই হয়ত সব চেয়ে বড় অপরাধ।
পাশে আছি যাদবপুর।
আজকালের প্রতিবেদন: যাদবপুর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মেডেল ফিরিয়ে দিয়ে গেলেন সেখানকার এক কৃতী পড়ুয়া৷ সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অহনা পন্ডা তাঁর পদক ফিরিয়ে দিলেন৷ তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী ছিলেন৷ ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছিলেন৷ এই কৃতিত্বের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে দিয়েছিলেন সোনার মেডেল৷ এদিন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যান৷ কিন্তু উপাচার্য ছিলেন না৷ পরে তিনি সহ-উপাচার্য সিদ্ধার্থ দত্ত, রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন৷ যাদবপুরে ছাত্রদের ওপর পুলিসের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে ফিরিয়ে দেন সেই মেডেল৷
নজরুলের কথায়ঃ
আমি চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,
মহা- প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস!
আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর,
আমি দুর্বার,
আমি ভেঙে করি সব চুরমার!
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল!
আমি মানি না কো কোন আইন,
আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!
আমি ধূর্জটি, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর
আমি বিদ্রোহী, আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাতৃর!
বল বীর -
চির-উন্নত মম শির!
আরও আছেন মাথার উপরে রবীন্দ্রনাথের সেই অমোঘ বক্তব্য,যা আবৃত্তি করতে বাঙালি পৃথীবী সময় অসময় জ্ঞান করে না ,তবু শাসকের রক্ত চক্ষুকে ভয়?
চিত্ত যেথা ভয়শূণ্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী বসুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি, যেথা বাক্য হৃদয়ের উৎসমুখ হতে উচ্ছ্বাসিয়া উঠে,যেথা নির্বারিত স্রোতে...
বাংলা কবিতার পাতা খুললেই হয়,বাঙালি স্বভাব কবি
হরেক রকমের বাঙালি
অন্যমিল দিলেই,ভক্তকুল পেলেই কবি
তাঁদের জন্যই নিবেদনঃ
নিত্য তব চিত্তে জাগিছে হৃদয়, বিশ্ব ধরনীতে অপূর্ন যাহা তাই । কৃশ আধারে শঙ্খের আওয়াজ জাগিলো যেথা হায় তব বিনিদ্র সে রজনী তাহার তরে পুরে হল ছাই । হৃদয়ের সাথে আজি এ মন করিছে যেথাখেলা হায় কত বিচিত্র সে হৃদয়, খুঁজে দেখো তাহা মাঝে আছে কি আমার ঠায় । তব এ প্রান আজ সখা উথলিয়া উঠে ঐ মন দুয়ারে, হৃদয় দুয়ার খুলে লও …
আরও আছেন মাথার উপরে রবীন্দ্রনাথের সেই অমোঘ বক্তব্য,যা আবডত্তি করতে বাঙালি পৃথীবী সময় অসময় জ্ঞান করে না ,তবু শাসকের রক্ত চক্ষুকে ভয়
চিত্ত যেথা ভয়শূণ্য, উচ্চ যেথা শির, জ্ঞান যেথা মুক্ত, যেথা গৃহের প্রাচীর আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী বসুধারে রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি, যেথা বাক্য হৃদয়ের উৎসমুখ হতে উচ্ছ্বাসিয়া উঠে,যেথা নির্বারিত স্রোতে
লণ্ডনের ইণ্ডিয়া সোসাইটি থেকে একই নামে কবি উইলিয়াম বাটলার ইয়েটস এর লেখা ভূমিকা নিয়েরবীন্দ্রনাথের নিজের ইংরেজীতে অনুবাদ করা বইটি প্রকাশিত হয় ১০৩টি গান .... ক্লান্ত চিত্তে নাহি তুলি ক্ষীণ কলরব তোমার পূজার অতি দরিদ্র উত্সব | রাত্রি এনে দাও তুমি ... উচ্ছ্বসিয়া উঠে, যেথা নির্বারিত স্রোতে দেশে দেশে দিশে দিশে কর্মধারা ধায়
আমার চিত্তে তোমার সৃষ্টিখানি রচিয়া তুলিছে বিচিত্র এক বাণী। তারি সাথে প্রভু মিলিয়া তোমার প্রীতি জাগায়ে তুলিছে আমার সকল গীতি, আপনারে তুমি ... যেথা আসনের মূল্য না হয় দিতে, যেথা রেখা দিয়ে ভাগ করা নেই কিছু যেথা ভেদ নাই মানে আর অপমানে, স্থান দাও সেথা সকলের মাঝখানে। যেথা বাহিরের আবরণ নাহি রয়, যেথা আপনার উলঙ্গ পরিচয়।
খবরে ক্রমশঃ প্রকাশ্য,অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছাত্ররা গর্জে উঠলে কী হতে পারে, বৃষ্টিভেজা মিছিল থেকেই তা অনেকটা পরিষ্কার। যাদবপুরের উপাচার্য পদত্যাগ না করা পর্যন্ত প্রতিবাদের এই গর্জন যে থামবে না, তাও সাফ বুঝিয়ে দিলেন যাদবপুরের পড়ুয়ারা।
শাসকের রক্তচক্ষু ক্ষমতার রাজনীতির স্রবশক্তির বিরুদ্ধে অতএব আন্দোলনকে বৃহত্তর আকার দিতে সোমবার তাঁরা ঘোষণা করলেন আরও একগুচ্ছ কর্মসূচি।
শাসক সাবধান,এই কর্মসুচির মধ্যেই রয়েছে- চানা ক্লাস বয়কট, গণ কনভেনশন, লালবাজার অভিযান এবং বিশ্ব প্রতিবাদ দিবস।
ইতিমধ্যে যাদবপুরকাণ্ডে প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়েছে দেশজুড়ে।
সেই ঢেউকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হয়েছেন পড়ুয়ারা।
বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা প্রাক্তনীদের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার ডাক দেওয়া হয়েছে গ্লোবাল প্রটেস্ট ডে-র। সেদিন বিশ্বের ১০০টি শহরে একসঙ্গে আয়োজন করা হবে প্রতিবাদ কর্মসূচির।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য সোমবার থেকে অবিলম্বে ক্লাস শুরুর জন্য নোটিস জারি করেছে। জট কাটাতে আলোচনায় বসার আহ্বানও জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও রেজিস্ট্রার প্রদীপকুমার ঘোষের সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছেন ছাত্ররা।
আন্দোলনের দাবি ন্যায়ের দাবি।
অন্যায়ের সঙ্গে বোঝাপড়া নয়।
আন্দোলনের গন্ধে এখনও মদ গাঁজা ভাঙ্গের অবদান খুঁজছে যে অন্ধ ভক্তকুল,তাদের বোঝার খথা নয় যে আমাদেরই ঘরের ছেলেমেয়ে,পড়ুয়াদের দাবি একটাই, যে উপাচার্য পুলিশ ডেকে তাঁদের লাঠিপেটা করেছেন, তাঁর অপসারণ।
যতদিন তা না হচ্ছে, ততদিন প্রতিবাদ চলবে।
ধামাচাপা দিয়ে এই বিদ্রোহের আগুন নেভানো অসম্ভব,সর্বশক্তিমান বর্ণ আধিপাত্যের ক্ষমতা রাজনীতির বিবেক জগবে না কোনো দিন।
কোনো দিনই না।
অথছ বলা হচ্ছে ,যাদবপুরকাণ্ড, সুরঞ্জন দাসকে চেয়ারম্যান করে ৬ জনের তদন্ত কমিটি গড়ল রাজ্য সরকার।সরকার এবার যাদবপুর কাণ্ডে কিছুটা নমনীয় হল ।যেহেতু গতকাল রাতে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন ছাত্রী নিগ্রহের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
তারপর সোমবারই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চেয়ারম্যান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করল। সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
তবে ছাত্রদের দাবি মত উপাচার্যের অপসারণ প্রশ্নে নীরব শিক্ষামন্ত্রী।
ইতিমধ্যে কোলকাতায কামদুনি আমদানি প্রশাসনিক দক্ষতার আবার আরেকটি নিদর্শন।
মজার কথা হল,যাদবপুরে নির্যাতিতা ছাত্রীর বাবা শুক্রবার আশঙ্কা প্রকাশ করেন, মেয়ের শ্লীলতাহানির ঘটনা ধামাচাপা পড়ে যেতে পারে।
তাত্পর্য্যপূর্ণ ভাবে গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন তিনি।
জ্ঞাতব্য, এই ঘটনার দুদিন পর রবিবার যাদবপুরকাণ্ডের নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এরপর রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।
এবং রাতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় যাদবপুরকাণ্ডে নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য কমিটি গড়ার কথা ঘোষণা করেন।
শিক্ষা মহলের একাংশের ধারণা, যাদবপুরকাণ্ডে ব্যাপক আন্দোলনের জেরে তদন্ত কমিটি তৈরি করে কিছুটা নমনীয় হল রাজ্য। কারণ এই তদন্ত কমিটি নিয়েই দিন কয়েক আগেই ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছিল শিক্ষামন্ত্রীর গলায়।
তবে উপাচার্য পদত্যাগ না করলে ছাত্ররা ক্লাস বয়কট চালিয়ে যাবেন শুধু না, উপাচার্যকে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
এপার বাংলায় রাজনৈতিক মেরুকরণের যথাসম্ভব ক্ষমতার রসায়নে এসিডজ্বলা ছাত্রসমাজের চেহারা,শিক্ষাক্ষেত্রের নৈরাজ্য ঠিক কোন জাযগায় যেতে পারে,শাহবাগের উজ্জ্বল ছবির পাশাপাশি তার একটি চিত্রঃচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। রোববার মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বশান্তি প্যাগোডা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা স্থানীয় নুর কটেজ ও বিশ্বশান্তি প্যাগোডা হোস্টেলের বেশ কয়েকটি কক্ষে ভাংচুর চালিয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
হাটহাজারী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইসমাইল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রাকিব নামে এক ছাত্রলীগ নেতা আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য রক্ষিত ছাত্রবাস প্যাগোডায় অবস্থান করছে বলে খবর পেয়ে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ সেখানে গেলে উভয় গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলি হয়। এতে কোনো হতাহত হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সুমন মামুন বলেন, ভিএক্সের কর্মীরা বিনা উসকানিতে বিশ্বশান্তি প্যাগোডার দুইটি ও স্থানীয় নুর কটেজের চারটি কক্ষে ভাংচুর চালিয়েছে। তারা এ সময় ২০-২৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে এবং কটেজের কক্ষে থাকা শিক্ষার্থীদের সনদে আগুন দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক দফতর সম্পাদক জালাল আহমেদ বলেন, প্যাগোডা হচ্ছে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য রক্ষিত। কিন্তু সুমন মামুনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নামধারী বহিরাগতরা প্যাগোডার বৈধ শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে বেশ কয়েকটি কক্ষ দখল করে নেয়।
নৈরাজ্যের আর একটি চিত্র সেটাও ওপার বাংলার।সোনাকান্তি বরুআর চিত্রার্পণেঃ আমরা কি মানুষ না আমাদেরকে ধর্মের নামে অধর্মের ভূতে পেয়েছে। বাংলাদেশে অর্পিত সম্পত্তি বা শত্রু সম্পত্তির অর্থ কি? মানুষ জাতি বা আশরাফুল মাকলুকাত শয়তানের গোলাম হয়ে পাকিস্তানের লাল মসজিদ রক্ত গঙ্গায় ভাসানোর দরকার ছিল না।
ধর্মের নামে নর নারী হত্যা কোন ধর্মেরই পবিত্র বাণী নয়।
ধর্মের নামে যে পশু আমাদের অন্তরে প্রবেশ করেছে সেই পশুকে মানবতার অস্ত্র দিয়ে ধ্বংস করে মানবতার দেশ গড়ে তুলতে হবে।
অহিংসার মহব্বতই মানবিক কর্মযজ্ঞ।
অপেক্ষার সময় ফুরিয়ে গেছে। সময় এসেছে সামপ্রদায়িক ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার।
বাংলাদেশে প্রতারক রাজনীতিবিদগণের চরিত্র কয়লার মত শত ধু’লে ও ময়লা যায় না। প্রতারণার রাজনীতিতে দেশ ও জাতি স্বাধীনতায় অমৃতের সাধ ভোগ করতে করতে ও করতে পারেন নি।
বিগত দুর্নীতিবাজ জোট সরকারের পৈশাচিক উল্লাসনৃত্যের আমলে ৫০০ বোমার প্রতিধ্বনিতে আলকায়দার হায়নারা চট্টগ্রামের গহন বনে প্রবেশ করে কোথায় হারিয়ে গেল?
মা মাটি মানুষের সরকার ,শুনছেন কি?
পশ্চিম বঙ্গ ও বাংলাদেশেই শুধু নয়,সারা মহাদেশে ধর্মোন্মাদী প্রতারক রাজনীতিবিদদের আধিপাত্য।
মানুষ মারার কল সর্বত্র সমান্তরালে সমানতালে চলছে ত চলছে।
আসল নৈরাজ্যের অংশীদার এই ধর্ষণের সংস্কৃতিতে হেফাজত জামায়েত রাজনীতির মহাজোট।
সহবাগ আন্দোলন ঠেকাবার মরিয়া চেষ্টায় জামাত হেফাজতের এই কারসাজির আলোকে পশ্চিম বঙ্গের ভবিষ্যত ও ভবিতব্য যে একই খাতে বইছে,হালের ঘটনাবলী সেই অশনিসংকেতই করছে।
যাদবপুরের ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার রাজনীতি ও শাসকের সংলাপহীন অতি সক্রিয়তা যে কত বড় সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে,সারা রাজ্যে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়া সন্ত্রাস আস্তরণ তারই বনজির নজির।
প্রতিষ্ঠানের সমন্তরাল ক্ষমতার রাজনীতি ও শাসকের চোখরাঙাণিতে চলা বিবেকহীন প্রতিষ্ঠানের এই দুঃসময়ের নাম আজকের যাদপুরের প্রতিরোধ।
যাদবপুরকে সমর্থন না জানানোটাই হয়ত সব চেয়ে বড় অপরাধ।
পাশে আছি যাদবপুর।
ইতিমধ্যে যাদবপুরের নিগৃহীতা ছাত্রীর অভিযোগ সত্য কিনা তা খতিয়ে দেখার কাজ শুরু করে দিল সরকার গঠিত কমিটি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করলেন চেয়ারম্যান সুরঞ্জন দাস। পরে কমিটির দুই সদস্য দেখা করেন নির্যাতিতার সঙ্গে। অন্যদিকে, কমিটির বিরুদ্ধে পক্ষপাতের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন চেয়ারম্যান।
গত ২৮ অগাস্ট যাদবপুরের হস্টেলের মধ্যে তাঁকে নিগ্রহ করে তারই কয়েকজন সহপাঠী। ছাত্রীর অভিযোগ, অধ্যক্ষের ভূমিকা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ পুলিসের লাঠিচার্জ। সবমিলিয়ে সংবাদ শিরোনামে যাদবপুর।
ঘটনার ২৫ দিন পরও নীরব ছিল সরকার। কিন্তু, ছাত্রছাত্রীর রাজপথে কলরব, রাজ্যপালের হস্তক্ষেপের জেরে বাড়তে থাকে চাপ। শেষপর্যন্ত সুরঞ্জন দাসের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হয়। মঙ্গলবার থেকে কাজ শুরু করে দিল সেই কমিটি।
দুপুরে তদন্ত কমিটির দুই সদস্য প্রথমে নির্যাতিতার বাবা ও পরে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করেন। কমিটি গঠনের পরই নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, কমিটির অধিকাংশ সদস্যই শাসকদলের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। কেন বিশাখার সুপারিশ মেনে কোনও মহিলাকে কমিটির চেয়ারম্যান করা হলনা প্রশ্ন ওঠে তানিয়েও। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাশ।
এদিন সরকারের পক্ষে সরব হয়েছিলেন আরও কয়েকজন। যাদবপুরকাণ্ডে ছাত্রবিক্ষোভকে ঠেকাতে সরকার যে কতটা মরিয়া উপাচার্যদের সাংবাদিক সম্মেলন তার আরও একটা প্রমাণ বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
প্রতিষ্ঠানের সমন্তরাল ক্ষমতার রাজনীতি ও শাসকের চোখরাঙাণিতে চলা বিবেকহীন প্রতিষ্ঠানের এই দুঃসময়ের নাম আজকের যাদপুরের প্রতিরোধ।
যাদবপুরকে সমর্থন না জানানোটাই হয়ত সব চেয়ে বড় অপরাধ।
পাশে আছি যাদবপুর।
24 ঘন্টার খবরঃযাদবপুরকাণ্ডে নাটকীয় মোড়। তৃণমূলের মিছিলে যোগ দিলেন নিগৃহীতা ছাত্রীর বাবা। গত শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে যাদবপুরকাণ্ডের জন্য উপাচার্যকেই কাঠগড়ায় তুলে ছিলেন তিনি। কিন্তু, শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে কথা বলার পরই আজ তৃণমূলের অবস্থান বিক্ষোভে যোগ দিয়ে বললেন, উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনের আর কোনও প্রয়োজন নেই।
তখনও উত্তাল কামদুনি। শাস্তির দাবিতে দেশজুড়ে আন্দোলন।সরব নির্যাতিতার পরিবার।
এরপরই ক্যামেরার আড়ালে ঘটে গেল বেশকিছু ঘটনা। নির্যাতিতার পরিবারের একাধিক সদস্য সরকারি চাকরি পেলেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় বাড়ি। তারপরই বদলে গেল পরিবারের সুর। এখন সরকারের পাশেই নির্যাতিতার পরিবার।
এবারও সেই একই স্ক্রিপ্ট। শুধু স্থান কাল আর পাত্রের পরিবর্তন। যাদবপুরের নিগৃহীতা ছাত্রীর বাবা এই সেদিনও ছিলেন সরকারের বিরুদ্ধে সরব।
তার মেয়ের পাশে দাঁড়াতে রাস্তায় ছাত্রছাত্রীরা।
রবিবার তার বাড়ির দুয়ারে হাজির লালবাতির গাড়ি। প্রায় ঘণ্টাখানের রুদ্ধদ্বার বৈঠক। সোমবার সকালে সোজা নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আরও একপ্রস্ত আলোচনা। তারপর সেখান থেকে সোজা মেয়ো রোডের অবস্থানে।
এখানেই শেষ নয়। যে উপাচার্যের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের সামনে বাছাই বাছাই শব্দ ব্যবহার করতেন তিনি এবার সেই তিনিই আর আন্দোলনের কোনও যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছেন না।
অবশ্য এমন সুর বদল দেখে একেবারেই অবাক নন ছাত্রছাত্রীরা। কারণ গত তিনবছর ধরে শুধু সুর বদল নয় বহু দলবদল দেখতেও এখনও অভ্যস্ত মহানগরী। আর তাই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের দাবি আন্দোলন চলবে।
এবিপি আনন্দের প্রতিবেদনঃশিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আগেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। এবার যাদবপুরের উপাচার্যর পাশে তৃণমূল আমলে নিযুক্ত রাজ্যের সাত উপাচার্য। তাঁরা হলেন,বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রতনলাল হাংলু, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমনাথ ঘোষ, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকার, সিধো-কানহু-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সমিতা মান্না, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা মুখোপাধ্যায় এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন ভট্টাচার্য। সঙ্গে ছিলেন উচ্চশিক্ষা সংসদের ভাইস চেয়ারম্যান মলয়েন্দু সাহাও।
তৃণমূল আমলে নিয়োগপত্র পাওয়া এই সাত উপাচার্যর কাছে ছাত্রদের ঘেরাও বেদনাদায়ক। কিন্তু, সন্তানতুল্য ছাত্রদের ওপর পুলিশের নির্বিচারে অত্যাচার তাঁদের বিশেষ ভাবায় না। তাই ছাত্রপেটানো নিয়ে তেমন কোনও বাক্য খরচ করলেন না তাঁরা। দ্বিধা করলেন না অভিজিত চক্রবর্তীকে ক্লিনচিট দিতেও।
রঞ্জন চক্রবর্তী বলেছেন, ওই দিন রাতে ছাত্রদের ঘেরাওয়ে তিনি বেদনাহত। তাঁরা যাদবপুরের উপাচার্যের পাশেই রয়েছেন।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে অনেকেই এই উপাচার্যদের বক্তব্যের সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন সরকার, শাসক দল এমনকী পুলিশ কমিশনারের সাফাইয়ের। যদিও খোদ উপাচার্যদের সাফাই, কোনও দলের হয়ে নয়, যাদবপুরে শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতেই ছাত্রদের কাছে তাঁদের এই আর্জি। কোনও কোনও উপাচার্য তো আবার নিজের যুক্তি জোরাল করতে গিয়ে অতীতের পুলিশি তাণ্ডবের প্রসঙ্গও টেনে আনলেন।
উপাচার্যদের এই যুক্তিতে অনেক শিক্ষাবিদই প্রশ্ন তুলছেন, এটা কি ৩৪ বছর বনাম তিন বছরের রাজনৈতিক ফিরিস্তির লড়াই চলছে? তবে তৃণমূল আমলে নিযুক্ত সাত উপাচার্য অবশ্য সেসব জটিলতায় ঢুকতে চাননি। তাঁরা ব্যস্ত ছিলেন অভিজিৎ চক্রবর্তীর পদত্যাগের দাবি খারিজ করতেই।রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেছেন, এধরনের দাবি অযৌক্তিক।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, উপাচার্য নিরপেক্ষ হবেন, এটাই অভিপ্রেত, বাঞ্ছনীয়। শিক্ষার পক্ষে সেটাই মঙ্গল। কিন্তু, এদিন তৃণমূল আমলে নিযুক্ত উপাচার্যদের বক্তব্য যেভাবে শিক্ষামন্ত্রী বা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কার্যত হুবহু মিলে গেল, তারপর কি আর উপাচার্যদের কাছে নিরপেক্ষতা আশা করা যায়? উপাচার্যদের এই বক্তব্য কি শাসকের প্রতি তাঁদের আনুগত্যের প্রকাশ? অনেকে আবার প্রশ্ন তুলছেন, ছাত্রদের দাবিকে নস্যাৎ করে, পুলিশের তাণ্ডবকে কৌশলে এড়িয়ে, ঘেরাওকে বড় করে দেখানোর মধ্যে কি কোনও বিশেষ রাজনীতি আছে? নাহলে তৃণমূলের পাল্টা মিছিল সাড়া ফেলতে না পারার পরদিনই উপাচার্যদের ময়দানে নামানো কেন?
আজকালের প্রতিবেদন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের প্রতিবাদের লড়াইকে সংহতি জানিয়ে দেশ জুড়ে ‘যাদবপুর সংহতি দিবস’ পালন করতে চলেছে এস এফ আই৷ ২৬ সেপ্টেম্বর দেশ জুড়ে এই সংহতি দিবস পালন করা হবে৷ ক্যাম্পাসে গণতন্ত্র রক্ষা ও শাম্তি বজায় রাখার আহ্বানই হবে সংহতি দিবসের মূল স্লোগান৷ এস এফ আইয়ের স্লোগান: ছাত্রদের মনের উঠোন রাঙিয়ে তুলুক, যাদবপুরের অন্ধকারে আগুন জ্বলুক৷ এস এফ আইয়ের রাজ্য সম্পাদক দেবজ্যোতি দাস বলেন, যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীরা যে লড়াইটা শুরু করেছেন, সেটা আজ শুধু রাজ্য নয়, সারা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে৷ এই প্রতিবাদের মূল দাবিটাই হল ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করা৷ আমাদের বক্তব্য ক্যাম্পাসটা পড়ুয়াদের৷ সমাজবিরোধী বা পুলিসের নয়৷ এস এফ আই ক্যাম্পাসে এই গণতান্ত্রিক পরিবেশকে বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর৷ এর জন্য এস এফ আই চায় ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন৷ দেবজ্যোতি বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের জন্য আইসা, ডি এস ও, ছাত্র পরিষদ–সব ছাত্র সংগঠনের কাছেই আমরা আবেদন করছি৷ ক্যাম্পাসের দখল যাতে ছাত্রদের হাতেই থাকে, কোনও সমাজবিরোধী বা পুলিসের কাছে নয়, তার জন্য প্রয়োজনে এস এফ আই নিজেদের পতাকাটাকেও তুলে রাখবে বলেও জানান দেবজ্যোতি৷ এস এফ আইয়ের বক্তব্য, যাদবপুরে মধ্যরাতে পুলিসি আক্রমণের পর সমস্ত ছাত্র সমাজের মধ্যে একটা ঐক্যের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে৷ এই ঘটনার পর রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে৷ বিক্ষোভ, সমাবেশ, মিছিলে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য৷ প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়েছে ভিনরাজ্যেও৷ গত শনিবার রাজপথে যাদবপুরের সঙ্গে মিছিলে বিভিন্ন সংগঠনের ছাত্ররা যেমন ছিলেন, তেমনি এমন অনেকেও যুক্ত হয়েছিলেন যাঁরা সংগঠিত ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত নন৷ দেবজ্যোতি বলেন, আমরা এই ঐক্যটা ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর৷ এই আন্দোলনকে ভেঙে দেওয়ার চক্রাম্তও চলছে৷ আন্দোলনকে ছোট করতে গাঁজা-চরসের তত্ত্বও খাড়া করা হচ্ছে৷ যার প্রতিবাদে এস এফ আইয়ের সংহতি দিবস৷ ওই দিন সিমলায় হিমাচল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাদবপুরের সমর্থনে এবং ক্যাম্পাসে শাম্তি ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখতে সমাবেশ করা হবে বলেও জানান দেবজ্যোতি৷
প্রতিষ্ঠানের সমন্তরাল ক্ষমতার রাজনীতি ও শাসকের চোখরাঙাণিতে চলা বিবেকহীন প্রতিষ্ঠানের এই দুঃসময়ের নাম আজকের যাদপুরের প্রতিরোধ।
যাদবপুরকে সমর্থন না জানানোটাই হয়ত সব চেয়ে বড় অপরাধ।
পাশে আছি যাদবপুর।
বিদ্রোহী – কাজী নজরুল ইসলাম
বল বীর -
বল উন্নত মম শির!
শির নেহারি’ আমারি নতশির ওই শিখর হিমাদ্রির!
বল বীর -
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি’
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
খোদার আসন ‘আরশ’ ছেদিয়া,
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাতৃর!
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!
বল বীর -
আমি চির উন্নত শির!
আমি চিরদূর্দম, দুর্বিনীত, নৃশংস,
মহা- প্রলয়ের আমি নটরাজ, আমি সাইক্লোন, আমি ধ্বংস!
আমি মহাভয়, আমি অভিশাপ পৃথ্বীর,
আমি দুর্বার,
আমি ভেঙে করি সব চুরমার!
আমি অনিয়ম উচ্ছৃঙ্খল,
আমি দ’লে যাই যত বন্ধন, যত নিয়ম কানুন শৃঙ্খল!
আমি মানি না কো কোন আইন,
আমি ভরা-তরী করি ভরা-ডুবি, আমি টর্পেডো, আমি ভীম ভাসমান মাইন!
আমি ধূর্জটি, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল-বৈশাখীর
আমি বিদ্রোহী, আমি বিদ্রোহী-সুত বিশ্ব-বিধাতৃর!
বল বীর -
চির-উন্নত মম শির!
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি,
আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’।
আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ,
আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ।
আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল,
আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’
পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’
ফিং দিয়া দিই তিন দোল;
আমি চপলা-চপল হিন্দোল।
আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা,
করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা,
আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা!
আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর;
আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর!
বল বীর -
আমি চির উন্নত শির!
আমি চির-দুরন্ত দুর্মদ,
আমি দুর্দম, মম প্রাণের পেয়ালা হর্দম হ্যায় হর্দম ভরপুর মদ।
আমি হোম-শিখা, আমি সাগ্নিক জমদগ্নি,
আমি যজ্ঞ, আমি পুরোহিত, আমি অগ্নি।
আমি সৃষ্টি, আমি ধ্বংস, আমি লোকালয়, আমি শ্মশান,
আমি অবসান, নিশাবসান।
আমি ইন্দ্রাণী-সুত হাতে চাঁদ ভালে সূর্য
মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী আর রণ-তূর্য;
আমি কৃষ্ন-কন্ঠ, মন্থন-বিষ পিয়া ব্যথা-বারিধীর।
আমি ব্যোমকেশ, ধরি বন্ধন-হারা ধারা গঙ্গোত্রীর।
বল বীর -
চির – উন্নত মম শির!
আমি সন্ন্যাসী, সুর-সৈনিক,
আমি যুবরাজ, মম রাজবেশ ম্লান গৈরিক।
আমি বেদুঈন, আমি চেঙ্গিস,
আমি আপনারে ছাড়া করি না কাহারে কুর্ণিশ!
আমি বজ্র, আমি ঈশান-বিষাণে ওঙ্কার,
আমি ইস্রাফিলের শিঙ্গার মহা হুঙ্কার,
আমি পিণাক-পাণির ডমরু ত্রিশূল, ধর্মরাজের দন্ড,
আমি চক্র ও মহা শঙ্খ, আমি প্রণব-নাদ প্রচন্ড!
আমি ক্ষ্যাপা দুর্বাসা, বিশ্বামিত্র-শিষ্য,
আমি দাবানল-দাহ, দাহন করিব বিশ্ব।
আমি প্রাণ খোলা হাসি উল্লাস, – আমি সৃষ্টি-বৈরী মহাত্রাস,
আমি মহা প্রলয়ের দ্বাদশ রবির রাহু গ্রাস!
আমি কভূ প্রশান্ত কভূ অশান্ত দারুণ স্বেচ্ছাচারী,
আমি অরুণ খুনের তরুণ, আমি বিধির দর্পহারী!
আমি প্রভোন্জনের উচ্ছ্বাস, আমি বারিধির মহা কল্লোল,
আমি উদ্জ্বল, আমি প্রোজ্জ্জ্বল,
আমি উচ্ছ্বল জল-ছল-ছল, চল-ঊর্মির হিন্দোল-দোল!
আমি বন্ধন-হারা কুমারীর বেণু, তন্বী-নয়নে বহ্ণি
আমি ষোড়শীর হৃদি-সরসিজ প্রেম উদ্দাম, আমি ধন্যি!
আমি উন্মন মন উদাসীর,
আমি বিধবার বুকে ক্রন্দন-শ্বাস, হা হুতাশ আমি হুতাশীর।
আমি বন্চিত ব্যথা পথবাসী চির গৃহহারা যত পথিকের,
আমি অবমানিতের মরম বেদনা, বিষ – জ্বালা, প্রিয় লান্চিত বুকে গতি ফের
আমি অভিমানী চির ক্ষুব্ধ হিয়ার কাতরতা, ব্যথা সুনিবিড়
চিত চুম্বন-চোর কম্পন আমি থর-থর-থর প্রথম প্রকাশ কুমারীর!
আমি গোপন-প্রিয়ার চকিত চাহনি, ছল-ক’রে দেখা অনুখন,
আমি চপল মেয়ের ভালোবাসা, তা’র কাঁকন-চুড়ির কন-কন!
আমি চির-শিশু, চির-কিশোর,
আমি যৌবন-ভীতু পল্লীবালার আঁচড় কাঁচলি নিচোর!
আমি উত্তর-বায়ু মলয়-অনিল উদাস পূরবী হাওয়া,
আমি পথিক-কবির গভীর রাগিণী, বেণু-বীণে গান গাওয়া।
আমি আকুল নিদাঘ-তিয়াসা, আমি রৌদ্র-রুদ্র রবি
আমি মরু-নির্ঝর ঝর ঝর, আমি শ্যামলিমা ছায়া-ছবি!
আমি তুরীয়ানন্দে ছুটে চলি, এ কি উন্মাদ আমি উন্মাদ!
আমি সহসা আমারে চিনেছি, আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ!
আমি উথ্থান, আমি পতন, আমি অচেতন-চিতে চেতন,
আমি বিশ্ব-তোরণে বৈজয়ন্তী, মানব-বিজয়-কেতন।
ছুটি ঝড়ের মতন করতালি দিয়া
স্বর্গ মর্ত্য-করতলে,
তাজী বোররাক আর উচ্চৈঃশ্রবা বাহন আমার
হিম্মত-হ্রেষা হেঁকে চলে!
আমি বসুধা-বক্ষে আগ্নিয়াদ্রি, বাড়ব-বহ্ণি, কালানল,
আমি পাতালে মাতাল অগ্নি-পাথার-কলরোল-কল-কোলাহল!
আমি তড়িতে চড়িয়া উড়ে চলি জোর তুড়ি দিয়া দিয়া লম্ফ,
আমি ত্রাস সন্চারি ভুবনে সহসা সন্চারি’ ভূমিকম্প।
ধরি বাসুকির ফণা জাপটি’ -
ধরি স্বর্গীয় দূত জিব্রাইলের আগুনের পাখা সাপটি’।
আমি দেব শিশু, আমি চঞ্চল,
আমি ধৃষ্ট, আমি দাঁত দিয়া ছিঁড়ি বিশ্ব মায়ের অন্চল!
আমি অর্ফিয়াসের বাঁশরী,
মহা- সিন্ধু উতলা ঘুমঘুম
ঘুম চুমু দিয়ে করি নিখিল বিশ্বে নিঝঝুম
মম বাঁশরীর তানে পাশরি’
আমি শ্যামের হাতের বাঁশরী।
আমি রুষে উঠি’ যবে ছুটি মহাকাশ ছাপিয়া,
ভয়ে সপ্ত নরক হাবিয়া দোজখ নিভে নিভে যায় কাঁপিয়া!
আমি বিদ্রোহ-বাহী নিখিল অখিল ব্যাপিয়া!
আমি শ্রাবণ-প্লাবন-বন্যা,
কভু ধরনীরে করি বরণীয়া, কভু বিপুল ধ্বংস-ধন্যা-
আমি ছিনিয়া আনিব বিষ্ণু-বক্ষ হইতে যুগল কন্যা!
আমি অন্যায়, আমি উল্কা, আমি শনি,
আমি ধূমকেতু-জ্বালা, বিষধর কাল-ফণী!
আমি ছিন্নমস্তা চন্ডী, আমি রণদা সর্বনাশী,
আমি জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি!
আমি মৃন্ময়, আমি চিন্ময়,
আমি অজর অমর অক্ষয়, আমি অব্যয়।
আমি মানব দানব দেবতার ভয়,
বিশ্বের আমি চির-দুর্জয়,
জগদীশ্বর-ঈশ্বর আমি পুরুষোত্তম সত্য,
আমি তাথিয়া তাথিয়া মাথিয়া ফিরি স্বর্গ-পাতাল মর্ত্য!
আমি উন্মাদ, আমি উন্মাদ!!
আমি চিনেছি আমারে, আজিকে আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ!!
আমি পরশুরামের কঠোর কুঠার
নিঃক্ষত্রিয় করিব বিশ্ব, আনিব শান্তি শান্ত উদার!
আমি হল বলরাম-স্কন্ধে
আমি উপাড়ি’ ফেলিব অধীন বিশ্ব অবহেলে নব সৃষ্টির মহানন্দে।
মহা-বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত,
যবে উত্পীড়িতের ক্রন্দন-রোল আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না -
অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না -
বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দিই পদ-চিহ্ন,
আমি স্রষ্টা-সূদন, শোক-তাপ হানা খেয়ালী বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!
আমি বিদ্রোহী ভৃগু, ভগবান বুকে এঁকে দেবো পদ-চিহ্ন!
আমি খেয়ালী-বিধির বক্ষ করিব ভিন্ন!
আমি চির-বিদ্রোহী বীর -
বিশ্ব ছাড়ায়ে উঠিয়াছি একা চির-উন্নত শির!
| ||
No comments:
Post a Comment