নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক ধর্ষণ নয়, মামলা খারিজ দিল্লি আদালতে,তাহলে কি আবার সেই বাল্য বিবাহ ধর্মমতে?
সারদাকাণ্ডে এবার নাম জড়াল মেয়র শোভন চ্যাটার্জির।অন্যদিকে সারদাকাণ্ডে জড়িত প্রভাবশালীদের নাগাল পেতে এবার পঞ্চম এফ আই আর দায়ের করতে চলেছে সিবিআই।
জাওয়াহিরির ভিডিও বার্তা নিয়ে তোলপাড়
পলাশ বিশ্বাস
জ্ঞাতব্যঃপ্রতি ১০ কন্যাশিশুর একজন যৌন নির্যাতনের শিকার
পৃথিবীতে মোট ১২০ মিলিয়ন বা ১২ কোটি মেয়েশিশু যৌন নির্যাতনের শিকার। মেয়েশিশুর বয়স ২০ বছর হওয়ার আগেই প্রতি ১০ মেয়েশিশুর একটি ধর্ষিত অথবা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। জাতিসংঘ এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে। বিশ্বের ১৯০টি দেশের তথ্যের ভিত্তিতে ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। একসঙ্গে এতগুলো দেশের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে শিশুদের বিষয়ে এমন কোন প্রতিবেদন এর আগে প্রকাশিত হয়নি। খবর বিবিসি অনলাইনের। জাতিসংঘের শিশুসংস্থা ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০১২ সালেই ৯৫ হাজার শিশু ও কিশোর-কিশোরী খুন হয়েছে। যার বেশিরভাই ঘটেছে ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে। ইউনিসেফ আরও জানায়, বিশ্বজুড়ে শিশুরা নিয়মিতভাবে সহিংসতার শিকার হচ্ছে। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক এ্যান্থনি লেক জানান, সমাজের সব পর্যায়ের শিশুই সহিংসতার শিকার হয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থান, ধর্ম, নৃতত্ত্ব ও পরিবারের আয় কোন কিছুই তা আটকাতে পারেনি। ঘর, স্কুল বা লোকালয় যেখানে শিশুরা নিরাপদে থাকবে সেখানেই নির্যাতনের এ সব ঘটনা ঘটছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলেছে। পরিবারের সদস্য, শিক্ষক, প্রতিবেশী, অপরিচিত ও অন্য শিশুরা এ সব নিপীড়ন করেছে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২ থেকে ১৪ বছরের শিশুদের মধ্যে প্রতি ১০ জনের ৬ জনকেই নিয়মিতভাবে শারীরিক শাস্তি পেতে হয়। শিশুর অভিভাবক বা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে যারা থাকেন তারাই এই শাস্তি দিয়ে থাকেন। এছাড়া অনেক দেশে শিশুদের শাস্তি হিসেবে মারধর করা সামাজিকভাবেই স্বীকৃত। আবার অনেক সময় শিশুরা ভয়ে নিপীড়নের কথা প্রকাশ করে না। শিশু নির্যাতনের ঘটনা অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ হিসেবে রিপোর্ট করা হয় না বলে প্রকৃত ঘটনার সংখ্যা প্রতিবেদনে উঠে আসা ঘটনার চাইতে অনেক বেশি বলেও জানিয়েছে ইউনিসেফ।
মোদির নেতৃত্বে ধর্মীয় বিভাজনের পথে ভারত
ক্রধোন্মত্ত ও বিদ্বেষ প্রণোদিত হিন্দু কর্মী রাজেশ্বর সিং ভারতের শত শত বছরের ধর্মীয় বিবিধত্বের অবসান ঘটানোর লক্ষ্য নিয়ে কাজে নেমেছেন। আর কণ্ঠস্বর ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের হাসায়ান শহরের এক সঙ্কীর্ণ রাস্তায় এক প্রটেষ্ট্যান্ট গির্জার দেয়ালে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। সিং গত সপ্তাহে ওই শহরে এক খ্রিস্টান পরিবারকে হিন্দুধর্মে দীক্ষিত করার এক অনুষ্ঠানে বিদেশী ধর্মগুলোর বিরুদ্ধে বিষোদগার করেন। হাসায়ান ভারতের রাজধানী দিল্লী শহর থেকে ৮৭ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের হিন্দু সমাজকে কলুষমুক্ত করব। তিনি বলেন, আমরা ভারতে গির্জা বা মসজিদের ষড়যন্ত্রকে সফল হতে দেব না। তিনি ওই পরিবারের উঠানে ধর্মান্তরিত দরিদ্র নিম্নবর্ণের ব্যক্তিদের প্রায়শ্চিত্ত করতে প্রজ্বলিত হোমাগ্রির পাশে দাঁড়িয়ে এ সব কথা বলেন। মে মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতায় আরোহণের ঘটনায় সাহসী হয়ে ওঠে তার হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতারা ভারতকে হিন্দুদের এক দেশ বলে প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে সিংয়ের মতো ডানপন্থী কর্মীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। এতে সব ধর্ম পালনের সাংবিধানিক প্রতিশ্রুতির প্রতি এক বিপদ দেখা দিয়েছে। ভারতের ১২৭ কোটি মানুষের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ হিন্দু ছাড়া অন্যান্য ধর্মের অনুসারী বলে নিজেদের পরিচিত করে থাকে। সিং রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সঙ্গে সম্পৃক্ত। এটি এক বিশাল জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক সংগঠন। এর লক্ষ্য হলো 'জাতিকে গৌরবের শীর্ষে নিয়ে যেতে' হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ করা। আরএসএস কিশোর অবস্থায় মোদিকে রাজনীতিতে এনেছিল। এর কর্মীবাহিনী মূল ভূখ- বিশেষত দেশের সবচেয়ে জনবহুল রাজ্য উত্তর প্রদেশে মোদির বিজয়কে সুসংহত করতে সহায়তা করেছিল।
সাধারণ নির্বাচনের পর থেকে আরএসএস ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছে। এর সদস্যদের মন্ত্রিসভার বড় বড় পদ এবং সিনিয়র নেতাদের বিজেপিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। মোদির পুরনো বন্ধু আরএসএসপ্রধান মোহন ভারতের ক্রমশ উগ্র বিবৃতি সিংয়ের মতো লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবীকে উৎসাহ যুগিয়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর মে মাসের বিজয়ে এরই মধ্যে উত্তেজিত হয়ে রয়েছে।
ভগবত আগস্টে এক বিবৃতিতে বলেন, ঠিক যেমন যারা ইংল্যান্ডে থাকেন তারা ইংরেজ, জার্মানীতে যারা থাকেন, তারা জার্মান এবং যারা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন তারা আমেরিকান ঠিক তেমনি যারা হিন্দুস্তানে যাকেন, তারা হিন্দু। এতে ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিম ও খ্রিস্টানরা ক্ষুব্ধ হন।-আনন্দবাজার অনলাইন
রাজা রামমোহন রায় এবং ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের নবজাগরণ বাতিল হতে চলেছে রামরাজত্বে।মুক্ত বাজারে স্ত্রীর দেহমুক্তি ঘটছে পন্যায় তবদিলী মারফত,কিন্তু স্রীকে মুক্ত করতে উত্তর আধুনিক সমাজ ও ন্যায় ব্যবস্থা আজও সেই বিদ্যাসাগর যুগে। সম্প্রতি সারা বাংলাদেশে বাল্য বিবাহের সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়ছে। যে কারণে সামাজিক নানাবিধ সমস্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সরকার ও বিভিন্ন এনজিও সংগঠনের সচেতনতামূলক কার্যক্রম ব্যাপকভাবে প্রচারিত হলেও কোনক্রমেই বাল্য বিবাহ রোধ করা যাচ্ছে না। বাংলায় বাল্য বিবাহ সেই রকম হচ্ছেনা বটে,কিন্তু যৌনহেনস্থাতে বাংলাদেশও ফেল,এপার আদালতের রায় মেনে নিলেই ঝামেলা চুকে যায়,বাল্য বিবাহ আবার চালূ করলে স্বাধীনচেতা মেয়েদের শায়েস্তা করা যেমন সহজ হবে,পুরুষদের যোগ্য প্রতিযোগিতা থেকে অনেকাংশে রেহাই মিলবে এবং নাবালিকা ধর্ষণও হবে শাস্ত্র ও বিধিসম্মত।তাহলে আবার শুরু হোক গৌরীদান।
নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক ধর্ষণ নয়, মামলা খারিজ দিল্লি আদালতে,তাহলে কি আবার সেই বাল্য বিবাহ ধর্মমতে?
নাবালিকাকে স্ত্রীর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপন ধর্ষণ নয় দিল্লি আদালত এই মামলা খারিজ করে দিল । গত বছর কলকাতা থেকে ২২ বছরের সুমন দে-র সঙ্গে পালিয়ে আসে ১৫ বছরের এক কিশোরি। সুমন দে-র বিরুদ্ধে নাবালিকা অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা করেছিল পুলিস। সেই মামলা খারিজে করে দিল আদালত।
বিচারপতি প্রদীপ ননদ্রাজোগ ও মুক্তা গুপ্তার ভিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে গত বছর যখন কলকাতা থেকে ওই কিশোরি ওই যুবকের সঙ্গে পালিয়ে আসে তখন তার বয়স ছিল ১৫ বছর ৪ মাস। সে স্বেচ্ছায় পালিয়ে এসেছিল ও বিয়ের পর সম্মতিতেই স্বামীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়। অন্যদিকে দিল্লি পুলিসের বক্তব্য যেহেতু ওই সময় কিশোরি নাবালিকা ছিল তাই তার সম্মতির কোনও মূল্যই নেই। তার স্বামীর বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়।
জাওয়াহিরির ঘোষণা ভারতে স্পর্শকাতর কয়েক রাজ্যে সতর্কতা
জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ভারতে আল কায়েদার নতুন শাখা খোলার ঘোষণার পর দেশটির কয়েকটি স্পর্শকাতর রাজ্যে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেছে সেদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি আল কায়েদা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরির ওই ৫৫ মিনিটের ভিডিওটিকে আসল বলে মনে করছে ভারত সরকার। বুধবার ভিডিওটি প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং গোয়েন্দা প্রধানের সঙ্গে এক জরুরী বৈঠকে মিলিত হন বলে পিটিআইয়ের এক খবরে বলা হয়। এ বিষয়ে ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র সূত্র পিটিআইকে বলে, বৈঠকে জাওয়াহিরির ওই ঘোষণার প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আল কায়েদার সদস্য সংগ্রহ ঠেকাতে পুলিশকে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশ দেয়।
প্রায় দু'ঘণ্টা বৈঠকের সারবস্তু প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অবহিত করা হয়। তারপর ভারতের অসম, গুজরাট বা জম্মু-কাশ্মীরের মতো যে সব রাজ্যের নাম ভিডিওতে উল্লেখ করা হয়েছে সে রাজ্যগুলোতে চরম সতর্কতা জারির কথা বলা হয়
বুধবার অনলাইনে পোস্ট করা ৫৫ মিনিটের ভিডিওবার্তায় উপমহাদেশে আল কায়েদার শাখা গঠনকে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, অসম, গুজরাট, আহমেদাবাদ ও কাশ্মীরের মুসলমানদের জন্য 'আনন্দের খবর' বলে অভিহিত করেন আয়মান আল জাওয়াহিরি। এই পদক্ষেপ উপমহাদেশে ইসলামিক আইনের প্রসার ও 'জিহাদের পতাকা সমুন্নত রাখবে' বলে ঘোষণা দেন তিনি। এই ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আল কায়েদার নতুন এই শাখা এ অঞ্চলের মুসলমানদের 'অবিচার ও আগ্রাসন ' থেকে উদ্ধার করবে।
আল কায়েদা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরি মুসলিমদের উদ্দেশে বলেন, 'নিজেদের ভূমি মুক্ত করতে, এর সার্বভৌমত্ব ফিরিয়ে আনতে এবং খিলাফত পুনর্প্রতিষ্ঠা করতে শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদ করতে হবে।' ভিডিওবার্তায় আফগানিস্তানের তালেবান নেতা মোল্লা ওমরের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন জাওয়াহিরি।
আল কায়েদা সম্পর্কে বাংলাদেশ সতর্ক রয়েছে ॥ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আল-কায়েদা ও জঙ্গীগোষ্ঠী সম্পর্কে সরকার ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক।
আল কায়েদা সম্পর্কে একটি তথ্য ইতোমধ্যেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সেদিকে আমাদের কঠোর নজর আছে। এ ধরনের কোন কিছুকেই আমরা অবহেলা করছি না। এ সবের সত্যতা ও গুরুত্ব কতটুকু সেটি আমরা খতিয়ে দেখব। এখন পর্যন্ত সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে।'
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শুক্রবার সকালে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরে জামেআতুস সাহারা মাদ্রাসা মাঠে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির ঢাকা মহানগর কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তৃতাকালে এ কথা বলেন। খবর বাসসর।
উত্তরা পূর্ব,পশ্চিম ও তুরাগ থানার কমিটি গঠন উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা মোঃ ইসমাইল হোসাইনের সভাপতিত্বে এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপি। আসাদুজ্জামান খান কামাল মাওলানা ফারুকী হত্যাকা-ের উল্লেখ করে বলেন, এ হত্যাকা-ের তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষ হলে সব কিছু বলা যাবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোঃ আফজাল, মাওলানা আশিকুল ইসলাম যুক্তিবাদী, বৃহত্তর উত্তরা থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস,এম তোফাজ্জাল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আফছার উদ্দিন খান, মহানগর যুবলীগ ( উত্তর) সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মামুন সরকার, প্রকৌশলী আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
জাওয়াহিরির ভিডিও বার্তা নিয়ে তোলপাড়
'আল কায়েদা সম্পর্কে সরকার আগাম কৌশলী সতর্কতা নিয়ে রেখেছে'
গাফফার খান চৌধুরী ॥ দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশকে নিয়ে আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল কায়েদা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরির ভিডিও বার্তা নিয়ে তোলপাড় চলছে। যদিও চার বছর আগেই বিশ্বের প্রভাবশালী ১১১ গোয়েন্দা সংস্থার তরফ থেকে বাংলাদেশ আল কায়েদার পরবর্তী টার্গেট বলে জানানো হয়েছিল। এরপর থেকেই সরকার আগাম কৌশলী সতর্কতা নিয়ে রেখেছে। কৌশলগত কারণে সরকার সতর্কতার ধরন প্রকাশ করছে না।
আল কায়েদাকে জামায়াতে ইসলামী-শিবির, নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জেএমবি, হুজি ও হিযবুত তাহরীর সহায়তা করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে জাওয়াহিরির ভিডিও প্রকাশের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের ওয়েবপেজ বাঁশের কেল্লার এ্যাডমিনিস্ট্রেটর ও ছাত্রশিবিরের প্রযুক্তিবিদ রিসাদ বিন সাত্তার গ্রেফতারের পর জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে আল কায়েদার যোগাযোগ থাকার বিষয়টি একেবারে দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে যায়।
গত বুধবার অনলাইনে পোস্ট করা ৫৫ মিনিটের ভিডিও বার্তায় উপমহাদেশে আল কায়েদার শাখা গঠনকে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারতের অসম, গুজরাট, আহমেদাবাদ ও কাশ্মীরের মুসলমানদের জন্য 'আনন্দের খবর' বলে অভিহিত করেন জাওয়াহিরি। এই পদক্ষেপ উপমহাদেশে ইসলামিক আইনের প্রসার ও 'জিহাদের পতাকা সমুন্নত রাখবে' বলে ঘোষণা দেয়া হয়। এমন ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আল কায়েদার নতুন এই শাখা এ অঞ্চলের মুসলমানদের অবিচার ও আগ্রাসন থেকে উদ্ধার করবে।
জাওয়াহিরির ভিডিও প্রকাশের বিষয়ে আবারও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জনকণ্ঠকে জানান, ইতোপূর্বেও জিহাদের ডাক দিয়ে ডিভিও প্রকাশিত হয়েছে। তাতে সরকার বিচলিত বা ভীত নয়। জঙ্গীবাদ দমনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে সরকার। এমন অবস্থান থেকে কোন হুমকিই সরকারকে হটাতে পারবে না। বিষয়টি সরকার অনেক আগ থেকেই অবগত। সে মোতাবেক সরকারের আগাম নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেয়া আছে। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীও গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। এ ব্যাপারে সরকারের শীর্ষ পর্যায়েও আলাপ-আলোচনার পাশাপাশি কেবিনেট মিটিংয়ে আলোচনার কথা রয়েছে। সারাদেশেই বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। সীমান্তসহ দেশের প্রতিটি বিমানবন্দরে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ২০ অক্টোবর বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত 'টাইম ম্যাগাজিনে' 'ডেডলি কার্গো- বাংলাদেশ হ্যাজ বিকাম এ সেফ হেভেন ফর আল কায়েদা প্রকাশিত নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী ও জঙ্গী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান ওসামা বিন লাদেন ও আয়মান আল জাওয়াহিরি ছদ্মবেশে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে এসেছিলেন। গ্রুপের বিরাট একটি অংশ ঢাকায় আসে। আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য বাংলাদেশকে একটি ফ্রন্ট হিসেবে ব্যবহার করার জন্যই ঢাকায় আসে আল কায়েদা গ্রুপটি। জঙ্গীবাদ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মধ্যপ্রাচ্যে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কর্মী টানার চেষ্টার প্রক্রিয়া হিসেবে ভারতীয় উপমহাদেশে আল কায়েদার শাখা গঠনের ঘোষণা দিতে পারেন আল কায়েদা প্রধান। বিশেষ করে মার্কিন দুই সাংবাদিককে শিরñেদ করার মধ্য দিয়ে সারা দুনিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
পুলিশ মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত। আমাদের আগাম নিরাপত্তামূলত প্রস্তুতি নেয়া আছে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের মুসলমানদের জিহাদের ডাক দিয়ে আল কায়েদা প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরির ভিডিও বার্তা প্রকাশ পায়। বার্তাটি ছাত্রশিবিরের এক প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ রিসাদ বিন সাত্তার খান প্রচারের দায়িত্বে ছিল। তিনি চার বছর ধরে এ বিষয়ে কাজ করছিলেন। গ্রেফতারের পর আল কায়েদার সঙ্গে জামায়াত-শিবির, বিএনপি ও অন্যান্য উগ্র মৌলবাদী সংগঠন ও জঙ্গী সংগঠন জড়িত বলে প্রকাশ পায়। টিএফআই সেলে দেয়া জবানবন্দীতেও রিসাদ বিন সাত্তার খান পুরো প্রক্রিয়াটির সঙ্গে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির জড়িত থাকার বিষয়ে তথ্য দেয়।
গোয়েন্দা সূত্র জানা গেছে, ২০১০ সালের ৩ জানুয়ারি সার্কভুক্ত একটি দেশে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈশ্বিক জিহাদ, জঙ্গী তৎপরতার বিষয়ে একটি বিশেষ গোপন বৈঠক হয়েছিল। বৈঠকে ১শ' ১১টি দেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার সবচেয়ে চৌকস ও প্রভাবশালী গোয়েন্দারা অংশ নেন। যারা শুধু জঙ্গীবাদের বিষয়ে বিভিন্ন দেশে কাজ করেন। অংশগ্রহণকারীরা আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন গোয়েন্দা। বৈঠকে বিভিন্ন দেশে জঙ্গীদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি সম্পর্কে বিশেষ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। বিশেষ প্রতিবেদন দাখিল করা হয় আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন আল কায়েদার বিষয়ে। আল কায়েদার পাশাপাশি হুজি ও জেএমবির ভবিষ্যত কার্যক্রম ও পরিকল্পনার ওপরও বিশেষ প্রতিবেদন দাখিল হয়। প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু ২০১০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ সরকার বরাবর পাঠানো হয়।
সূত্র বলছে, প্রতিবেদনে হুজি ও জেএমবি আল কায়েদার সহযোগী সংগঠন বলে উল্লেখ করা হয়। আমেরিকা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও ভারতে আল কায়েদার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হামলার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। নতুন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ আল কায়েদার পরবর্তী টার্গেট। সেক্ষেত্রে আল কায়েদা বাংলাদেশে ভয়ঙ্কর হামলা চালাবে। হামলার জন্য ব্যবহার করা হবে বিমান। এসব বিমান বাংলাদেশ বা পার্শ্ববর্তী কোন দেশ থেকে ছিনতাই করা হতে পারে। বাংলাদেশে আল কায়েদার হামলা বাস্তবায়ন করতে জামায়াতে ইসলামী, হুজি ও জেএমবি সহযোগিতা করবে।
সূত্র বলছে, প্রতিবেদনে জামায়াতে ইসলামীকে জঙ্গী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ তিনটি সংগঠন বাংলাদেশে আল কায়েদাকে হামলার জন্য নানাভাবে কাজ করছে বলেও জানানো হয়। হামলা শতভাগ বাস্তবায়ন করতে সীমান্তসহ বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছে। কোন কোন ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামী, জেএমবি ও হুজির কেউ কেউ হামলায়ও অংশ নেয়ার সম্ভাবনা আছে।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ও ভারতকে আগাম সর্তকর্তামূলক ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে। দুই দেশের সীমান্তেই অতিশক্তিশালী গোপন মুভি ও সিসি ক্যামেরা বসানোর পরামর্শ দেয় হয়। চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে জাওয়াহিরির ভিডিও বার্তা প্রকাশের পর দেশজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। সারাদেশে এবং বাংলাদেশ ভারত সীমান্তে হাই রেডএলার্ট জারি করা হয়েছিল।
এমন ঘটনায় ভিডিও বার্তা প্রকাশের সঙ্গে জড়িতকে গ্রেফতারে সারাদেশে সাঁড়াশি অভিযান শুরু হয়। অভিযানের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশে আয়মান আল জাওয়াহিরির ভিডিও বার্তা ব্যাপকভাবে প্রকাশকারী রিসাদ বিন সাত্তার খানকে (২১) টাঙ্গাইল থেকে ভোর ৫টার দিকে গ্রেফতার করে র্যাব। রিসাদ গ্রেফতারকালে টাঙ্গাইল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিল। তার কাছ থেকে জব্দ হয় ২টি ল্যাপটপ, ৩টি মোবাইল, বিপুল পরিমাণ জিহাদী বই, উগ্র মতবাদ প্রচারের বহু বই ও আলামত। পরে তাকে টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
টিএফআই সেল সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানার সরিষারচালা গ্রামে জন্ম রাসেল বিন সাত্তারের। স্থানীয় আজমত আলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণী পাস করে। ২০১০ সালে কালীগঞ্জ সেন্ট নিকোলাস উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করে। একই বছর টাঙ্গাইল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়। শেষ সেমিস্টারে অধ্যয়নরত ছিল। উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার সময় হোস্টেলে থাকাকালীন অন্যান্য ছাত্রদের দেখাদেখি সে নামাজ, রোজা পড়তে থাকে। বিভিন্ন ইসলামিক বই পড়ত। এরপর থেকেই সে ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ২০১০ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করার পর টেক্সটাইল কলেজে ভর্তি হয়ে সে ছাত্রশিবিরের রাজনীতিতে পুরোপুরি জড়িয়ে পড়ে। ২০১০ সালেই সে সর্বপ্রথম ফেসবুক ও ই-মেইলে ইসলামের আলো, ছাত্রশিবিরের বাঁশের কেল্লা, সালাউদ্দিনের ঘোড়া, দৃষ্টিভঙ্গি, যদি রাত পোহালে শোনা যেত শেখ হাসিনা মরে গেছে, দ্যা মেসেজ অফ ইসলাম, ইসলাম-ই-রাজনীতি, শিবির সংবাদ, জিহাদের ঝা-া আমরা চিরদিন উঁচু রাখব, বাগদাদ থেকে বাংলা জিহাদ আর জিহাদসহ ইত্যাদি বিভিন্ন ইসলামিক পেইজে লাইক দিত।
র্যাব সূত্র বলছে, সে মূলত ছাত্রশিবিরের আইটি বিশেষজ্ঞ। সে পাকিস্তানের বালাকোট ওয়েবসাইট (যেটি আল কায়েদার ওয়েবসাইট হিসেবে পরিচিত) থেকে আল কায়েদা প্রধানের ভিডিও বার্তা ডাউনলোড করত এবং তা বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে প্রচার চালাত। ২০১০ সালে থেকেই রিসাদ এ কাজটি করে আসছিল। এ কাজ করতে লন্ডনের তিনজন বিএনপি নেতা নিয়মিত তাকে আর্থিক সহায়তা করত। এ ছাড়া জামায়াত-শিবিরও তাকে নানাভাবে সহায়তা করত। মূলত সে আল কায়েদার মতবাদ ও নেটওয়ার্ক বাড়ানোর কাজ করছিল। রিসাদ এখনও কারাগারে। তার উপর নজরদারি আছে বলে জনকণ্ঠকে জানালেন র্যাবের লিগ্যাল এ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান।
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ১ঌ২ঌ
[ ১ঌ২ঌ সনের ১ঌ নং আইন]
বাল্য বিবাহ অনুষ্ঠান নিবারণ করিবার জন্য আইন: যেহেতু বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠান প্রতিরোধ করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয় ;সেহেতু এই আইন প্রনয়ন করা হল :
ধারা
১। সংক্ষিপ্ত শিরোনাম, এলাকা ও প্রয়োগ :
(ক) এই আইনকে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ১৯২৯ নামে অভিহিত করা হবে।
(খ) সমগ্র বাংলাদেশ এর আওতাভুক্ত এবং বাংলাদেশের সকল নাগরিকের উপরই, তাহারা যেখানেই থাকুক না কেন, ইহা প্রযোজ্য হবে।
(গ) ১৯৩০ সনের এপ্রিলের প্রথম দিন হতে এই আইন বলবত্ হবে।
ধারা
২। সংজ্ঞা :
বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কিছু না থাকলে, এই আইনে -
(ক) শিশু বলতে ঐ ব্যক্তিকে বুঝায়, যার বয়স পুরুষ হলে একুশ বত্রের নিচে এবং নারী হইলে আঠার বত্সরের নিচে।
(খ) "বাল্যবিবাহ" বলতে ঐ বিবাহকে বুঝায় যার চুক্তিবদ্ধ পক্ষগণের যেকোন একপক্ষ শিশু ;
(গ) বিবাহের চুক্তি পক্ষ বলতে পক্ষগণের যেকোন এক পক্ষকে বুঝায় যার বিবাহ তদ্দরা অনুষ্ঠিত হয়েছে বা হওয়ার জন্য প্রস্তুত ;
(ঘ) "নাবালক" বলতে ঐ ব্যক্তিকে বুঝায় যার বয়স পুরুষ হলে একুশ বত্সরের নিচে এবং নারী হলে আঠার বত্সরের নিচে ;
(ঙ) "মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন" বলতে ১ঌ৮২ সনের চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন অধ্যাদেশ (১ঌ৮২ সনের ৩৫ নং আইন) বা ১ঌ৮৩ সনে ঢাকা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন অধ্যাদেশ (১ঌ৮৩ সনের ৪০নং আইন) বা ১ঌ৮৪ সনের খুলনা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন অধ্যাদেশের অধীন গঠিত কর্পোরেশনকে বুঝায় যার এখতিয়ারের মধ্যে কোন বাল্য বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছে বা হওয়ার জন্য প্রস্তুত
(চ) "পৌরসভা" বলতে ১ঌ৭৭ সনের পৌরসভা অধ্যাদেশের (১ঌ৭৭ সনের ২৬ নং আইন) অধীনে গঠিত পৌরসভাবে বুঝায় যার এখতিয়ারের মধ্যে কোন বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছে বা হওয়ার জন্য প্রস্তুত ; এবং
(ছ) "ইউনিয়ন পরিষদ" বলতে ১ঌ৮৩ সনের স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশের (১ঌ৮৩ সনের ৫১ নং আইন) অধীনে গঠিত ইউনিয়ন পরিষদকে বুঝায় যার এখতিয়ারের মধ্যে কোন বাল্য বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছে বা হওয়ার জন্য প্রস্তুত।
ধারা
৩। শিশু বিবাহকারী একুশ বত্সর বয়সের নিচে পুরুষ লোকের শাস্তি বালিত করা হয়েছে।
.............................................................................................................
ধারা
৪। শিশু বিবাহকারীর শাস্তি:
যে কেউ একুশ বত্সর বয়সোর্ধ্ব পুরুষ বা আঠারো বয়সোর্ধ্ব মহিলা হয়ে কোন বাল্যবিবাহের চুক্তি করলে, একমাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাবাসে বা এক হাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধ শাস্তিযোগ্য হবে।
ধারা
৫। বাল্যবিবাহ সম্পন্নকারীর শাস্তি :
যে কেউ যেকোন বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠান, পরিচালনা বা নির্দেশ করলে তিনি এক মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাবাসে, এক হাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধ দন্ডে শাস্তিযোগ্য হবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করেন যে, তার বিশ্বাস করার কারণ ছিল যে, উক্ত বিবাহ কোন বাল্যবিবাহ ছিল না।
ধারা
৬। বাল্যবিবাহ সংশ্লিষ্ট পিতা-মাতার বা অভিভাবকদের জন্য শাস্তি :
যেক্ষেত্রে কোন নাবালক কোন বাল্যবিবাহের চুক্তি করে, সেক্ষেত্রে ঐ নাবালকের ভারপ্রাপ্ত যেকোন ব্যক্তি, পিতা-মাতা হইক বা অভিভাবক হইক বা অন্য কোন সামর্থ্যে হউক, আইনসম্মত হউক বা বেআইনী হউক যদি উক্ত বিবাহে উত্সাহ প্রদানের কোন কাজ করেন, অথবা উহা অনুষ্ঠিত হওয়া হতে নিবারণ করতে অবহেলার দরুন ব্যর্থ হন, তিনি এক মাস পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য বিনাশ্রম কারাবাসে বা একহাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় বা উভয়বিধ দন্ডে শাস্তিযোগ্য হবেন :
তবে শর্ত থাকে যে, কোন মহিলাই কারাবাসে শাস্তিযোগ্য হবে না।
এই ধারার উদ্দেশ্যে যদি না এবং যতক্ষণ না বিপরীত কিছূ প্রমাণিত হয়, এই অনুমান করতে হবে যে, যেক্ষেত্রে কোন নাবালকের বাল্যবিবাহের চুক্তি করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে উক্ত নাবালকের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি ঐ বিবাহ অনুষ্ঠিত হওয়া হতে নিবারণ করতে অবহেলার দরুণ ব্যর্থ হয়েছেন।
ধারা
৭। ৩ ধারা অধীনে অপরাধের জন্য কারাবাস প্রদান করা হবে না :
১৮ঌ৭ সনের সাধারণ দফা আইনের ২৫ ধারায় অথবা দন্ডবিধির ৪ ধারায় অন্তর্ভূক্ত যেকোন কিছু থাকা সত্ত্বেও ৩ ধারার অধীনে কোন অপরাধীকে দন্ডদানকারী আদালত (এই মর্মে) নির্দেশ দান করবে না যে, আরোপিত জরিমানা অনাদায়ে তাকে যেকোন মেয়াদের কারাবাস ভোগ করতে হবে।
ধারা
৮। এই আইনের অধীনে এখতিয়ার :
১৮ঌ৮ সনের ফৌজদারী কার্যবিধি কোডের ১ঌ০ ধারায় অন্তভুক্ত যে কোন কিছু থাকা সত্ত্বেও, প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালত ব্যতীত কোন আদালতই এই আইনের অধীন কোন অপরাধের অধিগ্রহণ বা বিচার করবে না।
ধারা
৯। অপরাধের বিচারার্থে অধিগ্রহণ করিবার পদ্ধতি :
কোন আদালতই ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা বা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন কর্তৃক অথবা যদি উক্ত এলাকায় কোন ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা বা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন না থাকে, তা হলে সরকার এতদপক্ষে নির্ধারণ করতে পারেন এমন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আনীত অভিযোগের ভিত্তি ব্যতীত এই আইনের কোন অপরাধের বিচারার্থে অধিগ্রহণ করবেন না, এবং ঐরূপ অধিগ্রহণ কোন ক্ষেত্রেই যে তারিখে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে বলা হয়, সেই তারিখ হতে এক বত্সর অতিবাহিত হওয়ার পর করা হবে না।
ধারা
১০। এই আইনের অধীন অপরাধের প্রারম্ভিক অনুসন্ধান :
এই আইনের অধীন কোন অপরাধের বিচারার্থে অধিগ্রহণকারী আদালত ১ঌঌ৮ সনের ফৌজদারী কার্যবিধি কোডের ২০৩ ধারা মোতাবেক সংশ্লিষ্ট অভিযোগ খারিজ না করলে, হয় ঐ কোডের ২০২ ধারা মোতাবেক স্বয়ং অনুসন্ধান করবে, অথবা উহার অধঃস্তন কোন প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেটকে ঐরূপ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিবে।
ধারা
১১। অভিযোগকারীর নিকট হইতে জামানত গ্রহণের ক্ষমতা বাতিল করা হয়েছে।
.......................................................................................................
ধারা
১২। এই আইন অমান্য করিয়া নিষেধাজ্ঞা জারির ক্ষমতা :
(১) এই আইনে অন্তর্গত বিপরীত কোন কিছু থাকা সত্ত্বেও আদালত এই আইন লংঘনক্রমে বাল্য বিবাহ ব্যবস্থিত হয়েছে বা অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত, এই মর্মে কোন অভিযোগের মাধ্যমে বা অন্যভাবে উহার নিকট উপস্থাপিত তথ্য হতে সন্তুষ্ট করে ঐরূপ বিবাহ নিষিদ্ধ করে এই আইনের ২, ৪, ৫ ও ৬ ধারায় উল্লিখিত যেকোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে।
(২) উপধারা (১) মোতাবেক কোন নিষেধাজ্ঞাই কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে জারি করা যাবে না, যদি না আদালত ঐরূপ ব্যক্তিকে পূর্বাহ্নে নোটিস প্রদান করে এবং তাহাকে নিষেধাজ্ঞা জারির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর সুযোগ দেয়।
(৩) আদালত স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়েছে বা সংক্ষুব্ধ কোন ব্যক্তির আবেদনক্রমে (১) উপধারা মোতাবেক প্রদত্ত যেকোন আদেশ প্রত্যাহার করতে বা পরিবর্তন করতে পারে।
(৪) যেক্ষেত্রে এইরূপ আবেদনপত্র পাওয়া যায়, সেইক্ষেত্রে আদালত উহার সমক্ষে ব্যক্তিগতভাবে অথবা উকিল মারফত আবেদনকারীকে একটি আগ-শুনানির সুযোগ দিবেন এবং যদি আদালত আবেদনপত্র বা আংশিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেন, তা হলে এইরূপ করার কারণ লিপিবদ্ধ করে রাখবেন।
(৫) যে কেউ এই ধারার (১) উপধারা অনুসারে তার বিরুদ্ধে প্রদত্ত নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েও সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে, তাহা হলে তাকে তিনমাস পর্যন্ত মেয়াদের কারাদন্ডে অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত বর্ধনযোগ্য জরিমানায় অথবা উভয়দন্ডে দন্ডিত করা যাবে।
তবে শর্ত থাকে যে, কোন মহিলাকে কারাদন্ডে দন্ডিত করা যাবে না।
বাল্য বিবাহ
বাল্য বিবাহ বুলিলে সাধাৰণতে ভাৰতবৰ্ষৰ কিছুমান সমাজত সম্পাদন হোৱা এনে বিবাহ, য'ত এগৰাকী নাবালিকাক (সাধাৰণতে ১৫ বছৰৰ তলৰ) এজন প্ৰাপ্তবয়ষ্ক পুৰুষলৈ বিয়া দিয়া হয়। বাল্য বিবাহৰ দ্বিতীয়টো ৰূপ হৈছে শিশুৰ ভৱিষ্যতৰ বিবাহ মাক-দেউতাকে ঠিক কৰি থয়; বিবাহ উপযোগী বয়স নোহোৱালৈকে ল'ৰা-ছোৱালীৰ মাজত দেখা দেখি নহয়। আইনগতভবে ল'ৰাৰ বিবাহযোগ্য বয়স হৈছে ২১ বছৰ আৰু ছোৱালীৰ ১৮ বছৰ।
যদি কোনো এটা পক্ষ কম বয়সত বিবাহ-পাশত আবদ্ধ হয়, তেনেহ'লে সেই বিবাহ অবৈধ/বাতিল ঘোষণা কৰিবলৈ কোৱা হয়।
বাল্য বিবাহৰ প্ৰভাৱসমুহ
- কম বয়সত বিয়া হোৱা ছোৱালীয়ে অপৈনত বয়সত যৌনকাৰ্য্য আৰু শিশুৰ জন্ম দিয়াৰ ফলত এইচ, আই, ভি আৰু প্ৰসূতিজনিত ফিষ্টুলাকে ধৰি স্বাস্থ্যজনিত সমস্যাত আক্ৰান্ত হয়।
- মৰ্য্যদা, ক্ষমতা আৰু পৰিপক্কতাৰ অভাৱত কম বয়সীয়া ছোৱালীবোৰ ঘৰুৱা হিংসা, যৌন নিৰ্যাতন আৰু সামাজিক বিচ্ছিন্নতাৰ চিকাৰ হয়।
- কম বয়সত বিয়া হোৱাৰ ফলত ছোৱালীবোৰ শিক্ষা আৰু কৰ্মসংস্থাপনৰ পৰা বঞ্চিত হয়, যি দৰিদ্ৰতা বৃদ্ধিত ইন্ধন যোগায়।
- বাল্য বিবাহ, লিংগ-বৈষম্য, ৰোগ আৰু দৰিদ্ৰতাৰ পৰিচক্ৰ গঢ়ি তোলে।
- শাৰীৰিকভাৱে অপৰিপক্ক বয়সত ছোৱালী বিয়া হোৱাৰ ফলত প্ৰসূতিৰ মৃত্যু আৰু শিশুৰ মৃত্যুৰ হাৰ সৰ্বাধিক হৈছে।
আগতীয়া/ বাল্যবিবাহৰ কাৰণ আৰু ল'ব লগা পদক্ষেপ
- দৰিদ্ৰতা
- ছোৱালীৰ শিক্ষা কম হোৱা।
- কন্যা সন্তানক নিম্ন মৰ্য্যদা দিয়া আৰু তেওঁলোকক আৰ্থিক বোজা হিচাবে গণ্য কৰা।
- সামাজিক ৰীতি-নীতি আৰু পৰম্পৰা।
চৰকাৰ আৰু স্বেচ্ছাসেৱী সংগঠনসমূহে লোৱা পদক্ষেপসমুহ
- বাল্য বিবাহৰ বিৰুদ্ধে আইন প্ৰয়োগ।
- কন্যা সন্তানৰ শিক্ষা বৃদ্ধি।
- ক্ষতিকাৰক সাংস্কৃতিক নিয়ম-নীতি সলনি কৰা।
- সমূহীয়া কাৰ্য্যসূচীৰ পৃষ্ঠপোষকতা কৰা।
- সৰ্বোচ্চ বৈদেশিক সাহাৰ্য্য।
- কম বয়সীয়া মহিলাসকললৈ আৰু অধিক সুবিধা আগবঢ়োৱা।
- কাৰ্য্যকiৰীতা নিৰূপণৰ বাবে মূল্যায়ন কৰ্মসূচী।
চৰকাৰী পদক্ষেপ
- বাল্য বিবাহ প্ৰতিৰোধ আইন।
- বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধ কৰাৰ প্ৰচেষ্টা হিচাবে ৰাজস্থান, গুজৰাট, মহাৰাষ্ট্ৰ, কৰ্ণাটক আৰু হিমাচল প্ৰদেশত বিবাহক বৈধতা প্ৰদান কৰাৰ বাবে সকলো বিবাহৰ পঞ্জীয়ন বাধ্যতামূলক কৰে। "শিশুৰ বাবে ৰাষ্ট্ৰীয় কৰ্ম আঁচনি, ২০০৫"- (ভাৰতৰ মহিলা আৰু শিশু বিকাশৰ দ্বাৰা প্ৰকাশিত)ত ২০১০ চনৰ ভিতৰত বাল্য বিবাহ সম্পূৰ্ণ নিৰ্মূলকৰণৰ লক্ষ্য নিৰ্দ্ধাৰণ কৰা হয়।
� নলN��6 � �োৰীগৰাকীক পুলিচ থানাত ধৰ্ষণ কৰাৰ অপৰাধত অভিযুক্ত পুলিচক খালাচ দিয়াৰ বিৰুদ্ধে ১৯৭৯-১৯৮০ত ব্যাপক প্ৰতিবাদ গঢ়ি উঠিছিল। ৰাষ্ট্ৰীয় স্তৰৰ সংবাদ মাধ্যমত এই প্ৰতিবাদসমূহৰ বাতৰি বিস্তৃতভাৱে প্ৰকাশ পাইছিল। জবানবন্দী আইন (Evidence Act), ফৌজদাৰী আইন(Criminal Procedure Code) আৰু ভাৰতীয় দণ্ডবিধি আইন (Indian Penal Code) সংশোধন কৰি হাজোতৰ ধৰ্ষণ বিষয়টো সংযোজন ঘটাবলৈ চৰকাৰ বাধ্য হৈছিল। কন্যা সন্তান হত্যা, লিংগ-বৈষম্য, মহিলাৰ স্বাস্থ্য আৰু সাক্ষৰতাৰ দৰে বিষয়ত নাৰী কৰ্মীসকল ঐক্যবদ্ধ হৈছিল।
যিহেতু ভাৰতবৰ্ষত সাধাৰণতে মহিলাৰ ওপৰত চলা হিংসাৰ লগত মাদকদ্ৰব্য যুক্ত হৈ থাকে, সেয়ে বহুবোৰ নাৰী সংগঠনে (অন্ধ্ৰ প্ৰদেশ, হিমাচল প্ৰদেশ, হাৰিয়ানা, উৰিষ্যা, মধ্য প্ৰদেশ আৰু অন্যান্য ৰাজ্যত) মাদক দ্ৰব্য বিৰোধী আন্দোলন গঢ়ি তোলে। আনপিনে শ্বৰীয়ত আইনৰ অধীনত মৌলবাদী নেতাসকলে নাৰীৰ অধিকাৰ সম্পৰ্কে আগবঢ়োৱা ব্যাখ্যাৰ ওপৰত বহুতো মুছলমান মহিলাই প্ৰশ্ন উত্থাপন কৰিছে। তিনি তালাক ব্যৱস্থাক সমালোচনা কৰিছে।
১৯৯০ৰ দশকত কিছুমান বিদেশী সংস্থাই অৰ্থ সাহাৰ্য্য আগবঢ়োৱাৰ ফলত নাৰী সম্পৰ্কীয় নতুন নতুন স্বেচ্ছাসেৱী সংগঠন গঢ় লৈ উঠে। আত্ম-সহায়ক গোট আৰু স্ব-নিয়োজিত নাৰী সংস্থা (SEWA)ৰ দৰে স্বেচ্ছাসেৱী সংস্থাসমূহে ভাৰতত নাৰীৰ অধিকাৰ সম্পৰ্কত গুৰুত্বপূৰ্ণ ভূমিকা পালন কৰিছে। বহু মহিলা স্থানীয় আন্দোলনৰ নেত্ৰী হিচাবে প্ৰতিষ্ঠিত হৈছে। উদাহৰণস্বৰূপে নৰ্মদা বচাওঁ আন্দোলনৰ নেত্ৰী মেধা পাটকৰ।
ভাৰত চৰকাৰে ২০০১ বৰ্ষক নাৰী সৱলীকৰণ বৰ্ষ হিচাবে ঘোষণা কৰে। নাৰী সৱলীকৰণৰ ৰাষ্ট্ৰীয় নীতি ২০০১ চনত গৃহীত হ্য়।
উত্স: আইএনডিজি দল।
বাল্য বিবাহ: একটি অন্ধকার অধ্যায়
'.. .. এইসব আমি তোকেই দেবো, তোকে দেবো, তোর ছেলেবেলা তোর কাছ থেকে চেয়ে নেবো.. ..' বাল্য বিবাহের কথা আসলেই মৌসুমী ভৌমিকের গানের এই লাইনটি খুব মনে পড়ে। বাল্য বিবাহ কীভাবে নারীর শৈশব-কৈশোর আর স্বপ্নময়তার দিনগুলোকে কেড়ে নেয়, কী অমানবিক মাপজোক করে ঠিক করে দেয় তার চোখের দৃষ্টিসীমানা, গভীর কালো এক পর্দা টেনে দেয় মনের আকাশটাতে, আর সব মিলিয়ে বিষয়টিকে যখন সামগ্রিক রাষ্ট্র আর সামাজিকতার প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করা হয়, তখন বিষয়টি দাঁড়ায় এক জাতীয় সমস্যা হয়ে, যার প্রতিকারে প্রয়োজন আশু পদক্ষেপ। যতোই সময় যাচ্ছে, বাঙলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বাল্যবিবাহ অত্যন্ত ভয়াবহ একটি সমস্যা হিসেবে দেখা দিচ্ছে। সমস্যার নখর এখন এতোটাই খামছে ধরেছে যে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মতে, বাঙলাদেশে অজ্ঞানতা ও কুসংস্কারের কারণে যে কয়টি ক্ষতের সৃষ্টি হচ্ছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো বাল্য বিবাহ। বাল্য বিবাহের পরিণতিতে শুধু শিশু, অল্পবয়সী নারী বা তার পরিবারই আক্রান্ত হয় না, এতে দেশ হয় অপুষ্টি ও দুর্বল ভবিষ্যত প্রজন্মের উত্তরাধিকারী। দেশের উন্নয়নের জন্য যেখানে বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে, সেখানে বাল্য বিয়ে ও এর পরিণতি সংক্রান্ত বিষয়ে নিস্পৃহ দৃষ্টিভঙ্গি কোনো সচেতন নাগরিকের কাম্য হতে পারে না। এ বিষয়টিকেই ভাবনার প্রেক্ষণবিন্দুতে রেখে এবারের মূল ফিচারটি যৌথভাবে তৈরি করেছেন মেরীনা চৌধুরী ও গোলাম রসূল মারুফ।
একটি দৃশ্যপট, অতঃপর.. ..
মিঠাপুকুর উপজেলার রহম আলীর ছয় ছেলেমেয়ের মধ্যে সবার বড়ো শেফালী, তার বয়স ১০ বছর। এখনো বিয়ের ব্যবস্থা করতে পারেননি বলে গ্রামের মাতবর ডেকে দু মাসের মধ্যে মেয়ের বিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। এ নিয়ে রহম আলী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তখন উপায়ন্তর না দেখে ২৫ বছর বয়সী বিপত্মিক পাত্র নাছিরের সঙ্গে বিয়ের ব্যবস্থা করেন। নাছির যেহেতু গ্রামের অবস্থাসম্পন্ন গৃহস্ত, তাই পাত্র হিসেবে তাকে বেছে নেয়ার আগে রহম আলী একবারও ভাবলো না বয়স কিংবা বিয়ের জন্য শেফালীর শারীরিকভাবে প্রস্তুত হয়ে ওঠা। মূলত সমাজও এক্ষেত্রে প্রভাবক হয়েছে, সমাজের নানাস্থানে এরকম বাল্যবিয়ের দৃশ্য চোখে পড়ে, কোনোটা উঠে আসে গণমাধ্যমের পাতায়, আবার কোনোটা হারিয়ে যায়, হাজারো কোলাহলে হারিয়ে যায় বালিকা বধূর কান্না, কখনো বা মৃত্যুর আগের শেষ আর্ত-চিৎকারটিও।
বাল্যবিবাহের ইতিহাস
সেই কবে কোন যুগে বাল্য বিবাহের শুরু হয়েছে তার কোনো সুনির্দিষ্ট ইতিহাস না পাওয়া গেলেও আদি যুগের গোত্র ও পরবর্তীকালে নানাবিধ প্রথা নিঃসৃত ধারণা এ বাল্যবিয়ের ধারণা দেয় এবং এর বিস্তৃতি ঘটে সমাজ-সংসারে। ষোড়শ শতকের অষ্টম দশকেও সমগ্র উপমহাদেশে বাল্য বিবাহের প্রচলন ছিলো বলে ইউরোপীয় পরিব্রাজকদের বর্ণনায় প্রকাশ পায়। আবুল ফজলের 'আইন-ই-আকবরী'তে তৎকালীন সমাজের বাল্য বিবাহ প্রথার প্রমাণ পাওয়া যায়। অষ্টাদশ শতাব্দীতে বাল্যবিবাহ সম্বন্ধে স্ক্রাফটনের মন্তব্য, "এই উপমহাদেশের ছেলেমেয়েদের শিশুকালে বিয়ে দেয়া হতো। ১২ বছর বয়সে একজন রমনীর কোলে একটি সন্তান- এটা ছিলো সাধারণ দৃশ্য"। সে যুগে ৬-৭ বছর বয়সের পর অবিবাহিত নারী ঘরে থাকা মানেই অসম্মানজনক একটি বিষয়। অবিবাহিত নারীর বাবা-মা সমাজের সকলের চোখে ছিলো নিন্দনীয়। এমনকি সামাজিক ও ধর্মীয়ভাবেও সেই পরিবারের সঙ্গে সমাজ সম্পর্ক ছেদ করে সম্পূর্ণভাবে তাকে একঘরে করে রাখা হতো, সামাজিকভাবে যা ছিলো অত্যন্ত কঠোর ও অপমানজনক। উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় থেকে তৎকালীন প্রাজ্ঞ ও বোদ্ধাজনেরা বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে তীব্র সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলেন। রাজা রামমোহন রায় ও ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে একটি গতিশীল সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেন। কিন্তু প্রায় এক শতাব্দীকাল অতিক্রম হলেও আমরা আজো বাল্য বিবাহের বদ্ধ শিকল থেকে কতোটুকু মুক্ত হতে পেরেছি?
বাল্যবিবাহ: বাঙলাদেশ প্রেক্ষিত
বেসরকারি সংস্থা ম্যাস লাইন মিডিয়ার এক জরিপে ২০০৭ সালের হিসেবে জানা যায়, সারা দেশে মোট ২০৩টি বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১১২ জন শিশু বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। কিন্তু আশ্চর্য বিষয় হলো এর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে মাত্র ৭টি এবং এ ৭টি বাল্য বিবাহই বন্ধ করা হয়েছে। পরের চিত্রগুলো আরো হতাশাব্যঞ্জক। জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের ওয়ার্ল্ড চিলড্রেনের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাঙলাদেশের ৬৪ শতাংশ নারীর বিয়ে হয়ে যায় ১৮ বছর হবার আগেই, অন্যদিকে ১৫ থেকে ১৯ বছরেই অন্তঃসত্ত্বা কিংবা মা হয় এক-তৃতীয়াংশ। অন্যদিকে বাঙলাদেশে জাতীয় মহিলা আইনজীবী পরিষদের এক রিপোর্টে জানা যায়, সারা দেশে প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ কিশোর-কিশোরী রয়েছে, যার শতকরা ১৩ দশমিক ৭ ভাগ মেয়েশিশু। এর মধ্যে ৪৭ ভাগ মেয়ে শিশুর বিয়ে ১৯ বছরের আগেই হয়ে যায়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে ২০ বছর বা তদূর্ধ্বো নারীদের তুলনায় ১৮ বছরের নিচের প্রসূতিদের মৃত্যুর সম্ভাবনা প্রায় ২-৫ গুণ বেশি। অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলে বাল্য বিয়ের হার সবচেয়ে বেশি। এর প্রধান কারণ হিসেবে দারিদ্র্যতাকেই চিহ্নিত করেছেন সমাজবিজ্ঞানী ও আইনজ্ঞগণ। তাঁরা মনে করেন, দারিদ্র্যতা যেহেতু মানুষের সকল মৌলিক চাহিদাগুলোকে কারারুদ্ধ করে ফেলে, সেহেতু মানুষ তখন প্রয়োজনের কাছে সকল আইনকে জলাঞ্জলি দেয়। তাছাড়া শিক্ষার অভাবও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাঙলাদেশের এমন অনেক স্থান আছে যেখানে এখনো শিক্ষার আলো পৌঁছায়নি। এতেও বাল্যবিবাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বাল্য বিবাহের দৃশ্য সবচেয়ে ভয়াবহভাবে ধরা পড়ে উত্তরাঞ্চলের রংপুর জেলায়। এখনো সেখানে পাঁচ বছরের বালিকাদের সঙ্গে সত্তর বছরের বৃদ্ধের বিয়ের ঘটনা ঘটে। অথচ এ রংপুর জেলার পায়রাবন্দ গ্রামেই জন্ম নিয়েছিলেন নারীমুক্তি আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া। যদিও বাঙলাদেশের সরকার বিয়ের ক্ষেত্রে নারীদের বয়স ১৮ বছর এবং পুরুষের বয়স ২১ বছর ঠিক করে দিয়েছে- তবুও এখানে নানা কারণে প্রতিনিয়ত বাল্য বিবাহের শিকার হচ্ছে নারীরা।
বাল্যবিবাহ রোধে আইন
১৯২৯ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন অনুসারে বাল্যবিবাহ বলতে বোঝায়, বাল্যকাল বা নাবালক বয়সে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বিয়ে। এছাড়া বর-কণে উভয়েরই বা একজনের বয়স বিয়ের দ্বারা নির্ধারিত বয়সের চেয়ে কম বয়সে বিয়ে হলে তা আইনত বাল্যবিবাহ বলে চিহ্নিত হবে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় অধিকাংশ স্থানেই বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনের কোনো যথাযথ প্রয়োগ নেই। বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে তিন ধরণের বিয়ে অপরাধ বলে ধরা হয়েছে; এক, প্রাপ্ত বয়স্কের সঙ্গে অপ্রাপ্ত বয়স্কের বিবাহ; দুই, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেমেয়ের বিয়ে; তিন, অপ্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র-পাত্রীর অভিবাবক কর্তৃক বিবাহ নির্ধারণ বা বিয়েতে সম্মতি দান। এ আইনে স্পষ্ট করে বলা আছে, বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলের বয়স ২১ এবং মেয়ের বয়স ১৮ হওয়া বাঞ্ছনীয়। এ আইন অমান্য করলে একমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা এক হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় বিধানই হতে পারে।
অন্যান্য সমস্যা
বাঙলাদেশে জন্মহার হ্রাসকরণের ক্ষেত্রে প্রধান দুটি অন্তরায় হলো বাল্যবিবাহ ও অল্প বয়সে সন্তান ধারণ। অল্প বয়সে সন্তান ধারণের ঘটনা এশিয়াতেই সবচেয়ে বেশি ঘটে। বাল্যবিয়েতে প্রথম শিকার হয় শিশু, দ্বিতীয় শিকার নারী এবং তৃতীয় শিকার সমাজ। এর সুদূর প্রসারী ফল প্রকারান্তরে সমগ্র জাতির উপর গিয়ে পড়ে। বাল্যবিয়ে নিরোধে জন্মনিবন্ধন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করে বিয়ের সময় জন্ম সনদ প্রদর্শন অতি বাধ্যতামূলক আবশ্যক। বাল্য বিবাহে যে সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে তার মধ্যে নিরাপদ মাতৃত্ব অন্যতম। নিরাপদ মাতৃত্বের জন্য সঠিক বয়সকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া নারীর সঠিক সামাজিকীকরণের মাধ্যমে বেড়ে ওঠা এবং পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে নারীর সিধান্ত গ্রহণের অধিকার অর্জন, বৈষম্যমূলক রাষ্ট্রীয় প্রথা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বাল্যবিবাহ রোধ করতে হবে।
তবুও প্রত্যাশার বাতিঘর
বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে নারী নিজেই সচেতন হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক খবরে জানা যায় বাবা-মা জোর করে অপ্রাপ্ত বয়স্ক, সদ্য উচ্চ মাধ্যমিক পাস এক নারীকে নিষিদ্ধ সংগঠন শিবিরের কর্মীর সঙ্গে বিয়ে দিতে চাইলে মেয়ে নিজেই তার প্রতিবাদ করে। সনদ অনুযায়ী তার বয়স ১৭ বছর এবং এ বক্তব্য উল্লেখ করে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির মাধ্যমে বাবা-মাকে উকিল নোটিশ পাঠায় সেই নারী। এ পদক্ষেপ সত্যিকার অর্থেই প্রশংসনীয়। নারী নিজেই যখন বাল্য বিবাহ সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠেছে, তখন নিশ্চিত নারী মুক্তি লাভ করবে এ ঘৃণ্য অভিশাপ থেকে। আর যখন পুরো সমাজ, রাষ্ট্র এ বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠবে, তখন বাল্য বিবাহের আড়ষ্টতা থেকে নারী বেরিয়ে আসবে- এ প্রত্যাশায় আমাদের সবাইকে একসঙ্গে বাল্যবিবাহ রোধে কাজ করতে হবে।
মডেল: ঊষশী, অনন্যা, হিমু
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, আগস্ট ১২, ২০০৯
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নাবালিকা ধর্ষণ | Sangbad24.net
- May 9, 2014 - নাবালিকাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল কলকাতার নারকেলডাঙায়। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে এক যুবককে। ধৃত যুবকের নাম উত্তম কুমার পাল। বৃহস্পতিবার নারকেলডাঙা থানায় এই অভিযোগ জানিয়েছে, নাবালিকার পরিবার। জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকাকে বেশ কিছুদিন ধরে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে এলাকার ...
- Images for নাবালিকা ধর্ষণReport images
নাবালিকা ধর্ষণ, ১০ দিন বাদে এফআইআর দায়ের | বাংলায় সর্বাধিক ...
- নাবালিকা ধর্ষণ, ১০ দিন বাদে এফআইআর দায়ের. 06.07.2014 | 12:11 অপরাহ্ন | মন্তব্য বন্ধ. rape-final. নয়াদিল্লি: দিল্লি পুলিশ বরাবরই দাবি করেছে যে তারা মহিলাদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধের এফআইআর সঙ্গে সঙ্গে দায়ের করে নেন, কিন্তু সত্যিটা একটু অন্য৷ জ্যোতিনগর থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করতে গেলে থানার পুলিশ উল্টে কিশোরীকে ...
নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার বাবা - Aajkaal
- Jun 14, 2014 - আবু রাইহান: হলদিয়া, ১৩ জুন– হলদিয়াতে নিজের নাবালিকা মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার বাবা৷ মেয়েকে খেজুর পেড়ে দেওয়ার নাম করে ফাঁকা মাঠে নিয়ে গিয়ে সেখানেই ধর্ষণ করে বাবা৷ বাড়িতে ফিরে মেয়ে অসুস্হ হয়ে পড়ে৷ পরে মাকে সমস্ত ঘটনা বলে দেয়৷ এর পর হলদিয়ার ভবানীপুর থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের ...
নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক ধর্ষণ নয় | মূল প্রতিবেদন ...
- 9 hours ago - নিউজ ডেস্কআরটিএনএনঢাকা: নাবালিকাকে স্ত্রীর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপনের জন্য ধর্ষণের মামলা খারিজ করে দিল দিল্লি আদালত।গত বছর কলকাতা থেকে ২২ বছরের সুমন দে-র সঙ্গে প.
মুক্তচিন্তা: নাবালিকা ধর্ষণ
- Dec 29, 2012 - তেরো বছর বয়স। মেয়ে ইস্কুল থেকে বাড়ি ফিরতে চাইছে না। কাঁদছে। কেন কাঁদছে? বাড়িতে দু'বছর হল প্রতিদিন তাকে ধর্ষণ করছে তার বাবা, দাদা আর দুই কাকা। এ তো সবে সেদিন ঘটলো, কেরালায়। গতবছর ওই রাজ্যেই ধরা পড়েছিল এক লোক, যে তার ষোলো বছরের কন্যাকে নিজে তো ধর্ষণ করেইছে, একশ লোককে দিয়েও ধর্ষণ করিয়েছে। এমন কোনও দেশ নেই ...
নাবালিকা ধর্ষণ, ১০ দিন বাদে এফআইআর দায়ের | Hello Today
- hello-today.com/নাবালিকা-ধর্ষণ-১০-দিন-বাদ
- অভিযোগ এর পরই রাকেশ ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর অভিযুক্ত রাকেশের দাদা সোনু কিশোরীকে হুমকিও দেয়। অভিযোগ এরপর ওই কিশোরী জ্যোতি নগর থানায় গেলে পুলিশ তাকে বোঝাপড়া করে নিতে বলে। কিন্তু শেষমেশ বরিষ্ঠ আধিকারিকরা ঘটনার কথা জানলে গত শুক্রবার এই ঘটনার মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ রাকেশ ও তার দাদা সোনুর খোঁজ শুরু করেছে ...
নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা ধর্ষণ নয়, দিল্লি আদালতে ...
- নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা ধর্ষণ নয়, দিল্লি আদালতে মামলা খারিজ. Saturday, September 6, 2014 || Time : 12:10:37 AM. indian suprime court. নাবালিকাকে স্ত্রীর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক স্থাপন ধর্ষণ নয় দিল্লি আদালত এই মামলা খারিজ করে দিল । গত বছর কলকাতা থেকে ২২ বছরের সুমন দে-র সঙ্গে পালিয়ে আসে ১৫ বছরের এক কিশোরি। সুমন দে-র ...
নাবালিকা ধর্ষণ, ১০ দিন বাদে এফআইআর দায়ের - Sharshongbad
- ' নাবালিকা ধর্ষণ, ১০ দিন বাদে এফআইআর দায়ের'— দিল্লি পুলিশ বরাবরই দাবি করেছে যে তারা মহিলাদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধের এফআইআর সঙ্গে সঙ্গে দায়ের করে নেন, কিন্তু সত্যিটা একটু অন্য। জ্যোতিনগর থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করতে গেলে থানার পুলিশ উল্টে কিশোরীকে বোঝাপড়া করে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে শুরু করে। কিন্তু উপর মহলে এই ঘটনার ...
পরিচ্ছন্ন ভাবমুর্তির প্রতীক দিদির চবি কালিমালিপ্ত আজ,তিনিও সাগদা কান্ডে প্রশ্ন ও সন্দেহোর মুখে।যদিও জনগণ এখনও বিশ্বাস করে যে দুর্নীতিতে দিদির হাত থাকতেই পারে না।একে একে কুশী লব সবাই কাঠগড়ায়,এই জনআস্থা কতদিন অটুট থাকে তাই দেখার।
নবজাগরণের কোনো প্রয়োজন আর নেই বাংলার।গো বলয়ের রাজনীতির মত বাঙালির রাজনীতিও এবার সমানে দুর্নীতিগ্রস্ত,সমান সমান ধর্মোন্মাদী, সাম্প্রদাঠিক এক কাঠি ওপরে এবং পুরুষতান্ত্রিকও বটে।নারী সত্তার অধিকারের দাবিতে সাম্প্রদায়িক ভোটব্যান্ক রাজনীতির প্রয়োজনে বাংলাদেশ থেকে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনও এি বাংলায় অবান্ছিত।সারা বাংলা যে কখন কমদুনি হয়ে গেল নবজাগরণের উত্তরাধিকার ঝেড়ে ফেলার মতই বাঙালি আদৌ টের পায়নি।
নবতম সংযোজনঃদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশই নিষিদ্ধ করে দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। গতকাল এবং আজ কোনও সংবাদমাধ্যমকেই ঢুকতে দেওয়া হয়নি বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। মনে করা হচ্ছে, নিগৃহীতা ছাত্রীর অভিযোগ নিতে দেরি করায় যেভাবে প্রকাশ্যে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে উপাচার্যকে, তার জেরেই এই সিদ্ধান্ত। এদিকে সংবাদমাধ্যমকে ঢুকতে না দেওয়া এবং নিগৃহীতা ছাত্রীর অভিযোগের বিষয়ে সময়ে তদন্ত না করার প্রতিবাদে আজ উপাচার্যকে ডেপুটেশন দেন আর্টস ফ্যাকাল্টির ছাত্রছাত্রীরা।
পরে দোষীদের শাস্তির দাবিতে ডেপুটেশন দেন যাদবপুর থানাতেও। এই ঘটনায় আচার্যের হস্তক্ষেপ দাবি করে চিঠি দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে। আজই প্রথম নিগৃহীতা ওই ছাত্রীর অভিযোগ নিয়ে বৈঠকে বসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিসি কমিটি।
সারদাকাণ্ডে এবার নাম জড়াল মেয়র শোভন চ্যাটার্জির।অন্যদিকে সারদাকাণ্ডে জড়িত প্রভাবশালীদের নাগাল পেতে এবার পঞ্চম এফ আই আর দায়ের করতে চলেছে সিবিআই। ওই এফআইআরের সুবাদেই সারদাকাণ্ডে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এবার জেরাও করতে চান সিবিআই কর্তারা। ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারকে ওই এফ আই আরে সরাসরি অভিযুক্ত করা হবে বলে খবর। সুদীপ্ত সেন, কুণাল ঘোষদেরও ফের হেফাজতে নিতে চায় সিবিআই। সেই লক্ষ্যে নতুন ওই এফআইআর কাজে লাগানো হবে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে দিল্লিতে বৈঠকে করেন সিবিআই কর্তারা। সেখানেই তদন্তের পরবর্তী ধাপ হিসাবে নতুন এফআইআর দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
দিদির অতি প্রিয় মেয়রের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে কুড়ি কোটি টাকা তছরূপের অভিযোগ এনেছেন কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ওই কুড়ি কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের তরফে। যদিও সবটাই বেসরকারি একটি সংস্থার আড়ালে। ওই সংস্থাকেই কলকাতা জুড়ে হোর্ডিং লাগানোর অনুমতি দিয়েছিল কলকাতা পুরসভা। তার বদলে পুরসভাকে কুড়ি কোটি টাকা দেয় বেসরকারি সংস্থাটি। প্রকাশ উপাধ্যায়ের অভিযোগ, পুরসভার অডিট রিপোর্টে সেই টাকার কোনও উল্লেখই নেই। ওই সংস্থার নাম করে আসলে সারদা গোষ্ঠীই টাকা দিয়েছিল বলে দাবি করেছেন তিনি। এ সংক্রান্ত যাবতীয় নথিপত্র নিয়ে আজ ইডি এবং সিবিআই দফতরে যান কংগ্রেস কাউন্সিলর। সেখানে তিনি সব নথি জমা দিয়েছেন।
প্রয়াত ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্তা পল্টু দাসের বাড়িতে তল্লাসি চালিয়ে রহস্যজনক লকারের চাবি পেল সিবিআই। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের কলেজ স্ট্রিট ব্রাঞ্চে লকারটি রয়েছে। আগামী সপ্তাহে ওই লকারটি খুলবে সিবিআই। গোয়েন্দাদের সন্দেহ, দেবব্রত সরকারের সঙ্গে সারদা গোষ্ঠী এবং সেবির যোগাযোগ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি পাওয়া যেতে পারে ওই লকারে। সারদাকাণ্ডে জড়িত প্রভাবশালীদের নাগাল পেতে শীঘ্রই পঞ্চম এফআইআর দায়ের করতে চলেছে সিবিআই। সেই এফআইআরে ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারকে সরাসরি অভিযুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সুদীপ্ত সেন, কুণাল ঘোষদেরও ফের হেফাজতে নিতে চায় সিবিআই।
আজ শিক্ষক দিবসে নয়া চমক দিলেন নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর রাশভারী খোলস ছেড়ে কখনও হয়ে উঠলেন শিক্ষক। আবার আড্ডার মেজাজে তিনিই যেন গল্পদাদু। এমনকী বনে গেলেন কড়া অভিভাবকও। মুছে গেল পড়ুয়া আর শিক্ষকের আড়াল। মোদী স্যারের বেনজির ক্লাসের সাক্ষী থাকল গোটা দেশ।
কিন্তু কলকাতায়,মোদীবিরোধী শিক্ষা ব্যবস্থার একাংশে যে পচন ধরেছে তা কার্যত স্বীকার করে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নেতাজি ইনডোরে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, কিছু পচা আম অবশ্যই রয়েছে। কিন্তু, সেগুলি দ্রুত সরিয়ে ফেলতে হবে। যাতে শিক্ষা ব্যবস্থায় পচন না ধরে।
কখনও ছাত্র সংসদ নির্বাচন। কখনও ছাত্র ভর্তিকে কেন্দ্র করে বিরোধ। পালাবদলের পর থেকে বারবার রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাঙ্গামার অভিযোগ উঠেছে শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে। যদিও, মুখ্যমন্ত্রীর মতে, এটাই রাজ্যে শিক্ষার সার্বিক ছবি নয়।
তবে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা যে ঘটে, তা অস্বীকার করেননি মুখ্যমন্ত্রী। শিক্ষায় পচনশীলতা রোখার ডাক দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, শিক্ষকদের সম্মান রক্ষার কথা বলে দলের ছাত্রসংগঠনকেও প্রচ্ছন্ন বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
সামনে হাজির শয়ে শয়ে পড়ুয়া-শিক্ষক। পিছনের পর্দাতেও ক্ষণে ক্ষণে হাজির ভিনরাজ্যের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এমনই পরিবেশে রাজধানীর মানেকশ স্টেডিয়ামে শুক্রবার শিক্ষক দিবসের ভাষণ শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। শুরুতেই আক্ষেপ, শিক্ষক দিবসের মর্যাদাই ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। ভাল ছাত্ররাও আর শিক্ষকতায় আসছে না।
কিন্তু কেন এমন হল?পড়ুয়াদের বেড়ে ওঠার পথেই কি রয়ে গেছে গলদ? হালকা কথায় ছোটদের মনের খবরই যেন নিতে চাইলেন তিনি। বললেন,ইন্টারনেটেই সব নয়। পড়তে হবে, আবার খেলতেও হবে মাঠেঘাটে।
নীরস কথা আর কবে কার মন কেড়েছে! কাজেই রীতিমতো গল্পে মেতে উঠলেন প্রধানমন্ত্রী। ভিনরাজ্যের পড়ুয়ারাও তখন সেই গল্পদাদুর আসরের উত্সাহী শ্রোতা। জানা গেল, ছোটবেলায় বিলক্ষণ দুষ্টু ছিলেন মোদী। ক্লাসে মনিটর হওয়ার ভোটেও কখনও লড়েননি। তবে স্বপ্ন দেখতেন বরাবর। এদিন স্বপ্ন দেখার অভ্যাস অটুট রাখার পরামর্শ দিলেন মোদী স্যার। জানালেন, দেশের সব স্কুলে ছাত্রীদের শৌচাগার তৈরি করতে চান তিনি। আরও চান,সমাজে আজ যাঁরা ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, তাঁরাই একজন করে পড়ুয়ার শিক্ষক হয়ে উঠুন। শিক্ষাক্ষেত্রে নিজের লক্ষ্যও এদিন সাফ মেলে ধরলেন মোদী স্যার।
ইম্ফলের এক পড়ুয়া জানাল, প্রধানমন্ত্রী হতে চাই। মোদীর জবাব, তাহলে ২০২৮-এর ভোটের জন্য বরং তৈরি হও। দেশের সেবা করতে বড় কিছু করার দরকার নেই। মোদী স্যারের দাওয়াই, বাড়ির বিদ্যুত্ বিল বাঁচিয়েও তা করা যায়। মিঠেকড়া আলাপে তিনি তো অনায়াসেই মন কাড়লেন পড়ুয়া-শিক্ষকদের। কিন্তু কেমন হওয়া জরুরি পড়ুয়া-শিক্ষক সম্পর্ক? তারও দিশা এদিন দিয়ে গেলেন মোদী স্যার।
জিবাংলার খবরঃ
সারদাকাণ্ডে জড়িত প্রভাবশালীদের নাগাল পেতে এবার পঞ্চম এফ আই আর দায়ের করতে চলেছে সিবিআই। ওই এফআইআরের সুবাদেই সারদাকাণ্ডে জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিদের এবার জেরাও করতে চান সিবিআই কর্তারা। ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকারকে ওই এফ আই আরে সরাসরি অভিযুক্ত করা হবে বলে খবর। সুদীপ্ত সেন, কুণাল ঘোষদেরও ফের হেফাজতে নিতে চায় সিবিআই। সেই লক্ষ্যে নতুন ওই এফআইআর কাজে লাগানো হবে বলে জানা গেছে। সম্প্রতি তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে দিল্লিতে বৈঠকে করেন সিবিআই কর্তারা। সেখানেই তদন্তের পরবর্তী ধাপ হিসাবে নতুন এফআইআর দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ক দিন আগে মধ্যমগ্রামে সারদা গোষ্ঠীর একটি শপিং মলের হদিশ পেল ইডি। রতিকান্ত বসুকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্রেই সারদার এই সম্পত্তির হদিশ মেলে। ওই সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করবে ইডি। তারা-সহ চারটি চ্যানেল কেনা নিয়ে রতিকান্ত বসুর সঙ্গে সুদীপ্ত সেনের মউ সই হয়। তবে ওই মউ ছাড়াও দুজনের মধ্যে নগদ টাকার লেনদেন হয়েছিল বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। কুণাল ঘোষসহ এক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ওই লেনদেনে মধ্যস্থতা করেছিলেন বলেও তদন্তকারীদের দাবি। রতিকান্ত বসু অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন, সুদীপ্ত সেনই তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। সুদীপ্তর দেওয়া ৬ কোটির চেক বাউন্স করেছিল বলেও তাঁর দাবি।
কোটি কোটি টাকা সম্পত্তি লুঠ হয়ে যাওয়া নিয়ে আক্ষেপ করেছিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন। সেই লুঠের প্রমাণই পাওয়া যায় বীরভূমে সারদার কোপাই রিসর্টে। দেখা যায়, কীভাবে মাত্র ২ বছর আগে তৈরি হওয়া বিলাসবহুল রিসর্ট আজ একেবারে ভগ্নস্তূপে পরিণত।
ছোট ছোট মাটির ঘরগুলো সব যেন একেকটা পোড়ো বাড়ি। মাত্র দুবছর আগে তৈরি হওয়া সারদা গোষ্ঠীর কোপাই রিসর্টের এখন এটাই চেহারা। ২০১২ সালের বীরভূমের পারুয়ের সাত্তোর এলাকায় রিসর্টটির উদ্বোধন করেছিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন। সারদা কেলেঙ্কারি সামনে আসার পরই তা বন্ধ হয়ে যায়। কটেজ ছেড়ে চলে যান সেখানকার কর্মীরা। একে একে লুঠ হয়ে যায় কটেজের বহু মূল্যবান জিনিস। উনিশে অগাস্ট সিউড়ি আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে সেই সম্মত্তি লুঠের কথাটাই জানিয়েছিলেন সুদীপ্ত সেন।
সুদীপ্ত সেনের এই অভিযোগ জানানোর দিনই কোপাই রিসর্ট ঘুরে দেখ আসেন সিবিআইয়ের একটি তদন্তকারী দল। মূল গেটের কাঁটাতার কেটে দুষ্কৃতীরা যে নিয়মিত ভেতরে ঢোকে তাও দেখতে পান ওই গোয়েন্দারা। দেখতে পান কিভাবে মাত্র দুবছরে খণ্ডহরে পরিণত হয়েছে সারদার কোপাই রিসর্ট।
বঙ্গোপসাগর ঘিরে জাপানী বিনিয়োগের প্রস্তাব আসছে
আজ ঢাকা- টোকিও ৩৫০ উদ্যোক্তার বৈঠক
এম শাহজাহান ॥ বঙ্গোপসাগরকে ঘিরে পুরো বাংলাদেশকে জাপানী বিনিয়োগের আওতায় আনতে 'বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট' করার প্রস্তাব করা হবে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রস্তাব দিতে পারে জাপান সরকার। তবে জাপান সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব করা হলে তাতে সমর্থন জানাবে বাংলাদেশী উদ্যোক্তারা। জাপানের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগেও আগ্রহী বাংলাদেশী বিনিয়োগকারীরা। এ লক্ষ্যে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আজ শনিবার বাংলাদেশ ও জাপানের প্রায় ৩৫০ জন উদ্যোক্তা একসঙ্গে একই বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন।
উদ্যোক্তাদের মধ্যে এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছে জাপানের মিতসুবিসি, টয়োটা, নিপ্পন এক্সপ্রেস, আইটোচু কর্পোরেশন, মারোবিনি কর্পোরেশন, সুমিটোমো কর্পোরেশন, টোকিও ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন ও টেইজিন ফ্রন্টেইয়ার কোম্পানি লিমিটেডের উর্ধতন কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে বাংলাদেশেরও বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠীর ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এই বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। মূলত দেশের বিদ্যুত ও জ্বালানি, ফ্ল্যাড ম্যানেজমেন্ট, ফার্মাসিউটিক্যালস, আইটি, অটোমোবাইল, ইলেক্ট্রনিক্স এবং যমুনা রেলসেতু নির্মাণ খাতে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।
জানা গেছে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের ঢাকা সফরকালে তাঁর দেশের বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য আকারে বাড়ানোর আহ্বান জানাবে বাংলাদেশ। শিনজো আবের এই সফরে সরকারী-বেসরকারী উভয় পর্যায় থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনার নানান দিক তুলে ধরা হবে। জাপানী বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ইতোমধ্যে সরকার বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকালে নতুন করে আরও কিছু ঘোষণা আসতে পারে।
ইতোমধ্যে দেশে ৫টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) স্থাপনের কাজ চলছে। এর মধ্যে পছন্দসই যে কোন একটি বেছে নিতে পারবেন জাপানী বিনিয়োগকারীরা। জাপানের বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ইতোমধ্যে এমন নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশে দুই দিনের সফরে আজ ঢাকায় আসছেন শিনজো আবে। জাপানের একটি উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল তার সঙ্গে আসছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি জাপান-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ফোরামে যোগ দেবেন আবে ও তার সফরসঙ্গী ব্যবসায়ীরা। এছাড়া বিনিয়োগ বোর্ড, এফবিসিসিআই ও জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেটরো) এর আয়োজক। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে এবং বাংলাদেশে জাপানী বিনিয়োগ আকর্ষণ ওই আলোচনার মূল উদ্দেশ্য।
এ প্রসঙ্গে এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দীন আহমেদ জনকণ্ঠকে বলেন, পুরো বাংলাদেশকে জাপানী বিনিয়োগের আওতায় আনতে 'বে অব বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিয়াল গ্রোথ বেল্ট' করার পরিকল্পনা রয়েছে জাপানের। তাদের পক্ষ থেকে এবার এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসার সম্ভাবনা রয়েছে। জাপান সরকার ও ওই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের এই ইতিবাচব মনোভাব বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে আরও বেগমান করবে। তিনি বলেন, জাপান সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাব আসলে আমরা তাকে স্বাগত জানাব। পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে জাপানে রফতানি আরও বাড়াতে হবে।
জানা গেছে, জাপানী উদ্যোক্তারা এদেশে বিনিয়োগ করতে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি প্রস্তাব দেবে বাংলাদেশকে। ওই প্রস্তাবগুলো পাওয়ার পর বাংলাদেশের দাবিগুলো উপস্থাপন করা হবে। তবে সূত্রগুলো বলছে, জাপানী বিনিয়োগাকারীরা এদেশে টয়োটা ও মিতসুবিসি গাড়ি ও সনি ও নিপ্পন টেলিভিশনের মতো আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের পণ্য উৎপাদনে আগ্রহী। এজন্য 'জাপানী ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোন' নামে একটি আলাদা শিল্পাঞ্চল করার মতো জমি বরাদ্দের দাবি রয়েছে তাঁদের। আর ওই জোনটি হবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আশপাশে।
এ প্রসঙ্গে কাজী আকরাম উদ্দীন আহমেদ আরও বলেন, জাপানী উদ্যোক্তারা এদেশে বড় ধরনের বিনিয়োগ করতে চায়। তাঁরা তাদের দেশের ইন্ডাস্ট্রিগুলো বাংলাদেশে রি-লোকেট করতে আগ্রহী। জাপান আমাদের বড় সহযোগী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়াতে বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমার নিয়ে বিসিআইএম গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরই জাপানী তৎপরতা অনেক বেড়ে গেছে। তাঁরা বাংলাদেশকে পাশে পেতে চায়। এ কারণে ওই দেশের বড় ধরনের বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাকেরও বড় বাজার হবে জাপান। সেখানে ডিউটি ও কোটা ফ্রিতে পোশাক বিক্রির দাবি রয়েছে বাংলাদেশের।
সূত্র মতে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে পাশে পেতে আগ্রহ দেখাচ্ছে অর্থনৈতিক শক্তি জাপান। দেশটি পুবের দেশগুলোর অর্থনৈতিক জোট আসিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করতে চায় বাংলাদেশকে। ভারতের পর কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশকে পাশে পাওয়ার ক্ষেত্রে শত্রুমনোভাবাপন্ন দুই দেশ চীন ও জাপানের সাম্প্রতিক আগ্রহের পেছনে বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং বঙ্গোপসাগরের বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিষয়টিই কাজ করছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আসিয়ানে বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে সম্প্রতি জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) বাংলাদেশ প্রধান মি. মিকিও হাতেদা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবর্নর ড. আতিউর রহমানের সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই সময় জাইকাপ্রধান বলেছেন, বাংলাদেশ চাইলে আসিয়ানের রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরকেপ)-এর সদস্য হতে পারে।
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য অংশীদার জাপান ॥ বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য অংশীদার জাপান। জাপান প্রতিবছর বাংলাদেশে ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর জাপানে মাত্র ৭৫০ মিলিয়ন মূল্যমানের পণ্য রফতানি করা হয়। দুই দেশের মোট বাণিজ্য মাত্র ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। বাণিজ্যিক ভারসাম্য জাপানের অনুকূলে রয়েছে। তবে বাংলাদেশে জাপানী বিনিয়োগ ও জাপানী শিল্প-কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে এই অসমতা দূর করা সম্ভব। জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড এ্যাসোসিয়েশন (জেট্রো) জাপানের জন্য বাংলাদেশকে এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহৎ লাভজনক ব্যবসায়িক স্থান মনে করে। এ কারণে শতকরা ৮৭ ভাগ জাপানী ব্যবসায়ী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। এছাড়া দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন বিশেষত মহাসড়ক, পাতাল রেল, মনোরেল, রেলপথ, বিদ্যুত কেন্দ্র ও সেরা মানের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে জাপান ইতোমধ্যে এগিয়ে এসেছে। এছাড়া ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত একক দেশ হিসেবে জাপান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী। অনুদান, সাহায্য, কারিগরি সহায়তা ও সহজ শর্তে ঋণের ধারাবাহিক প্রবাহ মিলে গত বছর পর্যন্ত এর মোট পারিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার।
এছাড়া চলতি বছরের গত ২৫-২৮ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান সফর করেন। সে সময় আগামী ৪-৫ বছরে প্রায় ৪৮ হাজার কোটি টাকার ঋণ সহায়তার ঘোষণা দেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। গত মাসে কয়েকটি প্রকল্পে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ সহায়তা দেয়ার বিষয়ে জাপানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, যার মধ্যে কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে দেশের সবচেয়ে বড় ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প রয়েছে। রাজধানীতে মেট্রোরেল প্রকল্পেও অর্থায়ন করছে জাপান। এছাড়া গত অর্থবছরে জাপানের প্রতিশ্রুত অর্থের পরিমাণ ছিল ১১৮ কোটি ডলার। জাপান একই অর্থবছরে ছাড় করে প্রায় ৩৪ কোটি ডলার। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, জাইকার কর্মকর্তারা চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও মিরসরাইসহ কয়েকটি এসইজেড পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে জাপান যথাসম্ভব দ্রুত তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে। ওই দুটিসহ মংলা, বঙ্গবন্ধু সেতুর পাশে এবং মৌলভীবাজারে এসইজেড স্থাপিত হচ্ছে।
জাপানী উদ্যোক্তারা যারা আসছেন ॥ জাপানী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকা সফরে আসছেন টোকিও মিতসুবিসি কোম্পানির প্রধান প্রতিনিধি ঢাকা-মি. ইসোকি টিকিউচি, মি. কোজি টাকাইয়ানগিং-ডিরেক্টর আইটোচু কর্পোরেশন, মি. সিজিকি টেক কর্পোরেট এ্যাডভাইজার মারোবিনি কর্পোরেশন, মি. সুচিরো মোরাকামি জেনারেল ম্যানেজার মিতসুবিসি, মি. টোমিহিরো মাইডা এমডি নিপ্পন এক্সপ্রেস, মি. হিডিকি সিনোকি ডিরেক্টর টোকিও ইঞ্জিনিয়ারিং, মি. আকিরা মাটসুই জেনারেল ম্যানেজার টয়োটা প্রমুখ।
আইসিস জঙ্গী অবস্থানে ॥ বিমান হামলা চালাবে ব্রিটেন
সন্ত্রাসীদের মুক্তিপণ দেয়ায় ইউরোপীয় মিত্রদের সমালোচনা করলেন ক্যামেরন
ব্রিটেন ইরাক ও সিরিয়ায় বিমান হামলা চালানোর পরিকল্পনা নিয়ে ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক এ্যান্ড সিরিয়ার (আইসিস) বিরুদ্ধে লড়াই জোরদার করছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে জরুরী আলোচনা করেন এবং ওই সন্ত্রাসী দলকে মুক্তিপণ দিয়েছিল-এমন ইউরোপীয় মিত্রদের সমালোচনা করেন। খবর টেলিগ্রাফ অনলাইনের।
ব্রিটেন কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইরাক ও সিরিয়ায় আইসিসকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করতে পারে। এর আগে ক্যামেরন সামরিক হস্তক্ষেপের এক সম্ভাব্য সময়সীমা নির্দেশ করেন। তিনি ইসলামী সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে তাঁর দেশের অস্ত্রভান্ডারে যা কিছুই রয়েছে সেটিই কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। রক্ষণশীল দলীয় পার্লামেন্ট সদস্যরা (এমপি) আইসিসের বিরুদ্ধে কোন সামরিক হস্তক্ষেপ সমর্থন করবেন কিনা, প্রধানমন্ত্রী তা ভেবে দেখছেন। এ বিষয়ে এমপিদের অবস্থান কী, সরকারদলীয় হুইপরা তা জানতে চাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রী আইসিস জিহাদীদের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ন্যাটো সদস্যদের এক কোয়ালিশন গঠনের প্রচেষ্টায় বারাক ওবামার সঙ্গে জরুরী বৈঠক করেন। এর আগে জিহাদীরা দুই আমেরিকান জিম্মিকে হত্যা করে এবং ব্রিটিশ বন্দী ডেভিড হেইনজের জীবননাশের হুমকি দেয়।
তবে এমনও উদ্বেগ রয়েছে যে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা উত্তর ইরাকে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে বিমান চালানোর বাইরে কোন কিছু করতে অনিচ্ছুক। তিনি এরই মধ্যে এরূপ হামলা শুরু করেছেন। হেইনজের পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক সূত্র আইটিভি নিউজকে বলা হয় যে, সামরিক পদক্ষেপ হেইনজের নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে তার পরিবার উদ্বিগ্ন। ক্যামেরন ও ওবামা আইসিস সঙ্কট নিয়ে ঘনিষ্ঠ আলোচনার জন্য গাড়িতে করে ওয়েলসের একটি প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শনে যাওয়ার সময়কে কাজে লাগান। সরকারী সূত্রে বলা হয়, ৪০ মিনিটের ওই আলোচনায় আইসিসের হুমকি মোকাবেলায় তাদের উভয়েরই দৃঢ় সঙ্কল্প প্রকাশ পায়। তবে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযানে ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীকে নিয়োজিত করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কোন অনুরোধ জানাননি। ওবামা যদিও ক্যামেরন বিষয়ে এক স্পষ্ট মন্তব্য করেন। ক্যামেরন বলেন, আমি অবশ্যই কোন কিছুই নাকচ করে দিচ্ছি না এবং আমি সব সময়েই ব্রিটিশ স্বার্থে কাজ করব। এক তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো ক্যামেরন এ কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, সিরিয়ায় আইসিসকে লক্ষ্য করে ব্রিটিশ বাহিনীর বোমাবর্ষণের পথে কোনো আইনগত বাধা নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইরাকে যে কোন সামরিক হস্তক্ষেপের অন্যতম শর্ত হবে সে দেশের প্রধানমন্ত্রীর নূরী আল মালিকিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর সেখানে এক স্থিতিশীল সরকার গঠন করা। ইরাকীরা এখন নতুন সরকার গঠনের সর্বশেষ তারিখ স্থির করেছে ১১ সেপ্টেম্বর। এর অর্থ হলো ওই সময়ই সামরিক সমর্থনের জন্য ব্রিটেন ও আমেরিকার প্রতি অনুরোধ জানানো হতে পারে। ক্যামেরন বলেন, সর্বোপরি আমাদের যা দরকার তা হলো কাজ করতে সমর্থ, স্থিতিশীল ও সবারই প্রতিনিধিত্ব করেÑএমন এক সরকার প্রয়োজন। এটিই ইরাকের মূল সমস্যা। প্রথমে দরকার সে দেশের সব জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে এমন এক সরকার। বস্তুত এ ইস্যুটি যেন সামনে এসে ওঠেছে। এর অন্যতম কারণ হলো আমাদের সেই ধরনের কোন ইরাকী সরকার নেই। ব্রিটিশ সরকার আরও বলেছে যে, ক্যামেরন ও ওবামা ইরাকী ও কুর্দীবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দানে সহায়তা করার মিশন হাতে নিতে সম্মত হয়েছেন। যুক্তরাজ্য ওই যোদ্ধাদের সাজসরঞ্জাম দিয়ে যাবে এবং অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করতে পারে। বিভিন্ন সূত্রে এ কথা বলা হয়। পার্লামেন্ট সূত্রে জোর দিয়ে বলা হয় যে, এমপিদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টার অর্থ এই নয় যে, বিমান হামলা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে গেছে। তবে ওই সব সূত্রে স্বীকার করা হয় যে, বিমান হামলার পক্ষে রক্ষণশীল এমপিদের মনোভাব ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। যে কোন বিমান হামলার ক্ষেত্রে সরকার সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপ নিয়ে গত বছর সৃষ্ট বিপর্যয়ের পুনরাবৃত্তি এড়াতে চাইবে। তখন রক্ষণশীল দলীয় এমপিদের বিদ্রোহে সরকার হতবুদ্ধিকর অবস্থায় পড়েছিল।
এমপিরা বুধবার আইসিসের হুমকি নিয়ে কমন্স সভায় বিতর্কে লিপ্ত হবেন। সাবেক এ্যাটর্নি জেনারেল ডোমিনিক গ্রিয়েভ বলেন, রক্ষণশীল দলীয় এমপিদের সংখ্যাগরিষ্ঠই সামরিক ব্যবস্থা সমর্থন করেন। তিনি বলেন, আমার ধারণা হলো আমার সহকর্মীরা এ কথা মনে করেন যে, ইরাক ও সিরিয়ায় যা ঘটছে, তা মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। এটি এমন কোন কিছুরই শামিল, যা গণহত্যা থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
জাওয়াহিরির ঘোষণায় উদ্বিগ্ন নয় যুক্তরাষ্ট্র
ভারতে শাখা খোলার যে ঘোষণা আল কায়েদা নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরি বুধবার দিয়েছেন তাতে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন নয় বলে জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে না আল কায়েদার কিছু করার মতো সামর্থ্য রয়েছে। নেটওয়ার্কটি দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলে সক্রিয় আছে। খবর পিটিআই অনলাইনের।
মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র ক্যাটিলিন হেডেন বলেছেন, আলকায়দার শাখা খোলার ঘোষণায় আমরা মনে করি না তাদের আক্রমণ করার সক্ষমতা আছে। ভারতীয় উপমহাদেশে আল কায়দার শাখা খোলার খবর আমরা দেখেছি। আল কায়দাকে ধ্বংস করার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র এখনও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যার লক্ষ্য আল কায়দা যেন কখনও আমেরিকার জনগণের জন্য হুমকি হয়ে না ওঠে তা নিশ্চিত করা। তিনি আরও জানিয়েছেন, আলকায়দার প্রভাব খর্বে ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাস দমন বিষয়ক পারস্পরিক অংশীদারিত্ব আরও জোরদার করেছে।
এর ফলে সন্ত্রাসবাদীদের এখন ওই অঞ্চলে নিরাপদ স্বর্গ গড়া ও প্রতিবন্ধকতাহীনভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ২০০৮ সালের মুম্বাইতে জঙ্গী হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি মাসে আরও পরের দিকে ভারতের নয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন। তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে তার আলোচনায় এই বিষয়টি প্রাধান্য পাবে বলে বিশ্লেষকরা আশা করছেন।
জাওয়াহিরি তার ৫৫ মিনিটের ভিডিও বার্তায় বলেন, আল কায়েদার নতুন শাখা এ অঞ্চলের মুসলিম 'অবিচার ও আগ্রাসন' থেকে উদ্ধার করবে। আলকায়েদা বর্তমানে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে সক্রিয় আছে। এটি এখন ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারেও ফ্রন্ট খোলার ঘোষণা দিল। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মেরি হার্ফ বলেছেন, আল কায়দার মূল নেতৃত্ব ধ্বংস হয়ে গেছে। তারা এখন পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের উপজাতি এলাকায় কোন রকমে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে। আল কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা নেতা ছিলেন ওসামা বিন লাদেন। বিন লাদেন ২০১১ সালে পাকিস্তানে এক মার্কিন ঝটিকা অভিযানে নিহত হন। তালেবান এক সময় আফগানিস্তানে আলকায়েদাকে আশ্রয় দিয়েছিল। বিন লাদেনের সহযোগী জাওয়াহিরি এখন সংগঠনটির প্রধান। আল কায়েদা বা তাদের সংশ্লিষ্ট যে কোন গ্রুপের হামলা চেষ্টার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সব সময়ই সতর্ক আছে বলে পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র জানিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment