পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু ক্ষমতা বেদখল বামেরা এখন সারদায় নিমজ্জিত মমতার পরিবর্তনকে বঙ্গোপসাগরে জলাজন্জলি দেওয়ার তালে আছেন এবং বাংলায় গৌরিক পতাকার বাড়বাড়ন্ত তৃণমুলের সর্বনাশ হলেও বামেরা পৌষমাসের আশায় আছেন৷
ফ্যাসিস্ট নাজি সাম্রাজ্যবাদী করপোরেট মুক্তবাজারি বিদেশ নীতির প্রশংসায় হামিদ সাহেবের মন্তব্যে তাই অনেক কিন্তু কিন্তু,থেকে যাচ্চে কিন্তু৷
বাবরি ধ্বংস যেমন য়েরশলুম মন্দির দখলের ড্রেস রিহার্সল, মোদী সরকারের নূতন বৈদেশিক সম্পর্ক বিন্যাস কিন্তু আসলে মধ্যযুগের শত বর্ষের ইসলাম বিরুদ্ধে ক্রুসেডেরই নামান্তর৷
পলাশ বিশ্বাস
আজকালের প্রতিবেদন: ঢাকা, ১৩ সেপ্টেম্বর– মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন৷ রাষ্ট্রপুঞ্জে নিযুক্ত বংলাদেশের স্হায়ী প্রতিনিধি আবুলকালাম আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, দুই প্রধানমন্ত্রী সাধারণ পরিষদে ওই দিন ভাষণ দেওয়ার পরই বৈঠকে বসবেন৷ মোদি সাধারণ পরিষদের ওই অধিবেশনের ষষ্ঠ বক্তা, হাসিনা অষ্টম৷ নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক হবে তাঁর৷ তবে সম্প্রতি ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বাংলাদেশ সফর করেছেন৷ ঢাকায় শেখ হাসিনার সঙ্গে সুষমা স্বরাজের বৈঠকও হয়েছে৷ দিল্লিতে তিন দিন আগে সুষমা জানিয়েছেন, ভূমিসীমা নির্ধারণ চুক্তি ও তিস্তার জলবণ্টন চুক্তি রূপায়ণে ভারত আম্তরিক চেষ্টা চালাচ্ছে৷ ভূমিসীমা নির্ধারণ (ছিটমহল বিনিময়) চুক্তির খসড়া এখন রয়েছে ভারতের রাজ্যসভার সিলে’ কমিটিতে৷ ভূমিসীমা চুক্তি ও তিস্তা চুক্তি নিয়ে মোদি সরকার রাজনৈতিক ঐকমত্যের চেষ্টা চালাচ্ছে৷ সুষমার এ কথায় বাংলাদেশ আশাবাদী৷ নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের অধিবেশনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠকে হাসিনা এই দুই চুক্তির কথা তুলতে পারেন৷ ওদিকে দিল্লির খবর, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও যাচ্ছেন নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিতে৷ রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই অধিবেশনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে শরিফের বৈঠকের জন্য পাকিস্তান জোর চেষ্টা করছে৷ গত মাসে দিল্লির পাক দূতাবাসে কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের ডেকে পাক হাইকমিশনার আবদুল বাসিত বৈঠক করায় ভারত দু’দেশের বিদেশ সচিবদের বৈঠক বাতিল করে দেয়৷ এতে দু’দেশের সম্পর্কে ফের যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, তা মেরামত করার চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান৷ গতকাল দিল্লিতে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ বলেছিলেন, দু’দেশের কূটনৈতিকতায় পূর্ণচ্ছেদ বলে কিছু নেই৷ এতে আশার আলো দেখছে পাকিস্তান৷
|
বিদেশনীতিতে মোদী সরকারকে শংসাপত্র দিলেন উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারি৷ তাঁর মতে, বিদেশনীতি রূপায়ণে সঠিক পদক্ষেপই নিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার৷তাঁর মতে আন্ত্রজাতিক সম্পর্কের পুনর্বিন্যাসে এশিয়ার প্রতিপত্তি বাড়বে৷শনিবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে বিদেশনীতির ধারাবাহিকতা প্রসঙ্গে হামিদ স্যার এই মন্তব্য করেছেন৷
হক কথা৷
ডলার আধিপাত্য শেষ হতে চলেছে,এমনটা বুঝতে নাগপুরের সঙ্ঘ হেডকোয়ার্টারের ভূল হওয়ার কথা নয়৷সম্পর্কের পুনর্বিন্যাসে ভারতের পদক্ষেপ নিঃসন্দেহ স্বাগত৷এশিয়া ও বিশেষকরে ভারতীয় উপমহাদেশগুলির সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো হলেই সবচেয়ে ভালো৷নিঃসন্দেহ আমেরিকা ও ডলারের পতন হওয়ার পর ভারতের বৈস্বিক কার্যকরি বিদেশনীতি থাকতেি হবে৷বিদেশনীতির ধারাবাহিকতার প্রসঙ্গ তুলে কিন্তু হামিদ সার নিজেকেই কন্ট্রাডিক্ট করলেন৷
মুক্তবাজারি বৈদেশিক নীতি এখন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কে সামাবদ্ধ৷জাপানের ভারতে অর্থলগ্নি বা ভারতে চিনের অর্থলগ্নি বোঝায় না সার্বিক উন্নতি কতটা হল৷উপমহাদেশের মানুষ যদি সীমান্তের কাঁডাতারে আটকেই থাকে এবং সহযোগিতা সন্ত্রাসির বিরুদ্ধ মার্কিন যুদ্ধ গৃহযুদ্ধর হের ফের হয়,স্ট্র্যাটেজিক শয্যাসঙ্গী বদলে, যেমন ইজরাইলের জন্য প্যালাস্টাইন আন্দোলনে সমর্থন প্রত্যাহার বা মার্কিন আধিপাত্যর বদলে জাপানি আধিপাত্য অঙ্গীকার,তাহলে শেষ দশা পাকিস্তান,বাংলাদেশ,শ্রীলন্কা বা নেপালের চাইতে আলাদা কিছু হবে,আশা করার কোনো কারণ আপাততঃ দেখছি না৷
হামিদ সাহেব বিদ্বান মানুষ কিন্তু তিনি বামপন্থী এবং বলাই বাহুল্য বামপন্থীদের চিন্তা ভাবনা শাসক শ্রেণীর স্বার্থের বাইরে অন্য খাতে চলার আজ অবধি কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় নি৷
পশ্চিম বঙ্গে ক্ষমতা ধরে রাখতে বামপন্থীরা দীর্ঘকাল কংগ্রেসের লেজুড় হয়ে বাম আন্দোলন,মতাদর্শ ওদায়বদ্ধতার দফা রফা করেছেন৷
সেই পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু ক্ষমতা বেদখল বামেরা এখন সারদায় নিমজ্জিত মমতার পরিবর্তনকে বঙ্গোপসাগরে জলাজন্জলি দেওয়ার তালে আছেন এবং বাংলায় গৌরিক পতাকার বাড়বাড়ন্ত তৃণমুলের সর্বনাশ হলেও বামেরা পৌষমাসের আশায় আছেন৷
ফ্যাসিস্ট নাজি সাম্রাজ্যবাদী করপোরেট মুক্তবাজারি বিদেশ নীতির প্রশংসায় হামিদ সাহেবের মন্তব্যে তাই অনেক কিন্তু কিন্তু,থেকে যাচ্চে কিন্তু৷
সারদার টাকায় জামাতকে মদদের ইস্যু কিন্তু আস্তে আস্তে ভারতব্যাপি পদ্মপ্রলয়ে সারদায় সর্বস্বান্ত মানুষদের টাকা ফেরত দেওয়া বা এই কেলেন্কারিতে শামিল দোষীদের শাস্তির চেয়ে বড় রাজনেতিক প্রশ্ন হয়ে উঠছে এপার ওপার বাংলায়৷
মনে রাখা দরকার বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার ধর্মীয অন্ধ জাতি সত্তার বিস্পাযণ মার্ফতে ক্ষমতায় এবং একই সঙ্গে মোদী ও দিদি,দু পক্ষই কিন্তু পিপিপি গুজরাতি মডলের দায়বদ্ধ অনুসারি,দুজনকে ক্ষমতায় আনতে বাজারের লগ্নি অনেক বেশি৷
মমতা ব্যানার্জিও মুসলমান ভোটের রাজনীতি করছেন মুসলিমদের জন্য কিছু না করেইএক্কেবারে বামপন্থী রাস্তায়৷
অন্যদিকে সারা দেশে সঙ্ঘ পরিবার সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের জন্য ইতিহাস ভূগোল সবই ওলট পালট করছে যেমন অছুত বাল্মীকিদের ব্রাহ্মণ আখ্যা দিয়ে তাঁদের অস্পৃশ্যতার দায় চাপানো হচ্ছে মুসলিম আক্রমণকারিদের উপর,যেমন ভূসংস্কার.জাতি উন্মুলন ও নারী অধিকারের মূল এজেন্ডা যে হরিচাঁদ ঠাকুর নিয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদকে খারিজ করে মতুয়া আন্দোলন শুরু করেচছিলেন নবজাগরণ সময়ে,তাঁকে হিন্দু মহাসভার উত্তরসুরিরা মৈষিলী ব্রাহ্মণ ও পরমব্রহ্ম সাজিয়ে নমশুদ্রদের ব্রাহ্মণ করে ছেড়েছে৷
নমো ঋত্বিকরা ত পৈতা ধারণ করছেন হিন্দু মহাসভার বৈদিকী মতে বহুকাল আগে৷
বাল্মীকিদের অস্পৃশ্যতা ও মুসলিম আগ্রাসনের তত্বের মতোই তাই সারদা জামাত যোগাযোগও সারা দেশে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধ মার্কিন যুদ্ধকে ত্বরান্বিত করার কান্ড কারখানা হতে চলেছে,যার পুঁজি মুসলমানদের সন্ত্রাসীই নয় শুধু,জাতি প্রথা,সামাজিক অন্যায়,বর্ণ বৈষম্য ঔর অন্যায় অসাম্যের জন্য দায়ী করে জঘন্যতম মুসলিম বিদ্বেষ তৈরি করা৷
বাবরি ধ্বংস যেমন য়েরশলুম মন্দির দখলের ড্রেস রিহার্সল, মোদী সরকারের নূতন বৈদেশিক সম্পর্ক বিন্যাস কিন্তু আসলে মধ্যযুগের শত বর্ষের ইসলাম বিরুদ্ধে ক্রুসেডেরই নামান্তর৷
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির বলেছেন, জামায়াতে ইসলামীকে অর্থ যোগানে ইমরানের ভূমিকা আমরা জানি না। তবে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের নির্বাচিত একটি সরকারকে উৎখাতে সিমির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইমরানের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। আর পশ্চিমবঙ্গে একজন সিনিয়র মন্ত্রী ইমরানকে রক্ষার জন্য কিভাবে বলছেন, ইমরান মুসলিম বলেই তাঁকে টার্গেট করা হচ্ছে-প্রশ্ন করেন শাহরিয়ার কবির।
ইতিমধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে আবার পশ্চিমা সা্রাজ্যবাদী তেল যুদ্ধের বিভীষিকা ঘনিয়ে আসছে।গাজা গণসংহারে ইজরাইলকে নিঃশব্দ সমর্থন করার পর এি প্রসঙ্গে ভারতের অবস্থান বলাই বাহুল্য।
অথচ পোপ ফ্রান্সিস তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাঁধতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে নিহত এক লাখের বেশি ইতালীয় সৈন্যের প্রতি সম্মান দেখাতে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শনকালে শনিবার তিনি এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন। খবর এএফপি ও টেলিগ্রাফ অনলাইনের।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরুর ১শ’ বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার ইতালির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় রেদিপুগলিয়া সমাধি ক্ষেত্র পরিদর্শন করেন পোপ।
উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে বলেন, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাঁধতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন। এখন যারা ‘সন্ত্রাসের যড়যন্ত্র’ করছে তাদের নিন্দা করে তিনি বলেন, এরা ধ্বংস ও মৃত্যুর বীজ বপন করছে।
পোপ বলেন, ‘আজকের পৃথিবীতে স্বার্থ, ভূরাজনৈতিক কৌশল, অর্থ ও ক্ষমতার লিপ্সা ও অস্ত্র বাণিজ্য চলছে। আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ আটকাতে না পারার ব্যর্থতার পরও আমরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা থেকে নিরাপদ মনে করতে পারছি না। কেউ খাদ্যের জন্য, কেউ অপরাধের জন্য, কেউ গণহত্যার জন্য অথবা কেউ ধ্বংসের জন্য এই যুদ্ধ বাঁধাবে ’ তিনি বলেন, ‘মানবতা আজ কাঁদছে এবং এটা কাঁদারই সময়’।
যুদ্ধকে একটি উন্মাদনা হিসাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুদ্ধ অযৌক্তিক, এটি কেবল ধ্বংসই ডেকে আনে। ধ্বংসের মধ্য দিয়েই যুদ্ধের পরিধি বাড়তে থাকে। যদিও যুদ্ধের আসল কারণ লোভ, অসহিষ্ণুতা ও ক্ষমতার লোভ... তবে অনেক সময় আদর্শবাদকেও এর একটি কারণ হিসাবে দেখান হয়।
পোপ এমন সময় সমাধি ক্ষেত্রগুলো পরিদর্শন করলেন যখন ইরাক, সিরিয়া ও ইউক্রেনে সংঘাত অব্যাহত আছে।
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য,গত মাসে পোপ ইরাকের ইসলামিক স্টেটের ‘অযৌক্তিক আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের শক্তি প্রয়োগ বৈধ হতে পারে বলে মত দেন।
জঙ্গী গ্রুপটির বিরুদ্ধে ইরাক ও সিরিয়ায় হাজার হাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে, যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান। পোপ প্রায়শ ঈশ্বরের নামে যুদ্ধের ধারণার সমালোচনা করে থাকেন।
সেøাভেনিয়ার সীমান্তবর্তী রেদিপুগলিয়ায় ফ্যাসিবাদী আমলে তৈরি হয়েছি ইতালির একটি সামরিক সমাধিক্ষেত্র। সেখানে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে এক লাখের বেশি সৈন্যের সমাধি রয়েছে।
এর আগে পোপ কাছাকাছি আরেকটি যুদ্ধ স্মৃতিসৌধ পরিদর্শন করেন, যেখানে ১৫ হাজার সৈন্যের সমাধি রয়েছে। নিহত সৈন্যরা অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্য অধীন পাঁচটি দেশের থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যোগ দিয়েছিল। যুদ্ধে পরাজিত পক্ষে ছিল অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্য।
পোপের আপন পিতামহ প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ইতালির পক্ষে ১৯১৭ ও ১৮ সালে অংশ নিয়েছিলেন।
জনকন্ঠের রিপোর্টঃপশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদের কাছ থেকে জামায়াতে ইসলামীকে অর্থ যোগান দেয়ার ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এ ঘটনার তদন্তে আগ্রহের কথা জানার পর থেকে মমতা এখন চরম বিব্রত বোধ করছেন। এ কারণে কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার আবিদা ইসলামের সঙ্গে নিজেই বসতে চেয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার কলকাতার টেলিগ্রাফ পত্রিকায় এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
টেলিগ্রাফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় দুই বছর ধরে কলকাতার ডেপুটি হাইকমিশনার তাঁর সাক্ষাত চাইলেও সময় দেননি মুখ্যমন্ত্রী। তবে সারদা কেলেঙ্কারি এবং তৃণমূল নেতা আহমেদ হাসান ইমরানের জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠার পর এ বৈঠকে সম্মতি দিয়েছেন মমতা। সোমবারই তাঁদের সাক্ষাত হতে পারে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
টেলিগ্রাফ উল্লেখ করেছে-নাম প্রকাশ না করে এক কর্মকর্তা বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং তৃণমূলের এক নেতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরিতে জামায়াতে ইসলামীকে অর্থ দেয়ার অভিযোগ তদন্ত চলার ইঙ্গিত দেয়ার পর বিষয়টি নিয়ে চরম অস্বস্তিতে পড়েছেন মমতা। ঢাকা থেকে বিষয়টি তোলার পর ভারত সরকার তা তদন্ত করছে বলে খবর প্রকাশিত হওয়ায় ডেপুটি হাইকমিশনারের কাছে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের মনোভাব জানতে চাইতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশী কয়েকটি সংবাদপত্রে বলা হয়েছে-তৃণমূল সাংসদ আহমেদ হাসান ইমরানের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশিত খবরের বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অবস্থান জানাতে ডেপুটি হাইকমিশনারকে তলব করেছেন মমতা। তবে মুখ্যমন্ত্রীর দফতর ও বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশন সূত্র জানায়, বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার মমতার সাক্ষাত চাওয়ায় তাঁদের এ বৈঠক হচ্ছে।
গত জুলাইয়ে ভারতে দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হয়েছে আবিদা ইসলামের। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ও আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে দিল্লী সফর কেন্দ্র করে আবিদার মেয়াদ দুই মাস বাড়ানো হয়। চলতি মাসের শেষদিকে তিনি ঢাকায় ফিরবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তৃণমূলের কয়েক নেতা জানান, আবিদা ইসলাম আগে মমতার সাক্ষাত চাইলে দুই বছরেও বাংলাদেশী কূটনীতিকের সঙ্গে দেখা করেননি মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকারের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ও স্থলসীমান্ত চুক্তির মতো বিষয়গুলো থাকায় বাংলাদেশী কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠক এড়ানোর চেষ্টা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সই এবং স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলেও তার বিরোধিতা করেন মমতা। কেউ কেউ বলছেন, মমতা এমন সময়ে বাংলাদেশী কূটনীতিকের সঙ্গে বসতে সম্মত হয়েছেন যখন জামায়াতের সঙ্গে তাঁর দলের নেতা ইমরানের সম্পর্ক নিয়ে সীমান্তের উভয় পাশে আলোচনা চলছে।
সম্প্রতি বিজেপির মুখপাত্র সিদ্ধার্থ নাথ সিং এক নির্বাচনী সভায় সাবেক সিমি নেতা ইমরানের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্কের বিষয়টি তুললে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। ভারতে ২০০১ সাল থেকে নিষিদ্ধ স্টুডেন্টস ইসলামিক মুভমেন্ট অব ইন্ডিয়ার (সিমি) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ইমরান বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার সদস্য।
বাংলাদেশ ও ভারতের কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত খবরের বরাত দিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা সিদ্ধার্থ বলেন, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে জ্বালাও-পোড়াওয়ে সারদার টাকা পাঠিয়েছেন ইমরান। এ সব অভিযোগ অস্বীকার করে ভারতীয় টেলিগ্রাফকে ইমরান বলেছেন, ১৯৮৪ সালে আমি সিমি ছেড়েছি এবং জামায়াতের সঙ্গে আমার কিছু করার নেই।
তৃণমূলের দুই প্রভাবশালী নেতা সুব্রত মুখার্জী ও ফিরহাদ হাকিমের মতো অনেক নেতাই ইমরানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নাকচ করছেন। সোমবার অনুষ্ঠানরত উপনির্বাচন ঘিরে ভোটারদের মন ঘোরাতে বিজেপি কৌশল হিসেবে ইমরানের বিরুদ্ধে এ সব অভিযোগ তুলেছে বলে দাবি তাদের।
তৃণমূল ভবনে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ইমরান সন্ত্রাসী নয়। শুধু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে আসায় তাঁকে টার্গেট করা হচ্ছে।
আজকালের প্রতিবেদন: নন্দীগ্রাম আন্দোলনে সোনাচূড়ায় যে-সব বেআইনি জিনিসপত্র কেনা ও ব্যবহার হয়েছিল তাতেও সারদার টাকা ঢুকে থাকতে পারে৷ ওই সময় যে-সব মাওবাদী কর্মী ও তৃণমূল কর্মীরা একযোগে কাজ করেছিলেন, পরবর্তীকালে যে-সব মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন বা জেলে আছেন তাদের সবাইকে অবিলম্বে জেরা করুক সি বি আই৷ অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে৷ শনিবার বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন৷ পাশাপাশি এদিন বামফ্রন্টের বৈঠকে সমস্ত শরিকদল একমত যে যেটুকু তদম্ত হয়েছে তাতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, সারদা ও অন্যান্য চিটফান্ডের সঙ্গে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ওতপ্রোতভাবে জড়িত৷ সি বি আই তদম্তে যেটুকু তথ্য প্রকাশিত তাতেই মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রী, সাংসদ, নেতা-কর্মীদের আচরণ, মুখের চেহারা ও কথাবার্তা বদলে গেছে৷ মানুষের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে সারদা দুর্নীতিতে ডুবে আছে শাসকদল৷ তাই ২২ সেপ্টেম্বর রামলীলা ময়দান থেকে বড়সড় মিছিল, জমায়েত ও সভার ডাক দিয়েছে রাজ্য বামফ্রন্ট৷ বিমান বসু এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, একজন নিজের গায়ে সততার প্রতীক লেবেল লাগিয়ে সারাদিন ধরে অসৎ কাজ করে চলেছেন, মিথ্যে কথা বলে চলেছেন৷ চোর, ডাকাত, গুন্ডা, বদমায়েশরা কপালে লেবেল লাগিয়ে কুকর্ম করে না৷ তেমনি সমাজে যাঁরা প্রকৃত সৎ মানুষ তাঁরা কপালে লেবেল লাগিয়ে কাজ করেন না৷ নীরবে সৎ জীবনযাপন করে থাকেন৷ আদালতের নির্দেশে সি বি আই তদম্তে আজ যখন একের পর এক তথ্য উঠে আসছে, প্রকৃত সত্য মানুষের কাছে স্পষ্ট হচ্ছে তখন ফের কপালে লেবেল লাগিয়ে গলাবাজি শুরু হয়ে গেছে৷ আইন মন্ত্রীর নেতৃত্বে সি বি আই অফিসের সামনে ধর্নার আয়োজন করে ফের মানুষকে বোঝাতে চাইছে তারা কত সৎ! এ জন্য আমরা বামফ্রন্ট মনে করছি রাস্তাই রাস্তা৷ রাস্তায় নেমে আমরাও মানুষের কাছে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরব৷ এদিন সারদা, রাজ্য সরকার, পরিবহণ দপ্তর-সহ সমস্ত বিষয় নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু৷ তিনি বলেন, সারদা ও অন্যান্য চিটফান্ডের কালো টাকার সঙ্গে যে এই শাসকদল আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়ে গেছে তা জলের মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে৷ তৃণমূলের সহসভাপতি, প্রাক্তন আমলা, যিনি এই মুহূর্তে সি বি আই হেফাজতে, তাঁর বাড়িতেই বৈঠক হয়েছে৷ বৈঠকে ছিলেন, দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক, প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মুকুল রায় ও সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন৷ সুদীপ্তের পালানোর ছকও ওখানে বসেই হয়েছিল৷ কোনও সম্পর্ক না থাকলে এমন ঘটবে কেন? তিনি বলেন, সবকিছু দেখে আমার মনে হয়েছে ক্ষমতায় আসার জন্য এবং ক্ষমতায় আসার পর সারদা নামক একটি কামধেনুকে দোহন করেছে এই তৃণমূল কংগ্রেস৷ ফলে, লাখ লাখ আমানতকারী আজ সব হারিয়ে রাস্তায় বসেছেন৷ শুধু কি অর্থ নয়ছয়, বাংলাদেশের একটি শক্তির মাধ্যমে অ্যাম্বুলেন্সে করে বস্তা বস্তা টাকা বিদেশে গেছে৷ এবং তা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসেরই এক সাংসদের মাধ্যমে৷ বিমান বসু বলেন, শোনা যাচ্ছে বাংলাদেশের ওই শক্তির স্বার্থ বজায় রাখতেই শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বৈঠকে না যাওয়ার সিদ্ধাম্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী৷ যেখানে তিস্তা চুক্তি ও ছিটমহলের দীর্ঘ সমস্যার সমাধান হওয়ার কথা ছিল৷ দেশ-বিরোধী শক্তিকে আরও শক্তিমান করতে সারদাকে ব্যবহার করা হয়েছিল৷ এ তো দেশ-বিরোধী ষড়যন্ত্র! এরা তো জনগণের শত্রু৷ সি বি আইয়ের উচিত দেশের স্বার্থে এই তথ্যকে তদম্তের মাধ্যমে আরও সম্প্রসারিত করা৷ স্বাধীন ভারতে চিটফান্ড নিয়ে এত বড় অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারি কখনও হয়নি, যে কেলেঙ্কারির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে তৃণমূল কংগ্রেস৷ এদিন বিমান বসু বলেন, রাত ১২টার পর উত্তরবঙ্গে ডেলো রিসর্টে মুখ্যমন্ত্রী শুধু সুদীপ্ত সেন নন, রোজভ্যালির কর্তার সঙ্গেও বৈঠক করেছেন৷ মুকুল রায় আর কুণাল ঘোষ সেখানে ছিলেন৷ বৈঠক চলে রাত দেড়টা পর্যম্ত৷ কোনও মুখ্যমন্ত্রী এত রাতে কেন বৈঠক করবেন? যাতে কাকপক্ষী টের না পায়! তার মানেই তো ‘ডাল মে কুছ কালা হ্যায়!’ অসৎ কাজ না করলে কেউ এত গোপনীয়তা রক্ষা করে? নিজেকে সততার প্রতীক বলে মুখ্যমন্ত্রী যত সব অসৎ কাজ করে চলেছেন৷ ফলে, রাজ্যে অসৎ কাজ আর মিথ্যে কথা বলার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে৷ এভাবে তো বেশিদিন চলতে পারে না! তাই আমরা রাস্তায় নেমে মানুষকে জানাবার পথ নিয়েছি৷ এদিন বিমান বসু প্রশ্ন তোলেন আদৌ সরকারটা চলছে? দিনের পর দিন ট্যাক্সি চালকরা আন্দোলন করছেন, শহর অচল করে দিচ্ছেন, ধর্মঘট করছেন৷ সরকারের কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েছে এই সমস্যা মেটানোর জন্য? সিঙ্গুরে যে তাপসী মালিকের মৃত্যুকে নিয়ে এত প্রচার করলেন, সেই তাপসীর বাবাও প্রতারিত সারদার কাছে৷ তাঁর ১ লক্ষ টাকা ফেরত পেতে জুতোর সুখতলা ক্ষয়ে গেছে৷ শ্যামল সেন কমিশন এক টাকাও ফেরাতে পারেনি৷ আর মুখ্যমন্ত্রী আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে গল্প শোনাচ্ছেন৷ তদম্তকারী সি বি আইয়ের কাছে আমাদের দাবি, অবিলম্বে শাসকদলের যোগসাজশে এই যে কোটি কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে তার যথাবিহিত সমাধান চাই৷ আমানতকারীদের টাকা ফেরত চাই৷ যারা যারা জড়িত ও টাকা নয়ছয় করেছে তাদের ধরে শাস্তি দিতে হবে৷ দরকারে তাদের সম্পত্তি উদ্ধার করে, বিক্রি করে আমানতকারীদের টাকা মেটাতে হবে৷ তিনি বলেন সি বি আইকে অবিলম্বে কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে৷ আইনমন্ত্রী আইন ভাঙছেন৷ সেটাও বন্ধ করতে হবে৷ এদিন বিমান বসু অন্য এক প্রশ্নে বলেন, নন্দীগ্রামে আন্দোলনের সময় মাওবাদী, চিটফান্ড, অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হয়েছিল৷ সোনাচূড়ায় যে বেআইনি জিনিসপত্র মজুত হয়েছিল ও ব্যবহার হয়েছিল তা সারদার কালো টাকায় কেনা হয়েছিল বলেই মনে হচ্ছে৷ নন্দীগ্রামের বহু আমানতকারী বার বার আবেদন-নিবেদন করেও শ্যামল সেন কমিশনের কাছে টাকা পাননি৷ তিনি বলেন, সি বি আইয়ের কাছে আমাদের আবেদন, যে সমস্ত মাওবাদী নেতা জেলে আছেন, তাদেরও জেরা করা হোক৷ যারা বন্ধু তৃণমূল সরকারের আনুকূল্যে আত্মসমর্পণ করে পুলিসি নিরাপত্তা নিয়ে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাদেরও জেরা করুক সি বি আই৷ সারদার নয়ছয় হওয়া টাকার বেশ কিছু হদিশ মিলবে৷
আজকালের প্রতিবেদন: কলকাতা ও বহরমপুর, ১৩ সেপ্টেম্বর– সারদা-কাণ্ড নিয়ে পথে নামছে কংগ্রেস৷ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার, ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরত, সুষ্ঠুভাবে তদম্তের দাবিতে ১৯ সেপ্টেম্বর শহিদ মিনারে সভা করবে কংগ্রেস৷ দুপুর ১টায় সভা শুরু হবে৷ তার আগে ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে জেলায় জেলায় আন্দোলন, প্রতিবাদ সভা করবে কংগ্রেস৷ শনিবার বহরমপুরে এ কথা জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি৷ তিনি এদিন অভিযোগ করে বলেন, বাংলাদেশের মৌলবাদী সংগঠন জামাত-ই-ইসলামির হাত শক্ত করতেই তৃণমূল সরকার তিস্তা চুক্তির বিরোধিতা করেছে৷ ওই চুক্তি না হওয়ার জন্য জামাতের বড় হাত রয়েছে৷ ছিটমহল বিনিময়েরও বিরোধিতা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বি জে পি রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা এদিন জানিয়েছেন, সারদা-কাণ্ডে জামাতের যোগ নিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছেন তিনি৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে এই ঘটনা নিয়ে তদম্তের আবেদনও করেছেন তিনি৷ এদিকে, বাংলাদেশের জামাত-ই-ইসলামি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও যোগ নেই৷ এক প্রেস বিবৃতিতে ওই সংগঠনের প্রচার সচিব তসনিম আলম বলেছেন, তৃণমূলের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক তো নেই-ই, এমনকি ওই দলের সাংসদ আহমদ হাসান ইমরানের কাছ থেকে টাকা নেওয়ারও প্রশ্ন ওঠে না৷ অন্যদিকে, তৃণমূল সাংসদ আহমদ হাসান ইমরানের সঙ্গে তাদের যোগাযোগের খবর ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন অফ ইন্ডিয়া৷
আজকালের প্রতিবেদন: কেন্দ্রের নতুন বি জে পি সরকার আগুন নিয়ে খেলা করছে৷ রেগা কর্মসূচি সঙ্কোচন করার চেষ্টা হলে দেশে আগুন জ্বলবে৷ তেলিয়ামুড়ার সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি দিলেন সি পি এম পলিটব্যুরো সদস্য মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ গণতন্ত্র ও সমৃদ্ধ ত্রিপুরা গড়ার শক্তি সংহত করা এবং সারা দেশে দলিতদের অধিকার প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম মজবুত করার স্লোগান সামনে রেখে শনিবার শুরু হল ত্রিপুরা তফসিলি জাতি সমন্বয় সমিতির অষ্টম রাজ্য সম্মেলন৷ তেলিয়ামুড়ার চিত্রাঙ্গদা কলাকেন্দ্রে এই সম্মেলনকে সামনে রেখে টাউন হলের সামনে হয় ভিড় উপচে পড়া সমাবেশ৷ সি পি এম পলিটব্যুরো সদস্য মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এই সমাবেশে ‘আচ্ছে দিন’-এর নামে কেন্দ্রের ক্ষমতায় বসা প্রবঞ্চক বি জে পি, সম্রাসবাদীদের সুযোগ এবং রাজ্যভাগের ষড়যন্ত্রকারী আই পি এফ টি-আই এন পি টি সম্পর্কে সতর্ক করেন৷ তুলে ধরেন জনবর্জিত দুর্নীতিগ্রস্ত কংগ্রেস দেশের মানুষের কী সর্বনাশ করেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও দেশের জটিল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সমাবেশে বক্তব্য পেশ করেন তফসিলি জাতি উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী রতন ভৌমিক, সাংসদ ঝর্না দাস, সমবায়মন্ত্রী খগেন্দ্র জমাতিয়া, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিধায়ক সুধন দাস৷ সি পি এম নেতা বিধানসভার মুখ্য সচেতক সমীর দেব সরকার, সুধীর সরকার-সহ বিভাগীয় নেতৃত্ব ছিলেন৷ বড়মুড়া থেকে আঠারমুড়া রাজ্য সম্মেলনে সামনে রেখে গোটা তেলিয়ামুড়া শহর সাজিয়ে তোলা হয়৷ জননেতা বৈদ্যনাথ মজুমদারের নামাঙ্কিত নগরে এদিন দুপুর ১টা থেকেই তেলিয়ামুড়ার বিভিন্ন জায়গার সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা লাল পতাকা, ফ্ল্যাগ ও ব্যানার নিয়ে মিছিল করে এসে পৌঁছতে থাকে তেলিয়ামুড়া টাউন হল প্রাঙ্গণে৷ এখানে তফসিলি জাতি সংগঠনের রাজ্যনেতা বিধুভূষণ মালাকারকে সভাপতি করে শুরু হয় প্রকাশ্য সমাবেশের কাজ৷ সমাবেশে প্রধান বক্তার ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষকে শোষণ করে পুঁজিপতিদের তোষামোদ করা, সঙ্গে দুর্নীতির জন্য মানুষ কংগ্রেসকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে৷ একই নীতি নিয়ে নতুন ভারত গড়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতায় বসেছে বি জে পি৷ কট্টর হিন্দুত্ববাদী আর এস এস পরিচালিত বি জে পি ক্ষমতায় বসেই ধর্ম-বর্ণের নামে দেশভাগের চেষ্টা করছে৷ জনগণকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতায় বসা বি জে পি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানোর উদ্যোগ নেয়নি৷ বৃদ্ধি করা হয়েছে পেট্রল, ডিজেলের দম৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বি জে পি সরকারের ১০০ দিন হল৷ ক্ষমতায় বসার পর পেট্রল, ডিজেলের দাম থেকে রেলভাড়া বৃদ্ধি করে জনগণের ওপর একের পর এক বোঝা কীভাবে চাপাচ্ছে, তা তুলে ধরেন৷ অসংখ্য দুর্নীতির কড়া সমালোচনা করেন৷ তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যে ৫৮টি ব্লকের মধ্যে ১৫টি ব্লকে রেগার কাজ চলবে৷ বাকি ব্লকে রেগার কাজ চলবে না৷ আমরা প্রতিবাদ করছি৷ আমরা বলছি, আগুন নিয়ে খেলার চেষ্টা করবেন না৷ এই আগুন যদি জ্বালানোর চেষ্টা করেন৷ এই আগুন হনুমানের আগুনের মতো লঙ্কা যেমন ছাড়খাড় হয়েছে, এই বি জে পি সরকার পরিস্হিতি সেরকম হবে৷ সেই হুঁশিয়ারি দিচ্ছি৷ একইসঙ্গে কট্টর হিন্দুত্ববাদী এই দল ভারতের জাতীয় সংহতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করছে৷ এই লোকসভা নির্বাচনের পর মোদি সরকার শপথ নেওয়ার পর ১০০ দিনের মধ্যে প্রায় ৩৫-৩৭টি দাঙ্গা সংগঠিত হয়েছে ভারর্তে৷ তিনি আরও বলেন, গরিবের ভোটে জয়ী হয়ে ধনীদের স্বার্থে রাস্তা করছে বি জে পি-র সরকার৷ আই পি এফ টি পৃথক তিপ্রাল্যান্ড গঠনের নামে রাজ্যের শাম্তি-সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করছে জনগণকে চোখ-কান খোলা রাখতে সতর্ক করেন৷ সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করে সুসমৃদ্ধ ত্রিপুরার উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে তফসিলি জাতি মানুষের প্রতি আহ্বান রাখেন৷ এছাড়া সমাবেশে আলোচনা করেন মন্ত্রী রতন ভৌমিক, তফসিলি সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সুধন দাস, রাজ্যসভার সাংসদ ঝর্না দাস বৈদ্য প্রমুখ৷ রাজ্যের ২৩টি বিভাগ থেকে মোট ৭১০ জন প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছেন৷ সম্মেলনে আম্তর্জাতিক জাতীয় এবং রাজ্যের বর্তমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা হবে৷ আলোচনা হবে সংগঠনের বিগত দিনের সফলতা-দুর্বলতাও৷ গৃহীত হবে আগামী দিনের কর্মসূচি৷ সম্মেলন চলবে তিনদিনব্যাপী৷
আজকালের প্রতিবেদন: পশ্চিমবঙ্গে যে কারণে বিপর্যয় তা তুলে ধরেই ত্রিপুরার বাম শিক্ষক-কর্মচারী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করলেন প্রাক্তন সাংসদ সুকোমল সেন৷ শনিবার সারা ভারত সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সভা শেষ হয় আগরতলায়৷ এরপর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনের সামনে হয় বাম কর্মচারী সমাবেশ৷ এখানে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি সুকোমল সেন পশ্চিমবঙ্গের বিপর্যয়ের কারণ তুলে সতর্ক করেন৷ তাঁর অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গে এখন দুর্বৃত্তরাজ চলছে৷ ছাত্রী অবস্হায় পরীক্ষায় নকল করা থেকে দুর্বৃত্তায়ন যে করেছেন তিনি এখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী৷ সারদা থেকে লুট করা আড়াই হাজার কোটি টাকা, গুন্ডা বাহিনী কাজে লাগিয়ে পুলিসকে দর্শক বানিয়ে দুর্বৃত্তায়ন চলছে৷ প্রাক্তন সাংসদ প্রবীণ বাম নেতা সুকোমল সেন বলেন, জনগণকে রাজনৈতিক সচেতন করা যায়নি বলেন পশ্চিমবঙ্গের ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের পর দুর্বৃত্তের সরকার এসেছে৷ তিনি শিক্ষক-কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন, শুধু কর্মসূচি গ্রহণ করলে হয় না৷ কর্মসূচি সম্পর্কে সচেতন ধারণা জন্ম দিতে হবে৷ কত টাকা ছেলের লেখাপড়ায় খরচ করলাম৷ কত ভাল জায়গায় মেয়ের বিয়ে ছিলাম৷ কত বড় বাড়ি বানালাম এই সব হিসেব-নিকেশ মাথায় থাকলে মূল লক্ষ্যে যাওয়া যাবে না৷ মেয়ের বিয়েতে পণ অন্য জাতে বিয়ে সমাজসংস্কারমূলক এই কাজগুলোকে গুরুত্ব না দিয়ে শ্রেণীহীন সমাজ ব্যবস্হা হবে না৷ সারা ভারত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অজয় মুখার্জিও এই বিষয়গুলো তুলে ধরেন৷ টি ই সি সি (এইচ বি রোড)-এর চেয়ারম্যান সুভাষচন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক অসীম পাল-সহ হরিয়ানা, বিহার, উত্তরপ্রদেশের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা বিশাল এই কর্মচারী সমাবেশে বক্তব্য পেশ করেন৷ কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের তিন মাসের কাজে দেশের সাধারণ মানুষের কোনও উপকার হয়নি বলে মম্তব্য করেন প্রায় সব বক্তাই৷ শ্রম আইন সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়ে এই সরকার প্রকৃতপক্ষে বৈদেশিক পুঁজিকে সুবিধা করে দিতে চাইছে বলে দাবি ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব৷ ব্যাঙ্ক, বিমা বেসরকারীকরণ, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, রেগা প্রকল্পের সঙ্কোচন-সহ কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে জোর লড়াই করার ডাক দেওয়া হয় সমাবেশ থেকে৷ ত্রিপুরার বামফ্রন্ট সরকারের বিকল্প কর্মসূচি তুলে ধরে মানিক সরকারের নেতৃত্বে চলা রাজ্য সরকারের প্রশংসা করা হয়৷ রত্না সরকার, মহুয়া রায়-সহ রাজ্যের শীর্ষ কর্মচারী নেতৃত্বে ছিলেন৷
শ্রীনগর, ১৩ সেপ্টেম্বর (পি টি আই)– বন্যা তিক্ততা ভুলিয়ে দিল এন সি এবং পি ডি পি-র মধ্যে৷ মিলিয়ে দিল বি জে পি আর কংগ্রেসকে৷ রাজনৈতিক মতভেদ সরিয়ে রেখে শনিবার শ্রীনগরে সর্বদলীয় বৈঠক থেকে দুর্গত মানুষকে সর্বতোভাবে সাহায্য করার ডাক দেওয়া হল৷ পি ডি পি নেত্রী মেহবুবা মুফতি, কংগ্রেস নেতা সইফুদ্দিন সোজ এবং বি জে পি নেতা যুগল কিশোর জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সঙ্গে একযোগে উদ্ধার কাজে অনবদ্য উদ্যোগ নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ দিলেন সেনাকে, দুঃখপ্রকাশ করলেন জীবনহানিতে৷ রাজ্যের বিধায়ক, সাংসদদের এলাকা উন্নয়ন তহবিলের একাংশ পুনর্গঠনের কাজে দেওয়ার প্রস্তাবও এল সর্বদল বৈঠক থেকেই৷ বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী বললেন, এন সি এবং পি ডি পি যদি একসঙ্গে বসে কথা বলতে পারে, কংগ্রেস আর বি জে পি যদি আলোচনা চালাতে পারে, তা হলে আর সব মানুষও এই দুর্যোগে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে পারবেন৷ তবে অন্য জায়গায় কমলেও উত্তর কাশ্মীরে বন্যার জল বাড়ায় কিছুটা চিম্তিত তিনি৷ এই বন্যার জন্য বছরের শেষে বিধানসভা নির্বাচনে আপনার সুবিধা হবে না অসুবিধা? কী ভাবছেন নির্বাচন নিয়ে? সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করাতে সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিলেন, নির্বাচন নিয়ে ভাবার এখন কোনও সময় নেই৷ শ্রীনগরে সর্বদল বৈঠকের পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রিসভার প্রতিনিধিদল এদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দেখা করে৷ এই বন্যাকে জাতীয় বিপর্যয় বলে ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা৷ সব গৃহহারা মানুষকে অবিলম্বে প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ টাকা করে সাহায্য করার দাবিও জানান মন্ত্রীরা৷ প্রধানমন্ত্রী নিজেই রাজ্যের বন্যা পরিদর্শন করার পর বলেছিলেন, এটা প্রায় জাতীয় বিপর্যয়৷ তবে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণার নির্দিষ্ট কিছু নিয়মনীতি না থাকায় এ নিয়ে কী করা হবে সেটা নিশ্চিত নয়৷ পাশাপাশি যোগাযোগ মন্ত্রী রবি শঙ্কর প্রসাদ ঘোষণা করেছেন, বি এস এন এল এক সপ্তাহ ধরে বিনামূল্যে পরিষেবা দেবে৷ রাজ্যসভার সি পি এম সাংসদ সীতরাম ইয়েচুরি রাজ্যের বাইরের সাংসদদেরও এই দুর্যোগে উন্নয়ন তহবিলের অর্থ দান করার সুযোগ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হামিদ আনসারির কাছে৷
এদিকে, এখনও পর্যম্ত প্রায় দেড় লাখ মানুষকে উদ্ধার করেছেন সেনা এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর জওয়ানরা৷ সাহায্যের অপেক্ষায় প্রায় সম সংখ্যক মানুষ৷ ভোর চারটে থেকে রাত ১২টা পর্যম্ত চলছে উদ্ধার কাজ৷ রাত ১২টা থেকে ভোর ৪টে পর্যম্ত নৌকা এবং হেলিকপ্টারগুলো মেরামত করা হচ্ছে৷ তারপরে ফের ভোর ৪ থেকে উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ছেন সেনারা৷ এখন জোর দেওয়া হচ্ছে জল শোধনের ট্যাবলেট বিলিতে, ছোট জল শোধনের প্ল্যান্ট বসানো, যোগাযোগ ব্যবস্হার উন্নতিতে টাওযার মেরামতি এবং বিদ্যুৎ সমস্যা মেটাতে ৩ থেকে ৫ কে ভি এ-র জেনারেটর বসানোর ওপর৷ এত কিছু করেও কিন্তু সেনার জিপ এবং হেলিকপ্টারের ওপর পাথর ছোঁড়া থামছে না৷ মাঝে-মধ্যেই এমন ঘটনা ঘটছে৷ নিচু দিয়ে উড়ে যাওয়া একটি হেলিকপ্টারের এতে অল্প ক্ষতিও হয়েছে৷ সেনারা অবশ্য দমে যেতে রাজি নন৷ বলছেন, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অনেক জায়গায় মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন বলেই এমন কাণ্ড ঘটছে৷ তবে মুখ্যমন্ত্রী আবদুল্লা নিন্দা করে বলেছেন, বন্যার ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছে কিছু বিভেদকামী শক্তি৷ এখনই এ সব করতে হচ্ছে? ত্রাণ আর উদ্ধার কাজে বাধা দিতে হচ্ছে? পরেও তো অনেক সময় পাবেন ওরা! বিশ্বে সব থেকে বেশি সামরিকীকরণ হওয়া এই উপত্যকায় পরে কী হতে চলেছে তা নিয়ে চিম্তিত সেনাবাহিনীর কিছু কর্তাও৷ কারণ শ’য়ে শ’য়ে এ কে, ইনসাস, এবং এস এল আর রাইফেল জলের নিচে৷ বেশ কিছু রাইফেল নাকি জলে ভেসে গেছে৷ ভিজে জবজবে হ্যান্ড গ্রেনেড এবং বিস্ফোরকও৷ সব কিছু ব্যারাকে ফেলে কোনওরকমে প্রাণ হাতে নিয়ে পালিয়ে বেঁচ্ছেেন জওয়ানেরা৷ এইসব রাইফেল এবং তাদের কার্তুজ পরে অয়েলিং এবং সার্ভিসিং করালে ফের ব্যবহার করা যেতে পারে বটে৷ কিন্তু গ্রেনেড বা বিস্ফোরকের ক্ষেত্রে তা হবে না৷ উগ্রপম্হীরা এর সুযোগ নেবে না তো? চিম্তায় সেনাকর্তারা৷
সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বিধ্বংসী এই বন্যায় উদ্ধার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া৷ আজ থেকে ২০ বছর আগে প্রথম যখন এদেশে এই মিডিয়া চালু হয় তখন বেজিং, মস্কোর পাশাপাশি দিল্লিও সন্দেহের চোখে দেখেছিল একে৷ বলেছিল, এতে সরকারের কর্তৃত্ব ক্ষুন্ন হবে৷ আজকে কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়া সম্পর্কে ধারণাটাই অনেক বদলে গেছে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে সাধারণ মিডিয়াকে পাশে সরিয়ে রেখে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষার ওপর জোর দিচ্ছেন৷ কারণ এতে জনগণের মত খুব দ্রুত এবং সরাসরি পাওয়া যায়৷ এই ব্যাপারটা নীতি নির্ধারণ এবং দ্রুত কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তার প্রমাণ মিলল কাশ্মীরের বন্যা থেকে৷ সাধারণ টেলিফোন, মোবাইল এবং ইন্টারনেট পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু অনেকটাই উপগ্রহ নির্ভর হওয়ায় চালু ছিল মোবাইলে ৩-জি ইন্টারনেট পরিষেবা৷ হাজার হাজার দুর্গত মানুষ টুইটার, ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়েছেন৷ তা থেকে প্রায় ১২,০০০ মানুষকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়েছে সেনাবাহিনী৷
আজকালের প্রতিবেদন: দিল্লি, ১৩ সেপ্টেম্বর– উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরী, গুজরাটের বরোদা ও তেলেঙ্গানার মেডাক– এই ৩ লোকসভা আসন ও ১০ রাজ্যে ৩৩টি বিধানসভা আসনে আজ উপনির্বাচন হল মোটামুটি নির্বিঘ্নেই৷ শুধু মাওবাদী উপদ্রুত ছত্তিশগড়ের অম্তগড় বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন চলার সময় দুপুরে ওই এলাকার এদেঙ্গা গ্রামের কাছে আমাবেদা জঙ্গলে টহলদার পুলিস-কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ওপর হামলার চেষ্টা করে সশস্ত্র মাওবাদীদের একটি দল৷ তারা বিস্ফোরণ ঘটায়, ঝাঁক ঝাঁক গুলি চালায়৷ সঙঘর্ষ বেধে যায়৷ জওয়ানরা ওই অঞ্চল ঘিরে ফেললে মাওবাদীরা গভীর জঙ্গলের ভেতর পালায়৷ কেউ হতাহত হননি৷ ভোটেরও কোনও ক্ষতি হয়নি৷ শুধু এই এলাকার কয়েকটি বুথে বেলা ১টা নাগাদ এ ঘটনায় কিছুক্ষণের জন্য ভোট থমকে গিয়েছিল৷ দিনের শেষে অম্তগড়ে ভোট পড়েছে ৫০ শতাংশ৷ এই বিধানসভা কেন্দ্রটির ২০২টি বুথের ১৯০টি বুথই ছিল মাওবাদী উপদ্রবের কারণে অতি স্পর্শকাতর৷ নির্বিঘ্নে ভোট করানোর জন্য দেড় লক্ষ ভোটারের এই বিধানসভা আসনে ছিল রাজ্য পুলিস ও কেন্দ্রীয় বাহিনীগুলির ১০ হাজার নিরাপত্তা কর্মীর পাহারা৷ এ ছাড়া তেলেঙ্গানার মেডাক লোকসভা কেন্দ্রের গঙ্গাপুরের ভোটাররা তাঁদের গ্রামে বুথ না হওয়ার ক্ষোভে ভোট বয়কট করেছেন৷ এই লোকসভা কেন্দ্রের পেড্ডাপুরে গ্রামের বেহাল রাস্তাঘাট সারানোর দাবিতে গ্রামবাসীরা ভোট দিতে যাননি৷ পশ্চিমবঙ্গের চৌরঙ্গি বিধানসভা কেন্দ্রে খুচরো সঙঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও ভোট নির্বিঘ্নে হয়েছে চৌরঙ্গি ও বসিরহাট (দক্ষিণ) বিধানসভা কেন্দ্রে৷ মে মাসে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতার বিপুল জয়ে ক্ষমতায় মোদি সরকার আসার পর গত মাসে প্রথম পরীক্ষায় বি জে পি ডাহা ফেল করে বিহার-সহ ৪ রাজ্যে ১৮ বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে মাত্র ৭টিতে জিতে৷ বিহারে কংগ্রেস, নীতীশ, লালুর মহাজোটের ধাক্কায় ১০ বিধানসভা আসনের মাত্র ৪টিতে জেতে বি জে পি৷ আজকের উপনির্বাচন সবে ১০০ দিন উত্তীর্ণ মোদি সরকারের দ্বিতীয় পরীক্ষা৷ আজ যে ৩ লোকসভা আসনে ও ৩৩ বিধানসভা আসনের ভোট হল, তার ফল গণনা হবে ১৬ সেপ্টেম্বর৷ আজ যে আসনগুলিতে ভোট হল, তার মধ্যে গুজরাটের বরোদা আসনটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছেড়ে দিয়েছেন বারাণসীতে সাংসদ হওয়ায়৷ উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরী লোকসভা আসনটিতে ভোট হল সমাজবাদী পার্টি নেতা মুলায়ম সিং যাদব আজমগড় আসনে জিতে মৈনপুরী ছেড়ে দেওয়ায়৷ তেলেঙ্গানার মেডাক লোকসভা কেন্দ্রে আজ পুনর্নির্বাচন হল চন্দ্রশেখর রাও তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে এই লোকসভা কেন্দ্রটি ছেড়ে দেওয়ায়৷ মেডাকে ভোট পড়েছে ৬৫ শতাংশ৷ উত্তরপ্রদেশের ১১ বিধানসভা আসন-সহ ১০ রাজ্যে যে ৩৩ বিধানসভা আসনে আজ ফের নির্বাচন হল, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জয়ী বিধায়করা গত লোকসভা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে জিতে যাওয়ায় বিধানসভা আসনগুলি ছেড়ে দেওয়ায়৷ এই উপনির্বাচনে খুবই নজর করার উত্তরপ্রদেশের এই ১১ বিধানসভা কেন্দ্র৷ লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের ৮০ লোকসভা কেন্দ্রের ৭১টিতেই জিতেছে বি জে পি৷ সঙ্গী আপনা দলও জিতেছে ২টিতে৷ বিধানসভা কেন্দ্রগুলির কী ফল হয় তা দেখতে উদগ্রীব সব দলই৷ প্রতিটি কেন্দ্রেই লড়াই মূলত ত্রিমুখী বি জে পি, কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি৷ বহুজন সমাজ পার্টি নেত্রী মায়াবতী জানিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর দল উপনির্বাচনে নীতিগতভাবে লড়েনি৷ দিনের শেষে উত্তরপ্রদেশে ভোট পড়েছে ৫২ শতাংশ৷ উপনির্বাচন হয়েছে গুজরাটে ৯ বিধানসভা কেন্দ্রে, রাজস্হানে ৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে, পশ্চিমবঙ্গে ২টি বিধানসভা কেন্দ্রে, আসামে শিলচর-সহ ৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে, ত্রিপুরায় ১টি বিধানসভা কেন্দ্রে, অন্ধ্রে ১টি বিধানসভা কেন্দ্রে ও সিকিমে ১টি বিধানসভা কেন্দ্রে৷ রাজস্হানে ভোট পড়েছে ৬৬ শতাংশ, আসামে ৭০ শতাংশ৷ সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে ত্রিপুরার সংরক্ষিত মনু বিধানসভা আসনে ৮৭ শতাংশ৷
এবার ব্রিটিশ কর্মীর শিরচ্ছেদ
ভিডিও প্রকাশ আইসিসের ॥ ঘাতককে বিচারের মুখোমুখি করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ক্যামেরন
জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এ্যান্ড সিরিয়া (আইসিস) শনিবার তৃতীয় বিদেশী বন্দী ব্রিটিশ ত্রাণকর্মী ডেভিড ক্যাথর্ন হেইন্সের শিরñেদের ভিডিও প্রকাশ করেছে। এই ভিডিওতে আরেক ব্রিটিশ বন্দীকেও শিরñেদের হুমকি দেয়া হয়। এই হত্যাকাণ্ড ব্রিটেনের প্রতি আইসিসের একটি পরিষ্কার বার্তা। এই ইসলামী এই জঙ্গী সংগঠনের বিরুদ্ধে লড়তে দেশটি তার প্রধান মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক জোট গঠন করেছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এই হত্যাকাণ্ডকে চরম নৃশংসতা বলে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। খবর নিউইয়র্ক টাইমস, গার্ডিয়ান ও বিবিসি অনলাইনের।
৪৪ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ ত্রাণকর্মীকে হত্যার আগে তাকে তার মৃত্যুর জন্য তার দেশের নেতারা দায়ী লেখা স্ক্রিপ্ট পড়তে বাধ্য করে এক আইসিস জঙ্গী। তিনি ভিডিওতে বলেন, আমি ঘোষণা করতে চাই আমার মৃত্যুর জন্য ডেভিড ক্যামেরন সম্পূর্ণ দায়ী। আইসিসের বিরুদ্ধে লড়তে আপনি স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোটে যোগ দিয়েছেন। দুর্ভাগ্যবশত আমরা ব্রিটিশ জনগণ, আমাদের পার্লামেন্টের স্বার্থপর সিদ্ধান্তের কারণে শেষ পর্যন্ত আমাদেরই মাসুল দিতে হবে। ভিডিওর শেষে কালো মুখোশ পরা আইসিস জঙ্গী ব্রিটিশ উচ্চারণে ইংরেজীতে এলান হেইনিং নামে আরেক ব্রিটিশকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্ট বলেছে, এই ঘাতকই মার্কিন দুই সাংবাদিককে হত্যা করেছিল বলে মনে করা হচ্ছে। স্কটল্যান্ডে জন্ম নেয়া হেইন্সকে সিরিয়া থেকে ২০১৩ সালের মার্চ মাসে অপহরণ করা হয়। তিনি একটি আন্তর্জাতিক ত্রাণসহায়তাকারী প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। ‘যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের প্রতি বার্তা’ শিরোনামের ওই ভিডিওটির সময়কাল ছিল ২ মিনিট ২৭ সেকেন্ড। ২ সেপ্টেম্বর মার্কিন সাংবাদিক স্টিভেন সটলফের শিরচ্ছেদ করার পর প্রকাশিত ভিডিওতে হেইন্সকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল। এর আগে ১৯ আগস্ট প্রথম মার্কিন সাংবাদিক জেমস ফলির শিরচ্ছেদের ভিডিও প্রকাশ হয়। আইসিসের ওপর মার্কিন হামলা বন্ধ না হলে সটলফেকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল ওই ভিডিওতে। শুক্রবারই অপহরণকারীদের উদ্দেশে হেইন্সের পরিবার আবেদন জানিয়েছিল তাদের সঙ্গে যেন সরাসরি যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা পরেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আইসিসের বিরুদ্ধে আমেরিকান হামলায় সহযোগিতা আর কুর্দিযোদ্ধাদের সহায়তা করার জবাবে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করা হচ্ছে বলে এক শিরচ্ছেদকারী ভিডিওতে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বলেছেন, আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আপনি স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জোট বেঁধেছেন। আপনার পূর্বসূরি টনি ব্লেয়ারও এমনটা করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রকে ‘না’ বলার সাহস ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীদের নেই। ক্যামেরন, আপনি ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়তে পেশমার্গকে অস্ত্র সরবরাহের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তার মাসুল দিতে হবে এই ব্রিটিশকে। পরিহাসের বিষয় হলো, এই ব্যক্তি তার চাকরি জীবনের এক দশক ব্যয় করেছেন রয়্যাল এয়ার ফোর্সে। আর রয়্যাল এয়ার ফোর্সই কুর্দিদের কাছে অস্ত্র সরবরাহের জন্য দায়ী।
এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে ক্যামেরন বলেছেন, যত সময়ই প্রয়োজন হোক না কেন, হত্যাকারীকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করা হবে। নির্দোষ এই ত্রাণকর্মীকে হত্যাকরা ঘৃণ্য ও জঘন্য কাজ। আমার হৃদয় ডেভিড হেইন্সের পরিবারকে স্পর্শ করছে। যারা এমন কঠিন সময়েও অসাধারণ সাহস দেখিয়েছেন ও ধৈর্য ধারণ করেছেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে যে, তারা ওই ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ের কাজ করছেন।
অনিশ্চয়তার দোলাচলে যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যত
স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার পক্ষে-বিপক্ষে সহস্র লোকের মিছিল
স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রশ্নে এক ঐতিহাসিক গণভোটের চার দিন আগে যুক্তরাজ্যের ভাষ্য অস্পষ্ট হয়ে রয়েছে। কারণ তিনটি নতুন জরিপে ইউনিয়নের সমর্থকরা জনসমর্থনের দিক দিয়ে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে আছেন বলে দেখা যায়, কিন্তু একটিতে বিচ্ছিন্নতাবাদী শিবির এগিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রচার অভিযানের শেষ সপ্তাহান্তে উভয় পক্ষের হাজার হাজার সমর্থক স্কটল্যান্ডের রাজধানী এডিনবরা ও সবচেয়ে বড় শহর গ্রাসগোর রাস্তায় নেমে আসে। প্রতিদ্বন্দ্বী নেতারা এখনও সিদ্ধান্ত নেননি এমন ভোটারদের সপক্ষে টানতে দেশজুড়ে জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। খবর ইয়াহুনিউজ, এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের।
গণভোটে কেবল স্কটল্যান্ডের ভবিষ্যতই নয়, যুক্তরাজ্যের ভাগ্যও নির্ধারিত হবে। ৩০৭ বছর আগে স্কটল্যান্ড ইংল্যান্ডের সঙ্গে ইউনিয়নভুক্ত হওয়ার ফলে যুক্তরাজ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। রবিবার প্রকাশিত চারটি জনমত জরিপে ইউনিয়নিস্টরা শতকরা ২ থেকে ৮ পয়েন্টে এগিয়ে আছেন বলে দেখা যায় আর ইন্টারনেটযুগে পরিচালিত আইসিএমের এক জরিপে দেখানো হয় যে, স্বাধীনতার সমর্থকরা শতকরা ৫৪ ভাগ ভোট এবং ইউনিয়নিস্টরা শতকরা ৪৬ ভাগ ভোট পেতে যাচ্ছেন। সেপ্টেম্বরের আগপর্যন্ত ২০১৩ সালের পরিচালিত একটি জরিপ ছাড়া অন্য সব জরিপেই ইউনিয়নিস্টরা সহজেই জয়ী হতে পারেন বলে দেখানো হয়।
কিন্তু চলতি মাসে পরিচালিত কয়েকটি জরিপে বলা হয়, জাতীয়তাবাদীরা স্কটল্যান্ডের ৪০ লাখ ভোটারের মধ্যে কয়েক লাখ ভোটারের মন জয় করেছেন। স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রশ্নে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় গণভোটকে কেন্দ্র করে প্রচার অভিযানের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
আইসিসের বিরুদ্ধে লড়তে আমিরাতে ৬শ’ সেনা পাঠাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া
জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এ্যান্ড সিরিয়ার (আইসিস) বিরুদ্ধে চলমান লড়াই জোরদার করতে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক জোটে যোগ দিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ছয় শ’ সেনা পাঠাচ্ছে অস্টেলিয়া। দেশটির প্রধানমন্ত্রী টনি এ্যাবোট রবিবার এ কথা বলেছেন। খবর এএফপি ও বিবিসি অনলাইনের।
এই আন্তর্জাতিক জোটে ১০টি আরব দেশসহ প্রায় ৪০টি দেশ এতে যোগ দিয়েছে। ফ্রান্স সোমবার আঞ্চলিক নিরাপত্তাবিষয়ক একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এতে যোগ দিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি চার দিনের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষে শনিবার রাতে প্যারিস পৌঁছেছেন। গত সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইরাক ও সিরিয়ায় এই জিহাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি পরিকল্পনা তুলে ধরেন। এ্যাবোট বলেন, ইরাক পরিষ্কার করে জানিয়েছে তারা দেশের নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে সামরিক সাহায্যকে স্বাগত জানাবে।
আইএস মোকাবেলায় মহাজোট
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
ইসলামিক স্টেট (আইএস) হুমকি মোকাবেলায় পশ্চিমা বিশ্ব। অস্ট্রেলিয়াসহ মোট ৪০টি দেশ ইতিমধ্যে আইএসবিরোধী মার্কিন জোটে যোগ দিয়েছে। এর মধ্যে আছে ১০টি আরব দেশও। এসব দেশ একজোট হয়ে মহাজোট গঠন করছে। জোটের মোড়ল যুক্তরাষ্ট্রর ডাকে সাড়া দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে সেনা ও যুদ্ধবিমান পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। রোববার এক বিবৃতিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবোট এ ঘোষণা দেন। অ্যাবোট বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ৬০০ সেনা ও আটটি যুদ্ধবিমান শিগগিরই পাঠানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রের আইএসবিরোধী যুদ্ধের অংশীদার হতেই মধ্যপ্রাচ্যে সেনা পাঠানোর এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ৪০০ বিমান ও ২০০ বিশেষ বাহিনীর সমন্বয়ে গড়া সেনারা সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালিত হেডকোয়ার্টারে মোতায়েন করা হবে। আগামী সপ্তাহেই এ সেনাদের একটি অংশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছবে। পাশাপাশি আটটি সুপার হরনেট যুদ্ধবিমানও পাঠানো হচ্ছে।
এরপর ইরাকসহ ধাপে ধাপে অন্যান্য আরব দেশেও সেনা পাঠানো হবে বলে জানান অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী। সরকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অস্ট্রেলিয়ার এ সিদ্ধান্তকে স্বাগতম জানিয়েছে ইরাক।
জোট গঠনে এবার ফ্রান্সে কেরি
ইরাক ও সিরিয়ায় সুন্নিপন্থী জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) প্রতিরোধে শক্তিশালী জোট গঠনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এখন ফ্রান্সে অবস্থান করছেন। চার দিনের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষে রোববার তিনি প্যারিসে পৌঁছেছেন। ইতিমধ্যে ১০টি আরব দেশসহ ৪০টি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের আইএসবিরোধী এই পরিকল্পনায় সমর্থন দিতে জোটবদ্ধ হয়েছে। এসব দেশের প্রতিনিধিরা আজ সোমবার সিকিউরিটি সামিট-এ যোগ দিতে সমবেত হবেন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে।
এই সামিটে ইরানের অংশ নেয়ার কথা থাকলেও দেশটিকে অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে রাজি নয় যুক্তরাষ্ট্র। ওয়াশিংটন মনে করে, শুধু আলোচনা পণ্ড করার জন্যই ইরান এই সামিটে যোগ দিতে ইচ্ছুক। বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা
ফ্রান্সে ৯৩০ জন জিহাদের
সঙ্গে জড়িত : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
ফ্রান্সের নাগরিক ও অভিবাসী মিলিয়ে মোট ৯৩০ জন ইরাক ও সিরিয়ায় জিহাদের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছে অথবা জিহাদে যোগ দিতে সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। ওই ৯৩০ জনের মধ্যে কমপক্ষে ৬০ জন নারী রয়েছেন।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নাড কাজেনুভে রোববার সাপ্তাহিক লা জার্নাল দ্য ডিমানসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ফ্রান্সের নাগরিক ও অভিবাসী মিলিয়ে মোট ৯৩০ জন ইরাক ও সিরিয়ায় সম্পূর্ণভাবে জিহাদের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। এর মধ্যে ৬০ নারীসহ ৩৫০ জন জিহাদে লিপ্ত রয়েছে। আনুমানিক ১৮০ জন সিরিয়া থেকে ফিরে এসেছে এবং ১৭০ জন ওই এলাকার পথে রয়েছে।
সারদার মহিলা কর্মী ও রজতের মুখোমুখি জেরা
| |
সোমনাথ মণ্ডল
| |
অসহযোগিতার আড়ালেই তদন্তে সিবিআইকে সাহায্য করছেন রজত মজুমদার! EXCLUSIVE
Last Updated: Sunday, September 14, 2014 - 17:18
ওয়েব ডেস্ক: অসহযোগিতার আড়ালেই কি তদন্তে সিবিআইকে সহযোগিতা করছেন রজত মজুমদার? প্রাক্তন এই পুলিসকর্তা প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, সিবিআইকে তিনি কোনও সহযোগিতা করবেন না। রীতিমতো চ্যালেঞ্জ করেছেন সিবিআইকে। যদিও তদন্তকারীদের ইঙ্গিত, প্রাক্তন এই পুলিসকর্তার হাত ধরেই মিলছে প্রভাবশালী রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ। সিবিআইয়ের দাবি যে মিথ্যে নয় তার প্রমাণ মিলেছে কুণাল ঘোষের চিঠিতেও। কুণালের দাবি, আদালতে রজত মজুমদার যে দাবি করেছেন তা ঠিক নয়। আদালতে রজত যাঁদের নাম করেছেন, মুখোমুখি জেরার সময় তাঁদের নাম আদৌ উল্লেখ হয়নি। তাহলে ভরা আদালতে কেন মুখ্যমন্ত্রীর নাম উল্লেখ করলেন রজত মজুমদার, তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা।
চিঠিতে কুণালের দাবি-
দেখলাম রজত মজুমদার বলেছেন সুদীপ্তর টাকা ওঁকে (রজত মজুমদার) দিয়ে মমতাকে পাঠানো হয়েছে। এটা নাকি জেরার সময় আমি বলেছি। সিবিআই কর্তারা সাক্ষী, এই প্রসঙ্গটিতে মমতার নাম পর্যন্ত উল্লেখ হয়নি। রজতদা কেন এমন বললেন, বুঝলাম না।
বৃহস্পতিবার আদালতে দাঁড়িয়ে রজত মজুমদার কী বলেছিলেন?
কুণালের মুখোমুখি হলাম। তখন কুণাল এই কথা বলল যে মমতা-মুকুলকে নাকি ভোটের আগে টাকা দিতাম সুদীপ্তর থেকে নিয়ে। ওই যে সিবিআইয়ের যে অফিসার পিছনে দাঁড়িয়ে আছেন তাঁকে বলছি, আমার নাম রজত মজুমদার। আমার মুখ থেকে একটাও কথা বের করতে পারবেন না। মুকুল-মমতাকে টাকা দিয়েছি এটা বলাতে পারবেন না। মমতা-মুকুলকে টাকা দিয়েছি? সাতদিন পরে বলবেন, মুকুলকে টাকা দিয়েছি। তারও সাতদিন পরে বলবেন মমতাকে টাকা দিয়েছি। সাতদিন কেন সত্তর দিনেও প্রমাণ করতে পারবেন না। আপনি কোনওদিন মুখ থেকে বার করতে পারবেন না মুকুল-মমতাকে টাকা দিয়েছি।
সুদীপ্ত সেনকে রজত কী বলেছিলেন---
তুমি কুণালকে বলেছ আমার হাত দিয়ে মুকুল-মমতাকে টাকা পাঠাতে? চালাকির একটা সীমা থাকা উচিত।
মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতারের দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা
ওয়েব ডেস্ক: সারদাকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাঁরা নেহাতই চুনোপুঁটি। আসল রাঘব বোয়ালের কাছে এখনও পৌছতেই পারেননি তদন্তকারীরা। সারদাকাণ্ডে ফের শাসকদলের শীর্ষনেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দেগে আজ এই মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতারের দাবি করেছেন বিরোধী দলনেতা।
এদিকে, শনিবার সুরেন্দ্রনাথ কলেজে এসএফআই কর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে পথে নামল সিপিআইএম। আজ শিয়ালদহ অঞ্চলে প্রতিবাদ মিছিল করেন সিপিআইএম কর্মী সমর্থকরা। মিছিলের শেষে সুরেন্দ্র নাথ কলেজের সামনে বেশ কিছুক্ষণ পথ অবরোধ করে বামেরা।
মিছিলে ছিলেন চৌরঙ্গির বাম প্রার্থী ফৈয়াজ আহমেদ খান সিপিআইএম নেতা অনাদি সাহু। পুলিসের বিরুদ্ধে নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ এনেছেন তাঁরা।গতকাল সুরেন্দ্রনাথ কলেজে ভাঙচুর করা হয় সিপিআইএমের বুথ। ওই হামলায় আহত হন এসএফআই নেত্রী ডোনা গুপ্ত। বন্দুকের বাঁট দিয়ে আঘাত করা হয় তাঁকে এবং তাঁর সঙ্গে থাকা অনন্যাকে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দুজনের চিকিত্সা চলছে। আজ ডোনা ও অনন্যাকে হাসপাতালে দেখতে যান গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি নেতৃত্ব।
বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যবস্থা নিতে হবে রাজ্যকে, বললেন সেবির চেয়ারম্যান
Last Updated: Sunday, September 14, 2014 - 22:32
ওয়েব ডেস্ক: বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার বাড়বাড়ন্ত রুখতে প্রথমে ব্যবস্থা নিতে হবে রাজ্যকেই। এমনই মত সেবি চেয়ারম্যান ই উকে সিনহার। তাঁর বক্তব্য, ভারতবর্ষের মতো বড় দেশের প্রতিটি কোণায় নজরদারি চালানো সেবির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার পক্ষে কার্যত অসম্ভব। পঞ্জাব, উত্তরপ্রদেশ বা পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে কোনও বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা বাজার থেকে টাকা তুললে তা প্রথমে নজরে আসে সংশ্লিষ্ট রাজ্য প্রশাসনেরই।
সেবির চেয়ারম্যানের মতে, রাজ্য সরকারের হাতে যে ক্ষমতা রয়েছে তা যথাযথ ব্যবহার করলে সহজেই বড়বড় আর্থিক কেলেঙ্কারি আটকানো সম্ভব।
সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিব, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর ও সেবির আধিকারিকদের নিয়ে একটি বৈঠকও করেছেন তিনি। মুখ্যসচিবদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বাজার থেকে পঞ্জি স্কিমের মাধ্যমে যাঁরা টাকা তুলছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি, এবিষয়ে রাজ্য সরকারকে সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেবির চেয়ারম্যান।
|
No comments:
Post a Comment