Tuesday, April 22, 2014

Toughest time for Teesta farmers

Toughest time for Teesta farmers
Boro growers struggling with irrigation as India is not releasing enough water.


The boro paddy growers in Bangladesh’s north are struggling with irrigation this season because India has been reportedly holding back more water than ever to irrigate an expanded stretch of arable land on the Teesta basin.
These growers are having to resort to expensive extraction of underground water using shallow pumps. Farmers say irrigation with underground water is over 12 times more expensive that irrigation with river water.
Since India installed a barrage at Gajoldoba in West Bengal in 1977, Bangladesh has been getting around 5,000 cubic feet per second (cusec) water on an average during the lean season.
The Teesta Irrigation Project, actively providing irrigation in three northern districts – Nilphamari, Dinajpur and Rangpur – since 1993, requires around 2,000 cusec of water for watering 65,000 hectares of boro land.
But during this boro season, the flow has alarmingly come down to as little as 500 cusec – one-tenth of the usual flow – with which only about 20,000 hectares of land is being cultivated.
That is why, the project authorities have no other option but to do water rationing, which then again is said to be harmful for this particular breed of paddy because it needs constant presence of water.
“Over the last one and a half months, we have been releasing water one at a time for each of the districts. We do not have enough water to meet everyone’s demand [in three districts under the project] simultaneously,” said Sub-Divisional Engineer Moinuddin Mondol, who has been working with the Teesta Irrigation Project for more than 30 years.
Anowarul Alam, deputy director of the Department of Agriculture Extension in Dinajpur, told the Dhaka Tribune that: “The rationing system of irrigation is not a solution because boro paddy requires regular water flow.”
Boro is one of the major crops in Bangladesh, contributing a giant portion of the annual demand for food.
On papers, the Teesta runs along nearly 19.63 lakh hectares of arable on its basin. Of that stretch, 7.49 lakh falls within Bangladesh and the remaining 12.14 lakh in India. Reportedly, India has seldom managed to bring the entire stretch of its land under cultivation during the lean season.
In an interview with BBC Bangla Service on March 14, Rajib Banerjee, minister of irrigation of West Bengal, said the state government had been planning to expand its farmland coverage this season; as a result they would be needing more water for irrigation.
In that interview, he also said since there was no legally binding treaty on sharing Teesta water, it was only logical for India to fulfil its own irrigation demand and then think about releasing water for Bangladesh.
The lives and livelihoods of around ninety lakh people from Nilphamari, Kurigram, Lalmonirhat, Rangpur and Dinajpur districts are directly and indirectly dependent on Teesta water and boro farming.
The boro growers have been for years irrigating their boro land with water from the Teesta project canals that run along their fields. However, this season, many of them had to install shallow pumps to suck up water from underground because the canals have all dried up.
Sultan Ali, a boro grower from the Chirir Bondor Upazila of Dinajpur, shared his predicament with the Dhaka Tribune. “Despite having a canal of the Teesta Irrigation Project right beside my fields, I was forced to set up a shallow pump to irrigate my 2.02 hectares of land,” He said.
“I have to pay around Tk15,000 per hectare from my pocket for irrigating my land with underground water. On the other hand, I pay the government only Tk1,200 per hectare for using water from the project,” Sultan said.
“Most medium and large farmers have already set up shallow pumps because they do not want to risk their investments. But the small growers are turning out to be the worst sufferers because they cannot afford pumps,” said, DAE Deputy Director Anwarul Alam.
He also feared that boro production in the region could suffer a major blow this year because there had been no regular flow of water.
Mir Sajjad Hossain, member of the Joint River Commission, said the situation in the Teesta basin had never been worse.
“This is an unusual situation. On March 9 this year, flow was only 409 cusec – the lowest in history. This is happening because India is unilaterally deciding on the water flow from upstream,” Sajjad said.
“The government of West Bengal might not be interested in the Teesta treaty at all, but we have no other option but to immediately sign a bilateral agreement in this regard,” he suggested. 
http://www.dhakatribune.com/agriculture/2014/apr/16/toughest-time-teesta-farmers#sthash.5yhJOHTD.dpuf


2014-04-14 11:26 GMT+06:00 Isha Khan <bdmailer@gmail.com>:

মৃত্যুর প্রহরে নদী


গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়িতে ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে জেগে ওঠা বালুচরে চাষ হচ্ছে কুমড়া। ব্রহ্মপুত্র নদের বিশাল জলরাশি এখন নেই। আর বিস্তীর্ণ চরে লক লক করে বেড়ে উঠেছে কুমড়াগাছের ডগাগুলো। ফুলছড়ি উপজেলার উপর দিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদে শুষ্ক মৌসুমে কোনো পানি থাকে না। যেদিকে তাকানো যায় শুধু বালি আর বালি। সেই ধু-ধু বালুচর থেকে কৃষকরা তুলছেন ফসল। গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশের সব নদীর চিত্র একইরকম।

নদীমাতৃক বাংলাদেশ কী আর আছে! চোখের সামনে দেশজুড়ে জালের মত বিছিয়ে থাকা সব নদী একে একে হারিয়ে যাচ্ছে। যে নদীর বুকে আগে প্রবল ঢেউ আর ঢেউয়ের দোলা ছিল সেসব নদীর শুষ্ক বুকে এখন ধানের শীষ দোল খায়। সাধারণ চোখে মনে হয়, কী অপরূপ দৃশ্য। বাস্তবতা হচ্ছে পানির অভাবে নদী মরে যাচ্ছে, যা আমাদের দেশকে স্থায়ী মরুকরণের পথে নিয়ে যাচ্ছে। গ্রীষ্মকাল এলে নদী হয়ে পড়ে শুকনো খটখটে। প্রমত্তা পদ্মা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, বিশাল যমুনা পরিণত হয় শুকনো খালে। উজানের পানি প্রবাহ ভয়াবহ ভাবে কমে, নদীতে পলি জমে, জলাধারগুলো ভরাট হয়ে একের পর এক নদী মরে যাচ্ছে। বাংলাদেশের জীবন প্রবাহরূপী নদীগুলোর এই মরণদশার প্রধান কারণ হলো গ্রীষ্মকালে উজান থেকে পানিপ্রবাহ কমে আসা। বর্ষায় পানির গড় প্রবাহ ঠিক থাকলেও গ্রীষ্মকালে সব নদীর গড় প্রবাহ ভয়াবহভাবে কমে এসেছে। বাংলাদেশের নদীগুলোর জন্য গঙ্গা-মেঘনা-ব্রহ্মপুত্র (জেএমবি বেসিন) এই তিন অববাহিকার পানিই প্রধান ভরসা। বাংলাদেশের নদীর মূল সে াতধারার প্রধান অংশ আসে ভারত হয়ে। ভারতের একতরফা পানি প্রত্যাহারের কারণে বাংলাদেশের নদীগুলো মরে যাচ্ছে।

ভারত থেকে পানিপ্রবাহ আটকে দেয়াই নদীমৃত্যুর প্রধান কারণ

১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ গঙ্গার পানি ভাগাভাগি নিয়ে ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তির প্রস্তাবনার তিন নম্বর অনুচ্ছেদে বলা রয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নদীগুলোর পানি ভাগাভাগি ও এসব নদীতে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে দুই দেশের জনগণের সুবিধা বিবেচনা করে দেখা হবে। আবার, গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির নয় নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, দুই দেশের সরকার ন্যায়বিচার, ন্যায্যতা ও কারো ক্ষতি করা নয়- এসব নীতিমালার আলোকে যৌথ নদীর পানি ভাগাভাগি করতে সম্মত আছে। সুতরাং এই চুক্তির আওতায় ভারত কোনভাবেই একতরফাভাবে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারে না।

অথচ উজানে ভারত থেকে পানিপ্রবাহ কমে আসার কারণেই বাংলাদেশের নদীগুলো মৃত্যুর প্রহর গুণছে। গঙ্গায় ফারাক্কা বাঁধ দেয়ার ফলে গঙ্গা অববাহিকার পানি প্রবাহ কমে এসেছে। গ্রীষ্মে এ প্রবাহ আশংকাজনকভাবে কমে আসে। অন্যদিকে, তিস্তা চুক্তি না করা এবং উজানে তিস্তা নদীতে ভারতের বেশ কয়েকটি বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহারের কারণে পানিপ্রবাহ গ্রীষ্মকালে বস্তুত শূন্যের কোটায় নেমে আসে। ভারতের সঙ্গে ৫৪টি অভিন্ন নদী থাকলেও পানি বণ্টন চুক্তি হয়েছে মাত্র একটি নদী পদ্মার। তিস্তা চুক্তি রাজনৈতিক কারণে আটকে রয়েছে। বাকি ৫২টির ব্যাপারে শুধু বৈঠকে আলোচনাই হয়। পানি বণ্টন চুক্তির কোন অগ্রগতি হয় না। দুই দেশের সরকার প্রধানদের মধ্যে দুই দফা চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেয়ার পরও রাজনৈতিক কারণ দেখিয়ে পিছিয়ে দেয়া হয়েছে এ চুক্তি। একই নদীর তীরবর্তী মানুষেরা রাজনৈতিক কারণে বিভক্ত হয়ে যাওয়া ভিন্ন দেশ হওয়ার কারণে ন্যায্য পানি প্রাপ্যতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ।

ভারতের সঙ্গে পানি বণ্টন চুক্তি প্রসঙ্গে যৌথ নদী কমিশনের সদস্য মীর সাজ্জাদ হোসেন জানান, 'তিস্তা চুক্তি না হওয়ায় বাংলাদেশ আজ ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন। এবছর কৃষিকাজ মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। গতবছর মার্চ মাসে যেখানে ২ হাজার ৮০০ কিউসেক পানি পাওয়া গিয়েছিল এবছর সেটা ৫৫০ কিউসেকে নেমে এসেছে। নদীর পানির অধিকার সবার। কিন্তু এভাবে যদি পানি প্রবাহ প্রত্যাহার করে নেয়া হয়, বাংলাদেশের মানুষ ফসল ফলাতে না পারে, সেটা খুবই দুঃখজনক। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বলি সাধারণ মানুষ হতে পারে না। একই প্রবাহের সুফল একটি দেশের মানুষ ভোগ করবে আর অন্য দেশের মানুষ তা থেকে বঞ্চিত হবে এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। দুদেশের মানুষের স্বার্থে, পরিবেশ ও নদীরক্ষার স্বার্থে শুধু তিস্তাই নয়, অন্যান্য নদীর চুক্তিও দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হওয়া জরুরি।'

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত-বাংলাদেশের আন্তঃনদীসমূহের পানি প্রবাহ কমে আসাই দেশের নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়ার পিছনে একটি বড় কারণ। তারা বলছেন, ভারতের সঙ্গে পানি চুক্তি সময়সাপেক্ষ বিষয় এবং তা রাজনৈতিক মতৈক্যের বিষয়। তাই নদী ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। তা করা না হলে অচিরেই আরো অসংখ্য নদী মরে যাবে। আর শুধু ড্রেজিং করলেই চলবে না। নদীর উত্সমুখে ড্রেজিং করলে পরের বছরই তা পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাবে। এজন্য মূল নদীতে ব্যারেজ নির্মাণ করাটা জরুরি। বাংলাদেশের বর্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও গ্রীষ্মে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক পর্যায়ে রাখতে হলে ভারত, নেপাল, ভুটান এই তিন দেশের সমন্বিত পরিকল্পনা সবচে বেশি জরুরি।

অপরিকল্পিত নদীশাসন, বাঁধ নির্মাণ, বড় নদীগুলোর সাথে ছোট ও শাখা নদীগুলোর মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়া, প্রতিকূল পরিবেশ প্রভৃতি কারণে নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদীগুলো প্রচণ্ড হুমকির মুখোমুখি। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী দেশে মোট নদীর সংখ্যা ৩১০টি। এর মধ্যে মৃত ও মৃতপ্রায় নদীর সংখ্যা ১১৭টি। অনেকের মতে, নাম বিচারে বাংলাদেশে ছোট-বড় নদী রয়েছে প্রায় ৬০০টি। এর মধ্যে ৫৭টি নদী আন্তর্জাতিক। মৃত ও মৃতপ্রায় নদীর সংখ্যা ১১৭। এই নদীগুলোর মধ্যে ৫৪টির উত্সস্থল ভারত এবং বাকি ৩টির মিয়ানমার।

২০ বছর আগেও মৃত নদীর সংখ্যা ছিল অর্ধেক। সর্বশেষ হিসাবে দেখা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত গত ৪৪ বছরে দেশের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কিলোমিটার নদীপথ নাব্যতা হারিয়েছে। সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস-সিইজিআইএস থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ছোট ছোট আরো শত শত নদীর হিসাব না পাওয়া গেলেও গত ৪০ বছরে শুধুমাত্র তিনটি প্রধান নদী পদ্মা, মেঘনা, যমুনা এই তিনটি নদীতেই এ পর্যন্ত বিলীন হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার হেক্টর জমি। আর তার বিপরীতে নতুন ভূমি জেগেছে মাত্র ৩০ হাজার হেক্টর। প্রতিবছর কোন না কোন নদীর শাখা ধীরে ধীরে পলি পড়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোন কোন নদী দখল হয়ে যাচ্ছে ভূমিদস্যুদের হাতে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী দিনগুলোতে আরো দ্রুতহারে নদী বিলুপ্ত হতে থাকবে।

বিআইডব্লিউটিএ নদীগুলোকে ১২ ফুট, ৯ ফুট, ৬ ফুট এবং ৩ ফুটের বেশি নাব্যতা হিসেবে চার শ্রেণিতে ভাগ করেছে। সেই হিসাবে ১৯৭১ সালে দেশব্যাপী ২৪ হাজার কিলোমিটার নদীপথ ছিল। শীতে ৫ হাজার ২০০ কিলোমিটার। বর্তমানে নৌপথের দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬ হাজার কিলোমিটারে। যা শীতকালে এসে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮২৪ কিলোমিটারে। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা না করে ড্রেজিং করা, পলি জমে ভরে যাবার কারণে নদীর স্রোত কমে যাওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। আরো জানা গেছে, এই মুহূর্তে দেশে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কিলোমিটার নদীপথের নাব্যতা হুমকির মুখে রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পানিসম্পদ কাউন্সিলের সদস্য ও পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার (ওয়ারপো) প্রাক্তন মহাপরিচালক ড. এমএ কাশেম বলেন, উজানের দেশগুলোর সাথে আমাদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনাসহ সামগ্রিক বিষয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে আগানো প্রয়োজন। নদী যে দেশসমূহ দিয়ে বয়ে আসে সেসব দেশের মানুষের স্বার্থ জড়িত থাকে। তাই এ নদীগুলোর পানি ব্যবস্থাপনা করতে হলে কোনমতেই এককভাবে করলে চলবে না। বিশেষ করে ভারত ও নেপালের সাথে বন্যা প্রতিরোধ ও পানিসম্পদ ব্যবহারের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা ছাড়া নদীমাতৃক এই দেশের মানুষ ধ্বংসের হাত থেকে রেহাই পাবে না।

তিস্তায় পানি প্রবাহ সর্বনিম্নে বিপাকে কৃষক

এবছরের শুষ্ক মৌসুমে গতকাল রবিবার তিস্তার পানি প্রবাহ কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০০ কিউসেকে। গত ২০ দিন থেকে তিস্তায় পানি কম থাকায় বোরোর ভরা মৌসুমে কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছেন। তিস্তার পানি প্রবাহ কমে যাওয়ায় তিস্তা ব্যারাজের সেচ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। মূল ক্যানেলে পানি রাখা হলেও শাখা ক্যানেলগুলোতে পানি দেয়া যাচ্ছে না। ফলে তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার সেচনির্ভর বোরো আবাদ নিয়ে কৃষকরা রয়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার নাউতরা গ্রামের বোরোচাষি বেলাল হোসেন বলেন, ৭ একর বোরো জমি ঠিকমত পানি দিতে না পারায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাঈনুদ্দিন মন্ডল জানান, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ধরে রাখতে তিস্তা ব্যারাজের সেচ প্রকল্পের জন্য কমপক্ষে ২ হাজার ৫০০ কিউসেক পানি প্রয়োজন। কিন্তু পানিপ্রবাহ খুবই কম।

মরুকরণ প্রক্রিয়ায় প্রমত্তা পদ্মা শুকনো খটখটে

ফারাক্কার প্রভাবে ঈশ্বরদীসহ উত্তরাঞ্চলে মরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এক সময়ের প্রমত্তা পদ্মাসহ এ অঞ্চলের ৫৪টি নদী শুকিয়ে এখন খালে পরিণত হয়েছে। এই খালেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাওয়ায় পানির জন্য মানুষ হাহাকার করছে। তেজস্বিনী ও 'রাক্ষুসী' পদ্মার বুকে ধু ধু বালুচর। নদীবক্ষের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ফসলের চাষ হচ্ছে। হার্ডিঞ্জ সেতু পয়েন্টে ১৫টি স্প্যানের মধ্যে ভেড়ামারা প্রান্তে মাত্র ৫টি স্প্যানের নিচ দিয়ে মৃদুভাবে প্রবাহিত হচ্ছে পদ্মা। কৃষিকাজে সেচযন্ত্র দিয়েও পানি সরবরাহ করা যাচ্ছে না। বেশিরভাগ এলাকাতে সেচযন্ত্রে স্বাভাবিকভাবে পানি না উঠায় ৭-৮ ফুট মাটি গর্ত করে নিচে সেচযন্ত্র বসানো হচ্ছে পানির আশায়। ঈশ্বরদীসহ আশপাশের সকল এলাকার শতকরা ৭০ ভাগ টিউবওয়েল দিয়ে পানি উঠছে না। এখন সাধারণ টিউবওয়েলের পরিবর্তে বসানো হচ্ছে সাবমারসিব্ল।

স্থানীয় জনস্বাস্থ্য নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর এতটাই নিচে নেমে গেছে যে, এইভাবে চললে আগামী ১০ বছর পরে এই এলাকায় পানি পাওয়াই কঠিন হবে। এদিকে, পাবনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, পানির অভাবে গঙ্গা-কপোতাক্ষ সেচ প্রকল্পের আওতায় ৪ লাখ ৮৮ হাজার একর জমিতে সেচ সরবরাহ করার কথা থাকলেও পানির অভাবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হচ্ছে না। এতে এই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের ভবিষ্যত্ হুমকির মুখে পড়েছে।

এককালের প্রমত্তা-করতোয়া নদীও এখন ধু ধু বালুচর। বগুড়া জেলায় করতোয়া বিলীন হয়ে গেলেও দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে যে শীর্ণ নদীটি রয়েছে সেটিও মৃতপ্রায়। বর্ষায় ঢলের পানি প্রবাহিত হলেও গ্রীষ্মকালে এ নদী শুকনো খটখটে হয়ে পড়ে। জয়পুরহাটে ছোট যমুনা নদী পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় প্রভাবশালীরা নদী দখল করে শুরু করেছে ধান চাষ। নদীর দু'পাড়ের আবাদি জমিতে সেচের অভাবে চাষাবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের খরস্রোতা মহানন্দা নদীও পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। নদী দখল করে চলছে ধানচাষ। এমনিভাবে দেশের আর সব নদীই পানির অভাবে ধুঁকছে।

হায় নদী! হায় বাংলা!

একসময়ের স্রোতস্বিনী নদ-নদী করতোয়া, ইছামতি, বড়াল, মুসাখান, চিকনাই, ভৈরব, ভদ্রা, হিসনা, কালীগঙ্গা, কুমার, চিত্রা, হামকুড়া, হরিহর, বিবিয়ানা, বরাক, ভূবনেশ্বর, বুড়িনদী, বামনী, পাগলা, ফকিরনী, মাথাভাঙা, নবগঙ্গা, ফটকি, মুক্তেশ্বরী, ময়নাকাটাসহ আরো অনেক নদী হারিয়ে গেছে। ১৯৬৫ হতে ১৯৬৭ পর্যন্ত নেদারল্যান্ডের নদী বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতায় ব্যাপক নদী জরিপ করে যে প্রতিবেদন তৈরি করা হয় এবং ১৯৭৫ সনে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃক প্রকাশিত মাইলেজ টেবিল এবং ১৯৮৮-৮৯ সনে পুনরায় সমীক্ষা রিপোর্ট ও সর্বশেষ বাস্তব অভিজ্ঞতা হতে সংগৃহীত তথ্যানুসারে বর্তমানে ১১৭টি নদ-নদীর বেশকিছু সম্পূর্ণ মৃত, কোনটির অংশবিশেষ মৃত এবং অধিকাংশ নদীর নাব্যতা আশংকাজনকভাবে হরাস পেয়েছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী হতে নুনখাওয়া (ভারতীয় সীমান্ত) পর্যন্ত প্রায় ২৫ মাইল চিলমারী হতে রৌমারী পর্যন্ত প্রায় ৯ মাইল এবং নরসিংদী জেলার কটিয়াদী হতে পৈখান পর্যন্ত প্রায় ৫ মাইল মরে গেছে । অপরদিকে যমুনা বাহাদুরাবাদ হতে ময়মনসিংহ পর্যন্ত প্রায় ৮৪ মাইল, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ ভৈরব বাজার হতে গাজীপুর জেলার টোক পর্যন্ত প্রায় ৪০ দশমিক ৬ মাইল এবং টোক হতে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ৫৩ মাইল মরে গেছে। পদ্মানদীর দৌলতদিয়া হতে গোয়ালন্দ পর্যন্ত প্রায় ১৩ মাইল নৌপথ ১৯৭৭-৭৮ সালেই বন্ধ হয়ে গেছে। পদ্মা চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোদাগাড়ী হতে কুশিহাটি, সন্তোষপুর, তালবাড়িয়া ও পাবনা হয়ে আরিচার কাছে প্রায় ১৩৫ মাইল এলাকা শুকনো মৌসুমে প্রায় শুকিয়ে যায়।

প্রধান প্রধান নদীগুলো আরো স্থানে স্থানে নাব্যতা হারাচ্ছে। যেমন যমুনা নওগাঁ-রাজশাহী ও সিরাজগঞ্জ-দুলারিতে নাব্যতা হারিয়েছে। ধলেশ্বরী ৫টি স্থানে নাব্যতা হারিয়েছে। আরো যেসব নদীর অংশবিশেষ স্থানে স্থানে নাব্যতা হারিয়েছে সেগুলো হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র, পদ্মা, মহানন্দা, হুরাসাগর, মধুমতি, বলেশ্বর, আড়িয়াল খাঁসহ আরো অনেক।

এ প্রসঙ্গে সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এন্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. মমিনুল হক সরকার বলেন, নদী ভাঙা-গড়া, নদীর মরে যাওয়া এবং তার গতিপথ বদলে যাওয়া প্রাকৃতিক নিয়মেই হয়। কারণ উজান থেকে বয়ে যাওয়া পানি যেভাবেই হোক তা বয়ে যাবেই। এই যাওয়ার পথ সে নিজেই করে নেবে। এখন নদীশাসন করা হচ্ছে। বাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদী বা সামগ্রিক পরিকল্পনা না করেই কোথাও কোথাও এই বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এসব বাঁধ নির্মাণের ফলে অনেক জমি কৃষির আওতায় এসেছে। এটা একটা সুফল। অনেক মানুষ বন্যার হাত থেকে বেঁচেছে এটাও একটা বড় প্রাপ্তি। কিন্তু যখন মানুষ নদী ভরাট করে দখল করে নিচ্ছে তখনই প্রকৃতি ও পরিবেশে বিরূপ প্রভাব পড়ে। বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পানির প্রবাহ কমেনি। এই অবিন্যস্ত ব্যবস্থাপনার কারণে নদীর পাড় যে পরিমাণ ভাঙছে সে পরিমাণ ভূমি জাগছে না। ড্রেজিং করে নদীর গতিপথ ও নৌপথ ঠিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু পরিকল্পিত উপায়ে ব্যারাজ নির্মাণ না করে এবং সামগ্রিক পরিকল্পনা না করে বিচ্ছিন্নভাবে ড্রেজিং করে কোন সুফল পাওয়া যাবে না। তাই নদী বাঁচাতে উত্সমুখে ড্রেজিং করার পরের বছরই তা ভরে যাচ্ছে। এটা যারা করছেন তারা যে বিষয়টি জানেন না তা নয়। কিন্তু দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিচার করে স্বল্পমেয়াদী পরিকল্পনা করেই বেশিরভাগ সময়ে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার সাবেক মহাপরিচালক ড. ইনামুল হক বলেন, প্রাকৃতিকভাবে আমাদের দেশের নদীগুলো প্রধানত তিন কারণে নাব্যতা হারাচ্ছে— ১. উজান থেকে আসা পলি ভরাট হয়ে ২. নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে বড় নদীগুলোর প্রধান প্রবাহ এক অন্তর্শাখা থেকে অন্য অন্তর্শাখাতে সরে গেলে নাব্যতা কমে যায় ৩. নদীর দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেলে প্রবাহ অক্ষুণ্ন রাখার জন্য উজানে নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে যাচ্ছে। মানুষের হস্তক্ষেপের কারণেও নদীগুলো তাদের নাব্যতা হারাচ্ছে। যেমন ১. নদীগুলোর প্রবাহ উজানে ব্যারাজের মাধ্যমে ঠেকিয়ে সেচ প্রকল্পের জন্য অতিমাত্রায় জল উত্তোলন ২. ঘাট, দোকান, বস্তি, আবাসন, মার্কেট বা শিল্প করার নামে নদী দখল ৩. শিল্প-কলকারখানার বিষাক্ত কঠিন ও তরল বর্জ্য এবং গৃহস্থালী বর্জ্য নদীতে ফেলে দূষণ। ঢাকা মহানগরীর আশপাশের নদী মরে যাওয়ার পিছনে এই কারণগুলো সবার কাছেই স্পষ্ট।

মরুকরণের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

উপমহাদেশের থর মরুভূমি দিয়ে একদিন 'গঙ্গা' প্রবাহিত হতো। থর মরুভূমির পাকিস্তান অংশে ৫০ থেকে ১০০ ফুট নিচের ভূমিস্তর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কয়েক লাখ বছর আগে সেখানে সবুজ বনভূমি ছিল। সে বনভূমি মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে, বলছিলেন ওয়ারপো'র প্রাক্তন মহাপরিচালক প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক।

নদীতে পানির অভাবে ধীরে ধীরে মরুকরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামল দেশটি হয়তো একদিন হারিয়ে যেতে পারে মরুভূমির ধূসর বালির গহ্বরে। মরুকরণের প্রধান দুটি বিষয় হচ্ছেঃ একটি বিস্তৃত এলাকা জুড়ে যদি সেখানকার মাটি ক্রমশ অনুর্বর হতে থাকে এবং যদি নদী-নালা, খাল-বিল শুকিয়ে যেতে থাকে এবং বৃষ্টির অভাব ঘটে। বিগত কয়েক দশক ধরে এ লক্ষণগুলো খুব বেশিভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে বাংলাদেশে। প্রকৌশলী ইনামুল হক বলেন, ফারাক্কা বাঁধ, তিস্তাসহ ভারত-বাংলাদেশের আন্তঃ নদীসমূহের বাধাগ্রস্ত পানি প্রবাহ দেশের নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়ার পেছনে একটি বড় কারণ। সেটা দু'দেশের আলোচনার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি হবে। কিন্তু জলাভূমি সংরক্ষণ আমাদের নিজেদের হাতে। কিন্তু সেসব সংরক্ষণে রাষ্ট্রের কোন নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারি এবং পরিকল্পনা না থাকায় দেশের জলাভূমিগুলো থেকে কৃষিকাজে অধিক হারে জল নিষ্কাশন করে জলাভূমিগুলো শুকিয়ে ফেলা হচ্ছে। ফলে জলাভূমিগুলো কৃষিজমিতে পরিণত হচ্ছে। যার ফলে গ্রীষ্মকালে নদীগুলো পানিশূন্য হয়ে পড়ছে। কারণ গ্রীষ্মকালে দেশের নদীগুলোর পানি প্রবাহের প্রধান উত্স ছিল এই জলাভূমির পানি। সেটা পুরোপুরি হারিয়ে গেছে।

আন্ত:নদী সংযোগ প্রকল্প বিপর্যয় ডেকে আনবে বাংলাদেশে

ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার নদীসমূহের পানি ১৩টি সংযোগ খালের মাধ্যমে প্রত্যাহার করা হবে। এর ফলে নদীনির্ভর বাংলাদেশের কৃষি, পরিবেশ ও কোটি কোটি মানুষের জীবন সীমাহীন হুমকির মুখে পড়বে। যদিও ভারত বার বার বলে এসেছে যে, তাদের এই সংযোগ প্রকল্পে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলো যুক্ত করা হয়নি। ভারত আশ্বাস দিচ্ছে বটে, কিন্তু বাংলাদেশকে অন্ধকারে রেখেই তারা নদীসংযোগ প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে চলেছে।

নদী ও পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক পানি আইন ও গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী উজানের দেশ ভারত আন্তঃদেশীয় এই নদীর পানি প্রত্যাহার করতে পারে না।

বাংলাদেশ ও ভারত যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) সাবেক সদস্য তৌহিদুল আনোয়ার খান বলেছেন, ভারত ২৯টি সংযোগ খালের মাধ্যমে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র থেকে পানি প্রত্যাহার করে তা দক্ষিণে নিয়ে যাবে। এর মাধ্যমে তারা আড়াই কোটি হেক্টর জমিকে সেচের আওতায় আনবে। আর জলবিদ্যুত্ উত্পন্ন করবে। এরই মধ্যে তারা ১১টি সংযোগ খালের সমীক্ষা সম্পন্ন করেছে। বাংলাদেশের পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব সংযোগ খালের মাধ্যমে পানি প্রত্যাহার করা হলে বাংলাদেশ কার্যত মরুভূমিতে পরিণত হবে। মানুষের জীবনযাত্রা, প্রকৃতি ও কৃষিতে বিপর্যয় নেমে আসবে। আন্তঃ নদী সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও গঙ্গা নদীর পানিপ্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলের শাখা নদীগুলোর পানিপ্রবাহ আশঙ্কাজনক হারে কমে যাবে। আর জলাভূমিগুলোও শুকিয়ে যাবে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি কমে গেলে লবণাক্ততা দেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত উঠে আসতে পারে। ফারাক্কা বাঁধের প্রভাবে ইতোমধ্যেই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পগুলো

ভারতের ন্যাশনাল ওয়াটার ডেভলপমেন্ট এজেন্সি প্রায় ২০ বছরের পর্যবেক্ষণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৩৮টি নদী বিভিন্ন নদীর মধ্যে ২৯টি সংযোগ খাল স্থাপনের পরিকল্পনা করে। এই পরিকল্পনার বিশেষ দিক হচ্ছে নদীর এক অববাহিকার উদ্বৃত্ত পানি অন্য অববাহিকায় যেখানে ঘাটতি রয়েছে সেখানে স্থানান্তর করা।

উজানের দেশগুলোর সাথে সমন্বিত পরিকল্পনা জরুরি

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উজানের দেশগুলোর সাথে বিশেষ করে ভারত ও নেপালের সাথে পানিসম্পদ ব্যবহারের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা ছাড়া বাংলাদেশের মানুষের খরা ও অতি বন্যার দুর্ভোগ থেকে রেহাই নেই। গ্রীষ্মকালে নদীগুলোর পানি শূন্যতা দূর করা এবং পানির প্রাপ্যতা বাড়াতেও প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে যৌথ উদ্যোগ একান্ত জরুরি। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, উজানে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ ও জলাধার নির্মাণ করে শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখার প্রস্তাব সেই আশির দশক থেকে নিয়ে আসছে বাংলাদেশ। তখন নেপালের সাথে দুইদেশের মধ্যে অলোচনায় ৭টি জলাধার নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। এরপর ১৯৮৭, '৮৮ সালে বাংলাদেশ নেপাল বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও জলাধার নির্মাণসহ পানিসম্পদ ব্যবহারের জন্য প্রায় ৩০টি প্রকল্প হাতে নেয়। কিন্তু সেসব উদ্যোগের পরবর্তীকালে আর কোন অগ্রগতি হয়নি। পানিসম্পদ কাউন্সিলের সদস্য ও পানিসম্পদ পরিকল্পনা সংস্থার (ওয়ারপো) প্রাক্তন মহাপরিচালক ড. এম এ কাশেম বলেন, উজানের দেশগুলোর সাথে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, গ্রীষ্মে পানি প্রাপ্যতা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণসহ সামগ্রিক বিষয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা নিয়ে এগুনো প্রয়োজন।
http://www.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDRfMTRfMTRfMV8xXzFfMTIzMjYx

No comments:

Post a Comment