Thursday, April 9, 2015

কর বা সারচার্জ নয়;যাকাতভিত্তিক অর্থনীতি চালু করলেই বেশী লাভবান হওয়া যাবে । দারিদ্র্য দূরীকরণেরও সহায়ক হবে।

mon rosu <monrosu13@gmail.com> wrote:
কর বা সারচার্জ নয়;যাকাতভিত্তিক অর্থনীতি চালু করলেই বেশী লাভবান হওয়া যাবে । দারিদ্র্য দূরীকরণেরও সহায়ক হবে।
৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত এদেশে এমনিতেই কর প্রদান পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সম্মত নয় বলে জনসাধারণ কর দিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে না এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে কর দেয় না ।
নতুন করে প্রবর্তিত উন্নয়ন সারচার্জ আরোপের আইনি ক্ষমতা না থাকলেও বর্তমান সরকার তা আরোপ করেছে।
আসন্ন (২০১৫-১৬ অর্থবছরের) বাজেটে সারচার্জ বর্তমান দুই স্তর থেকে বাড়িয়ে তিন স্তরে উন্নীত করা হচ্ছে। দুই কোটি টাকার বেশি সম্পদধারী ব্যক্তি বা করদাতাকে প্রদেয় আয়করের ১০ শতাংশ বাড়তি দিতে হবে সারচার্জ হিসেবে। ১০ কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকলে এই হার ১৫ শতাংশ। আর ১৫ কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকলে আয়করের ২৫ শতাংশ সারচার্জ দিতে হবে। বর্তমানে সারচার্জ আরোপের ক্ষেত্রে শেষ স্তরটি নেই।
অর্থাৎ কোনো ব্যক্তির যদি ২০ কোটি টাকার সম্পদ থাকে, আর সে যদি এক কোটি টাকা আয়কর দেয়, তবে সারচার্জ হিসেবে এক কোটি টাকার ২৫ শতাংশ বা ২৫ লাখ টাকা দিতে হবে। এর মানে হলো, ওই ব্যক্তিকে আয়কর ও সারচার্জ মিলিয়ে এনবিআরকে এক কোটি ২৫ লাখ টাকা দিতে হবে।
উল্লেখ্য সারচার্জ কোনো 'কর' নয়। এটি অতিরিক্ত সম্পদ থাকার কারণে একধরনের মাশুল আরোপ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোটি টাকার বেশি দামি ফ্ল্যাট কিংবা বাড়িতে থাকে অনেকেই। তারা অহরহ বিএমডব্লিউ, মার্সিডিজ, লেক্সাস ব্র্যান্ডের গাড়ি চালায়। কিন্তু আয়কর বিবরণীতে এগুলোর চিত্র সঠিকভাবে উঠে আসে না। এসব সম্পদশালীর বেশির ভাগই তাদের আয়কর নথিতে এসব সম্পদ দেখায় না। যারা দেখায়, তারা প্রায় সবাই প্রকৃত মূল্যের অনেক কম দেখায়। আবার এসব সম্পদের সঠিক বর্তমান বাজারমূল্যও উঠে আসে না আয়কর নথিতে। এক্ষেত্রে আয়করের মতই সারচার্জ স্বচ্ছ হবে না।
সারচার্জ মূলত সম্পদের হস্তান্তর বা লেনদেন মূল্য দিয়েই হিসাব করা হয়। অবশ্য এভাবে সম্পদের মূল্যমান নির্ধারণ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কোনো ব্যক্তি যদি ২০ বছর আগে এক কোটি টাকায় কোনো জমি কেনে, তবে সরকার নতুন করে ভূমির মূল্য নির্ধারণ না করলে সারা জীবনই তার সম্পদের মূল্য এক কোটি টাকাই ধরা হবে। আবার একই জমির পাশে সমপরিমাণ জমি যদি কেউ এক বছর আগে ১০ কোটি টাকা দিয়ে কেনে, তাহলে সেই সম্পদের মূল্য ১০ কোটি টাকাই হবে। ফলে একই স্থানে একই পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েও দ্বিতীয়জনকে সারচার্জ দিতে হচ্ছে, প্রথমজনকে নয়। এটা একধরনের বৈষম্য।
আবার জমি বা ফ্ল্যাট কেনার সময় নিবন্ধন মূল্যকেই সম্পদের মূল্য ধরা হয়। এতে নিবন্ধন করার সময় যে টাকায় জমি বা ফ্ল্যাট কেনা হয়, তার চেয়ে অনেক কম দেখানো হয় বলে বহুলভাবে অভিযোগ রয়েছে। ফলে সরকার রাজস্ব কম পায়।
উল্লেখ্য, এরশাদ সরকারের আমলের শেষ দিক পর্যন্ত সম্পদের মূল্যমান বা এলাকাভেদে জমির সর্বনিম্ন দাম এনবিআর ঠিক করে দিতো। সম্পদের সঙ্গে আয়করের সম্পর্ক থাকায় এনবিআরই এ দায়িত্ব পালন করতো। কিন্তু এরশাদ সরকারের শেষ দিকে এসে এই দায়িত্ব দেয়া হয় ভূমি মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটিকে। ফলে এখন সারচার্জ আরোপের ক্ষেত্রেও জটিলতা তৈরি হয়েছে।
গ্রাহক পর্যায়ে মোবাইলফোনের প্রতি কলে অতিরিক্ত ১% সারচার্জ বসানোর সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এর ফলে এখন থেকে সেলফোনে কথা বলায় গ্রাহককে শতকরা কমপক্ষে ১৬ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
আগে মোবাইল কলে ভ্যাট-এর পরিমাণ ছিল ১৫ শতাংশ এখনে এক পার্সেন্ট যোগ হয়ে সেটা হবে ১৬ শতাংশ।
উদাহরণত বলতে হয়- এনবিআরের সর্বশেষ হিসাবমতে, দেশে মাত্র ৫ হাজার ৬৬২ জন করদাতা রয়েছে, যারা দুই কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক।
লেখাবাহুল্য, দেশে মাত্র সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি দুই কোটি টাকার বেশি সম্পদশালী রয়েছে এমন সংখ্যা চরম অবিশ্বাস্য। শুধু ধানমন্ডি, গুলশান, বনানী, উত্তরা, ডিওএইচএস, নিকুঞ্জসহ অভিজাত এলাকায় ৫০ হাজারের বেশি প্লট রয়েছে। এর প্রতিটি প্লটের বর্তমান বাজারমূল্য কমপক্ষে দশ কোটি টাকার বেশি। সেক্ষেত্রে এ কয়েকটি এলাকাসহ শুধুমাত্র প্লটের হিসেবেই দেশে লাখ লাখ লোক রয়েছে যারা ২ কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক। কিন্তু এনবিআর তাদেরকে তদারক করতে পারছে না। কারণ এনবিআর তাদেরকে ঈমানী চেতনা ও আমলের প্রেক্ষিতে বলতে পারছে না। এক্ষেত্রে এনবিআর তথা সরকার যদি কথিত কর ও সারচার্জের পরিবর্তে পবিত্র যাকাত আদায়ের আদর্শে উজ্জীবিত করতো, তাহলে সরকার মোবাইল কলে সারচার্জের নামে ১২ কোটি গ্রাহককে শোষণের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া থেকে কি রেহাই পেতো না? কর আদায়ের মতো অনৈসলামিক কাজ থেকে কি দেশবাসীকে উদ্ধার করার মোবারকবাদ পেতো না? সেই সাথে পবিত্র যাকাত আদায়ের মাধ্যমে করের চেয়ে অনেক বেশি অর্থই আহরণ ও তার সুফল দেশবাসীকে প্রদানের পাশাপাশি তাক্বওয়াভিত্তিক সমাজ গঠনের মাধ্যমে সব অনাচার-অনিয়ম থেকেও দেশকে মুক্ত করতে পারতো। সুবহানাল্লাহ!

No comments:

Post a Comment